পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পৌষ “কি জানি।” “আমার জন্তে তুমি একটুও ভাববে না, আমি জানি।” "জান ? তবে ত ভালই হ’ল ?” “তোমার কি বল না ? শহরের কত নতুন মানুষ, নতুন জিনিষের সঙ্গে পরিচয় হবে তোমার প্রতিদিন । হয়ত কত নতুন মেয়ে---” “তাদের দিকে-- আমি ?--কি বলছ তুমি ?” “না, না, আর বলব না, রাগ করলে ?”—দেবযানী স্বমস্ত্রের কাছে এসে দাড়াল : নখ দিয়ে তার পাঞ্জাবীর বোতামটা খুঁটতে খুটতে বললে, “সত্যি, রাগ করলে ?” স্বমন্ত্র কথা কইল না। দেবযানীর দিকে শুধু একবার চাইল । অন্ধকার ভেদ ক’রে মেয়েটির চোখ দুটি যেন জলজল করছে । চোখে ওর ভর-গাঙের মত বর্ষার জল ছাপিয়ে আসছে । মৃদু মৃদু মাখিপল্লব কঁপিছে --- সে দৃপ্ত ত আজও স্বমন্ত্র ভুলতে পারল না। সুমন্স গেল, কিন্তু আর ফিরল না । জীবনের জোয়ার তাকে বয়ে নিয়ে গেল দূরে, আরও দূরে। -- কত দিন, কত রাত কেটে গেছে তার পর । সময় যেন হালকা পাথায় উড়ে গেছে অনন্তে । এখনও মনে হয় যেন সেদিনকার কথা । দিবাস্বপ্ন দেখছিল স্বমন্ত্র এতক্ষণ । ওকে দেখতে যারা এসেছিল, তাদের অনেকেই চলে অপরিবর্তনীয় 88S হয়ে । সহসা যেন নিদ্ৰাভঙ্গ হয়েছে এমন ভাবে চেয়ে স্থমন্ত্র দাড়াল। হাতঘড়ির দিকে একবার তাকিয়ে বললে, “দেখ, ভাই নিপুদ, এখন চলি, আমার আবার দেরি হয়ে যাচ্ছে ; সাড়ে আটটার ট্রেন না ধরলেই নয়। সাড়ে আটটা ত বাজে * “বা রে ; দেবীর সঙ্গে দেখা করবে না ?” তরু বললে । “না, ভাই, থাক ; কাজ আছে দরকারী। আসি, মনে কিছু ক'রো না যেন ।” তরু, অঙ্গ, ভান্স তাঁকে প্রণাম করতে আসছিল ; ওদের অবসর না দিয়েই, পিছন ফিরল স্বমস্ব, ছুটে চলল সে ষ্টেশনের পথে । রাস্ত দিয়ে চলেছে সে, অন্ধকারে । ভাবছে, দেবযানী না এসে, না দেখা দিয়ে ভালই করেছে । যৌবনের যে অতুলনীয় ছবি আঁকা আছে তার মৰ্ম্মপটে, তাকে সে দেবে না মলিন হ'তে কোনক্রমে । থাক তা অক্ষয় হয়ে সকল দৃষ্টির অস্তবালে, গোপন মৰ্ম্মকোষে । জগৎ বদলাচ্ছে ক্ষণে ক্ষণে ; গ্রামটা বদলে গেছে কত রকমে, সলাই বদলে গেছে এখানকার । কিন্তু দেবযানী ? অন্য সবাইকার মত স্বমন্ত্র ওকে অতিক্রাস্তযৌবনার বেশে চায় না দেখতে । এগনও যে সেই দেবীমুক্টি পুঞ্জিত কেশভার শিরে, যৌবনের রক্তরাগ-রঞ্জিত দেহে, হরিণের মত তুষাৰ্ত্ত চোগ দুটি মেলে মনের মন্দিরকে আলোকিত ক’রে বিরাজ করছে গেছে ইতিমধ্যে। আলাপ-আলোচনাও এসেছিল স্তিমিত অপরিবর্তনীয় রূপে ]