পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ΦΝΦό প্রবাসী SN98్సలీ হয়েছে ; এবং তারই জন্ত কমলের প্রতি স্বাভাবিক করুণায় তাকে নানা ভাবে সাহায্য ক’রে এসেছে। কিন্তু আজকের কথায় তার মনটা যেন একটা গভীর রহস্যময় সুগভীর বেদনার ইতিহাসের আভাস পেয়ে মনে মনে শুদ্ধ হয়ে ब्रझेल । সেদিন আর কোন কথা হবার অবসর হ’ল না । 奉 * 事 কমল নিজের দুঃখের ইতিহাস একটু একটু ক’রে নিখিলনাথকে ব’লে গেল। কাল সমস্ত রাত সে নিজের সঙ্কোচটুকু দূর করবার জন্যে মনে মনে নিজেকে প্রস্তুত করেছে। নইলে তার হতাশার শেষ আশার দীপটুকুও নিবে যায় যে। তবু প্রথম প্রথম তাঁর মনে সঙ্কোচের অস্ত ছিল না। কিন্তু নিখিলনাথের কৌতুহলবিহীন সম্রমপূর্ণ সহানুভূতির সহৃদয়তায় ধীরে ধীরে তার সঙ্কোচের বাধা অন্তহিত হয়ে তার মনে সে এমন একটা আশাপূর্ণ স্বচ্ছন্দ লঘুতা অনুভব করতে লাগল যে নন্দলালের চরম দুর্ব্যবহারের কাহিনী বলাও তার পক্ষে সহজ হয়ে এলো । তার মনের মানি যেন অপসারিত হয়ে গেল এবং বিস্ময়ের সঙ্গে সে নিজেকে অনেকখানি স্বস্থ বোধ করতে লাগল । অজয়ের প্রতি মালতীর অকৃত্রিম মাতৃস্নেহের কথা বলতে বলতে চোথ তার শুল্ক রইল না ; এবং এই অশ্রুজলে অভিষিক্ত পরম বিস্ময়কর করুণ কাহিনী শুনতে শুনতে নিগিলনাথ ক্ষণকালের জন্তে আত্মবিশ্বত হয়ে কমলের একখানি হাত ধরে বললে, “মাতুষের সাধ্য অত্যন্ত সীমাবদ্ধ। তোমার দুঃখ মোচন করবার ক্ষমতা আমার হবে কিনা জানি না, তবু আমাকে তোমার নিজের বড় ভাই বলে জেনো । তোমার স্বামীর অন্তসন্ধানে আমার চেষ্টার ক্রাট হবে না। নন্দলাল কোন কারণে তোমার মনের শাস্তি যাতে নষ্ট না করতে পারে তার ব্যবস্থা আমি শীঘ্রই করব ।” বলে সে উঠে দাড়াল । অনেক কাল পরে আনন্দিত স্বচ্ছন্দ মনের স্বস্তিপূর্ণ হাসি কমলের মুখে ফুটে উঠল। এখনি যেন তার দুঃখের অনেকখানি অবসান ঘটেছে এমনি একটা নিরাময় শাস্তির আভাস তার মনে অবতীর্ণ হ’ল এবং কুতজ্ঞচিত্তে অবনত হয়ে সে নিখিলের পায়ের ধুলো নিয়ে প্রণাম করলে। “ছি ছি, ও কি,” বলে মিথিল এক পা পিছিয়ে গেল । মনটা তার স্নেহে ও করুশায় পূর্ণ হয়ে উঠল। নিখিলনাথ চিন্তাকুল চিত্তে তার খাসকামরায় ফিরে গেল। কমলের অভ্যাশ্চৰ্য্য কাহিনী তাকে বিস্মিত করেছিল সত্য, কিন্তু তার মনের যে চিন্তা সবচেয়ে কঠিন প্রশ্ন নিয়ে তার চিত্তকে সম্প্রতি উন্মনা করে রেখেছিল এই ব্যাপারের সঙ্গে তার কোন যোগ ছিল না। নন্দলালের দুশ্চিন্তা থেকে কমলকে কোন মতে নিরাপদ করতে পারলে আপাতত যেন কমলের প্রতি তার কৰ্ত্তব্য সমাধা হয় । অনেক চিস্তার পর, অধিকাংশই তার মধ্যে কমলের কথা নয়, সে কমলকে অধুনা অনিন্দিত দেবীর নারীভবনে নিয়ে রেখে আসতে মনস্থ করলে। পরীক্ষার আর অল্পদিনষ্ট বাকী ছিল । এই সময়টুকু কোনমতে অতিক্রম করতে পারলে কমলের ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে চিন্তা করবার পথ সুগম হয়ে আসবে । কমলকে অনিন্দিত। দেবীর নারীভবনে রাগার চিস্তার মধ্যে তার কি কিছু উদ্দেশু ছিল ? সীমা তার কথায় ধে হিংসার পথ থেকে ফিরবে না সে সম্বন্ধে তাঁর মনে আর সন্দেহ-মাত্র ছিল না। বরং ক্রমে তার মনে এই ধারণাষ্ট একটু বদ্ধমূল হচ্ছিল যে তার আগ্রহ সীমাকে যেন ক্রমেই কঠিন করে তুলছে। অবশু, এ-ধারণা তার ব্যর্ণ হৃদয়ের অভিমানপ্রস্বতও হতে পারে । নরনারীর আকর্ষণ-জনিত দুৰ্ব্বলতা সীমার দীপ্ত মনের পক্ষে কি হেয় ? তার অন্য নাম কি তার কাছে দেশদ্রোহিতা ? নিখিলনাথের প্রেমাৰ্ত্ত চিত্তের উৎকণ্ঠ যেন তার কাছে উপহাসের সামগ্রী। তবে সে কি করবে ? কেমন করে সীমাকে সে আগুনের মোহ থেকে বাচাবে ? এই চিস্তায় কিছুকাল যাবৎ তার চিত্ত আকুল হয়ে ছিল। আজ যেন সে নূতন করে একটা পথের সন্ধান পেল। জ্যোৎস্নার শাস্ত স্থির বুদ্ধির আকর্ষণে সীমা যদি ক্রমে ধরা দেয়। যদি জ্যোৎস্নাকে তার সমস্ত যুক্তিতর্কে স্বসজ্জিত করে ধীরে ধীরে সীমার উত্তপ্ত চিত্তকে শাস্ত করে আনতে সমর্থ হয় তা হলে সত্যবানের আদেশ প্রতিপালন করা তার পক্ষে একান্ত অসম্ভব নাও হতে পারে । এমন কি—কিন্তু হায় অতটা ছুরাশা সে করবে কোন দুঃসাহসে ? পরদিন দুপুরবেলা সে কমলাকে নিয়ে কয়েক ঘণ্টার