পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নিষিদ্ধ দেশে সভক্সল স্বৰলর مع سياج) হইয়াছে, সেগুলি সেচনের জন্ত বৃষ্টির উপর নির্ভর করিতে হয়। কূপ হইতে চামড়ার ভোল করিয়া গ্রামের জল তোলা হয়, কূপ বিশেষ গভীর নয়। রাত্রে গৃহস্থ আমাদের খুৰ্ব্ব-পা খাওয়াইলে পরে স্বমতি-প্রজ্ঞ পথে কেন কাপড় টুকরা করিয়া বুদ্ধগয়ার প্রসাদ বলিয়া সকলকে বিতরণ করিলেন । পরদিন চা পান করিয়া দুই-তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর ভাবিলাম আজও বুঝি খচ্চরের দল রওয়ান হইবে না। সেই জন্য ফিরিয়া খচ্চরের জাডডার দিকে যাইতে যাইতে গ্রামের কাছে দলের সঙ্গে দেখা হইল । আমি ও স্বমতি-প্রজ্ঞ দুই জনে দুইটি খচ্চরের সওয়ার হইলাম। খচ্চরের মুখে লাগাম নাই, স্বতরাং আমরাই তাহাদের ইচ্ছাধীন হইয়া চলিলাম। আমাদের দল ব্রহ্মপুত্রের তীর ছাড়িয়া ডাহিন দিকে চলিল। কিছু দূর যাইবার পর দেখিলাম এখানে-ওখানে দূরবিস্তৃত বালুর চর, তাহার মাঝে মাঝে কুশের মত ঘাস, এবং অল্প চড়াইয়ের পরে এক জোত বা ঘাট, দ্ধিপ্রহরে তাহা পার হইলাম। উৎরাইও সহজ, এখানকার পাহাড়গুলিও বৃক্ষগুল্মহীন। কিছু দূরে পর্বতশিখরে বামে ও দক্ষিণে দুইটি গুস্কার ধ্বংসাবশেষ দেখা গেল এবং সেই পাহাড়েরই নীচে বিশাল বৃক্ষশ্রেণী দেখিলাম, মনে হইল সেগুলি আখরোট ৰিৎৰা বিরি বৃক্ষ। সেদিন বেলা দুইটা পৰ্য্যস্ত পথ চলা হইল। কিছুক্ষণের জন্ত এক গ্রামে অপেক্ষা করিয়া খচ্চরগুলির ভূষি ও আমাদের চী জোগাড় করা হইল। গ্রামের পরই চড়াই আরম্ভ, উপর হইতে একটি জলের ধারা নামিতেছিল, সেই জলে এই গ্রামের ক্ষেতের সেচ হয় । তাহার পাশ দিয়া চলিলাম। প্রায় এক ঘণ্টা চড়াইয়ের পর উপরের ঘাটে পৌছিলাম। ঘাটের উপরিস্থিত পৰ্ব্বতগাত্রের পাথরগুলি আড়ভাবে খাড়া হইয়া আছে, স্বতরাং খচ্চরের স্থবিধার জন্ত উৎরাইয়ের কতকটা পথ হাটিয়া চলিলাম। এইখানে এক প্রকার কালো পাথর চারি দিকে দেখা গেল, শুনিলাম এইরূপ পাথরের নিকটেই সোনার খনি থাকে। অনেকটা উৎরাইয়ের পর মোট পাথরের দেওয়ালযুক্ত একটি ছোট দুর্গের বা ফৌজী চৌকির কাছে পৌছিলাম, ইমারতটি প্রাচীন নছে, কিন্তু এখন জনশূন্ত । কেল্লার দেওয়ালে ঘাটের-দিকে &P-\b মুখ-করা কামানের ছিদ্র । কিছু দূর চলিবার পর আমরা ঐ জলধারার পাশ ছাড়িয়া, একটি ছোট পাহাড় ও একটি নালা পার হইয়া চব-অঙ-চারে গ্রামে পৌছিলাম। গ্রামে মাত্ৰ পাচ-ছয়টি ঘর, একটি বেশ বড়, বোধ হয় কোন ধনীর, অন্তগুলি খুব ছোট। মুমতিপ্রজ্ঞ ও আমি এক বৃদ্ধার গৃহে আশ্রয় লইলাম, থচ্চরওয়ালার মাঠে লোহার খোটায় দড়ি দিয়া খচ্চরগুলি বাধিয়া বোঝা নামাইয়া ভূষি খাওয়াইল। ভূষি খাওয়ানো হইলে তাহাদিগকে খুলিয়া জল পান. করাইয়া মুখে দানার থলি বাধিয়া দিল । দানা বলিতে এখানে দলিত কাচা মটর বা ঐ জাতীয় পদার্থ দেওয়া হয় । আমাদের জন্স বুদ্ধা খুব্ধ-পা রাধিয়া দিল এবং শয্যার জন্ত গদও পাতিয়৷ দিল । পরদিন প্রাতে এক টঙ্কা “নে-ছঙ" ( বাস করিবার জন্ত বকশিশ ) দিয়া খচ্চরওয়ালাদের দলের দিকে চলিলাম । অল্পক্ষণের মধ্যে তাহারা প্রস্থত হইয়৷ চলিতে লাগিল। পথ বহুদূর পর্য্যস্ত উৎরাই, চারি দিকে কালে পাথর চক্‌মক্‌ করিতেছে, মধ্যে খচ্চরের পাল লোহার ঘন্টার ধ্বনিতে পথ মুখরিত করিয়া দ্রুত চলিয়াছে। প্রায় এগারটা নাগাদ উৎরাইয়ের শেষে একটি লাল রঙের গুম্বা দেখা দিল এবং সামনে একটি নদীও পাইলাম। নদী পার হইয় তাহার দক্ষিণ তীর ধরিয়া উপরের দিকে কিছু দূর গিয়া এক গ্রামে চা-পানের জন্ত আমরা থামিলাম। গ্রাম হইতে নদী ছাড়িয়া অল্প চড়াইয়ের পর অনেক দূর পর্য্যস্ত সমতল পথে চলিয়া লা ( ঘাট) পার হইলাম। এখানকার মাটি মন্থণ ও হরিশ্রাভ, বর্ষায় চাষের বিশেষ উপযুক্ত বলিয়া মনে হয়। আরও পরে কতকগুলি ক্ষেত দেখা গেল, সেগুলিও বর্ষার উপর নির্ভর করে। এইরূপে অনেক দুর চলিয়া শব-কী নদীর পারে একটি বড় গ্রামে পৌছিলাম। গ্রামে বড় বড় ঘর, সফেদ ও বিরি বুক্ষের বাগান এবং সেচ-খালের ব্যবস্থা সবষ্ট আছে । এখানে নদীর উপর পাথরের সেতুও রহিয়াছে। সেতু এবড়ো-খেবড়ে পাথরের তৈয়ারী, মাঝে মাঝে কাঠের ব্যবহারও হইয়াছে, স্তম্ভগুলি রক্ষার জন্ত তাহাদের মূলে চবুতর করা আছে। নদীর