পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাঘ ছাইচাপ অণগুন وهي لهجه কতবার করে পড়েছি। তখনই আমি জানতে পেরেছিলাম, এ কখনও নন্দিনীর লেখা হ’তে পারে না ।” “কেন বলুন ত?” “আমি ত ওকে জানি । ওর মনের প্রসার যে ভত দূর হতে পারে না । তা ছাড়া, আমার প্রতিও যেটুকু ভালবাসা জন্মেছে সেই পুজিতেই আমন গভীর চিন্তাপূর্ণ ভালবাসার কথা ও লিখতে পারে না । সে বয়স ওর হয় নি।” “জেনে শুনেও আপনি অমন সব চিঠির জবাব দিতেন কেন ?” “আমার অগোচরে যে রহস্তাবগুণ্ঠন নারী আমায় অমন পত্র দিত তার কাছ থেকে অমন মুনার জবাব পাব এই আশায়! হাজার হ’লেও সাহিত্যরসের এমন গভীর একটা নিদের্শ আছে যাকে পাবার লালসা আমি কিছুতেই দমন করতে পারলাম না । তা ছাড়া সে সাহিত্যন্মষ্টি যখন অপরিচিত রহস্যময়ী এক নারী করছেন ’ “কি ক’রে জানলেন নারীরই লেখা ?” “সে জানা যায় ভাষার কমনীয়তায় । আপনার কি ভাবেন, আপনাদের পেলব নারীত্ব শুধু দেহে । তা নয়, মারীর নারীত্ব তার দেহে, তার স্বরে, তার ভঙ্গীতে আচারবাবধারে, ভাষায়,—এমন কি সাহিত্যিক ভাষাতেও । তা ছাড়া, চিঠিগুলিতে সত্যকার নারীর সত্যকার প্রেমের পরিচয় ছিল। তা কি আপনি অস্বীকার করেন ?” সহসা কঠোর দৃপ্তম্বরে চন্দন বলে, “নিশ্চয় । আপনি বলতে চান স্বরথ বাবু যে আমার মধ্যেকার সত্যকার নারী আপনাকে সভ্যকার প্রেম জ্ঞাপন করেছিল ! এ অপমান আপনি আমায় করতে পাবেন না । মৃদ্ধ নন্দিনীর অভিকাতর প্রার্থনা অবহেলা করতে-নHপারার দুর্বলতার বশে আমায় তার হয়ে আপনাকে পত্র লিখতে হয়েছিল। আমি তার উপকার করেছিলাম। নিজের বাসনার চরিভার্থতা খুঁজি নি।” স্বরথ রেলের চাকুরী করে, কিন্তু অতি-আধুনিক বলিয়৷ গর্ব রাখে, সেই জন্য যথারীতি ও যথাস্থবিধা লেখাপড়া করিয়া থাকে। তাহার মধ্যে সংযম আছে, বিনয় আছে, ভদ্রতা আছে,-যাহা তাহার সৌম্য সহাস বলিষ্ঠ দেহের মধ্যকার একটি বলিষ্ঠ মনের পরিচয় দেয়। সে রুচিসঙ্গত কণ্ঠে বলে, “আমি তোমাকে এতটুকুও অপমান করি নি চন্দনা, করতে চাইও নি। আমার শ্রদ্ধা ও প্রীতির বাহুল্যে তুমি আমার অপমানের বহু বাহিরে গেছ। তুমি যা বললে তার উত্তর আমি এখন দেব না। আমার এ-কথায় যদি তোমার বিশ্বাস হয়, তুমি আবার আমার কাছে আসবে, তখন তোমার ইচ্ছা হ’লে তোমার কথার উত্তর দেব। নইলে ج وجصصدbونة আর নয়। তবে সত্যিই তোমায় অপমান আমি করি নি । তোমার আলোচনায় ও তোমার পত্রের প্রসারতায় তোমার সঙ্গে সত্যই একটু সহজ ও প্রকাগুভাবে কথা বলেছি। যদি কটু লেগে থাকে, অজ্ঞানতাকৃত ও উদ্দেগুহীন বলে ক্ষমা ক’রে ।” চন্দন মনে মনে একটু নরম হয়। তথাপি কঠিন ভাবেই বলে, “অপমান করেন নি একথা মুখে বললেন, কিন্তু হঠাৎ ‘আপনি থেকে ‘তুমি’র পর্যায়ে নামিয়ে দিলেন কোন সম্মানের অধিকারে বলতে পারেন ?” “নিশ্চয়, এটুকু আর বলতে পারব মা ! তোমার পত্রে ও আলাপে তোমার প্রতি আমার একটা টান এসেছিল । তা শ্ৰদ্ধার টান। সেই সুত্রে তোমাকে আমি আপনি বলতে চেয়েছিলাম, শ্রদ্ধার পাত্রী বলে । এখন দেখলাম, আমি ভুল করেছি। মন তোমার সত্যকার বড় মন, আকাজক্ষ তোমার গভীরভাকে চায় ;–কিন্তু তুমি ভারি ছোট, বয়সেও, বুদ্ধিতেও । তোমাকে ‘আপনি বলার মত শ্রদ্ধ করার আমার কিছু নেই । সাধারণ মেয়েদের চেয়ে তুমি একটু তফাৎ, কিন্তু আমার কাছে শেখবার তোমার এখনও যথেষ্ট আছে।---আমায় ভুল বুঝে না ।" নন্দিনী ঘরে ঢোকে । বলে, “রাগ ক’রে না ভাই, চেচানটা বড় বেশী হচ্ছে। কি হ’ল, ঝগড়া বুঝি ? ঘণ্টাখানেক ঘরে থেকে তোমার সঙ্গে যে ঝগড়া করতে পারে, তার সঙ্গে সারাঞ্জীবন কি ক’রে ঘর করব ভাই ?" ক্রোধে অধীর হইয়া চন্দন বলে,—ঝগড়া হবে না ? রাকুলী! কেন মরতে বলতে গিয়েছিলে আমি চিঠি লিগে দিয়েছিলাম ! না ব’লে পার নি ?” “বা রে, তা কি হ’ল ? উনিই ত বললেন । কত ক’রে বললেন। তাই তোমার কথা বলেছি। তাতে কি হয়েছে ? উনি ক্ষেপাচ্ছেন বুঝি ?” “ক্ষেপাচ্ছেদ বইকি !” চন্দনার স্বর ভারী হইয়া আসে । হতভম্ব হইয়া নন্দিনী বলে, “কি হ’ল, কিছুই ত বুঝতে পাচ্ছি নে ৷” গম্ভীর স্বরে মুরথ ডাকে, “চন্দন !” সে স্বরে চন্দনার সারা দেহমন দুলিয় ওঠে। শিহরিয়া ওঠে প্রতি শিরা-উপশিরা । ক্লাস্ত স্বরে সে উত্তর করে--- “কি বলছেন ?” গম্ভীরতা অক্ষুণ্ণ রাথিয়া স্বরথ বলে, “বাড়ী যাও। আর এথানে থেক না । যাও আমার কথা রাখ।” মন্ত্রাবিষ্টের স্তায় চন্দনী উঠিয়া চলিয়া যায়। সে-রাত্রে কি দুর্ধ্যোগই গেল ! বর্ষায় ঝড়ে যেন মাতামাতি। চন্দনার সারা রাত্রে ঘুম নাই। পল গণিয়া