পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আনতে পারলে—” তার মনের ভিতরটা এই প্রতিষ্ঠানের উপর যেন কৃতজ্ঞ বোধ করতে লাগল। যেন তারই কাজ এরা অনেকটা ক'রে রেখেছে। এই ত একটা বৃহৎ জমি প্রস্তুত—অদৃষ্ট স্বপ্রসন্ন হ'লে এই রকম একটা জায়গা থেকে কি না হ’তে পারে । সে মনে মনে কমলাপুরী দেখে আসবার সংকল্প স্থির করলে। মুখে অবগু কোনও কথা সে প্রকাশ করলে না। সীমাকে স্তব্ধ হয়ে চিন্তা করতে দেখে কমলার মনে একটু আশার সঞ্চার হ’ল। সে উৎসাহিত হয়ে বললে, “মানুষকে কল্যাণের পথে চালাতে হ’লে যে-শক্তির দরকার এই মেয়েটির তা নিশ্চয়ই প্রচুর আছে। কিন্তু আমি জানি না তোমার মত এমন একটা প্রকাণ্ড কাজের ক্ষেত্র ক'রে এমন সহজে চালাবার ক্ষমতা তার আছে কি না। তুমি যদি মনে কর, কি না করতে পার বল ত ? সমস্ত দেশের শিক্ষা, শিল্প, শক্তিকে জাগাতে তোমার এই প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্য দিয়ে অনায়াসেই তুমি পার। যাদের স্বাধীনত চাওঁ তাদের ভিতর থেকে স্বাধীন ক’রে তোল—বাইরের পরাধীনতার খোলস একদিন থ'সে যাবেই।” হঠাৎ সীমার মুখের দিকে চেয়ে তার শূন্ত দৃষ্টির উপর চোখ পড়ায় কমলা চুপ করলে—সীমা তার কথা শুনছে না নাকি ! না তারই কথায় তার মনটা বিচলিত হয়েছে। বললে, “সত্যি ভাঙ্গ, তুমি এমনি একটা কাজে লেগে যাও ত আমার এই স্বাস্তাকুড়ে ফেলে-দেওয়া জীবনটা একট। কাজের রাস্ত পেয়ে বেঁচে ধায় । আমি সামান্য, কিন্তু তোমার উপর আমার ভালবাস ত কম নয়। কাঠবেরালি দিয়েও সেতু বাধার কাজ হয়েছিল—কি বল ?”—ব’লে হাসতে লাগল। সীমা অল্প হাসবার ভান ক’রে বললে, “তবে কাঠবেরালি ত জতুগৃহ-নিৰ্ম্মাণে লাগে নি। না না সত্যি, আসল কথা তোমরা উল্টো ক'রে ভাব তাই আমার কথা তোমরা বোঝ না। এটা প্রতিমা গড় নয় যে তার কাঠ-খড় ঠিকমত সাজাও, রং দাও তার পর একদিন মন্ত্র পড়লেই তাতে প্রাণপ্রতিষ্ঠা হবে। এটা একটা জীবন্ত মহাভকু ; মরতে বসেছে যে স্বৰ্য্যলোকের অভাবে, সেই স্থধ্যালোক তাকে গাও-দেখে। ফলে ফুলে পাতায় পৌন্ধ্যে হিরোলে আপনিই ঝলমল ক'রে উঠবে। স্বাধীনতা আমাদের সেই স্বৰ্যালোক—সেই আমাদের অমুতরস যোগাবে। গাছকে সুধ্যালোক থেকে বঞ্চিত ক'রে তার তদ্বির-তদারক করতে বললে তাকে উপহাস করা ছাড়া আর কিছু হয় না।” বলে অসহিষ্ণু চোখে জানালার বাইরে চেয়ে চুপ করে ॐझेळन । কমলা তার বিরক্তি দেখে আর কিছু বলবে না ভাবছে এমন সময় সীমা তার দিকে ফিরে বললে, “কিছু মনে ক'রো না ভাই, তোমাদের ঐ রকম বিনিয়ে বিনিয়ে চুনিয়ে চুনিয়ে ভাবতে দেখলে আমার বৈধ্য থাকে না। নিগিলবাবুর মত লোক, র্যার মৃত্যু ভয় কেন, কোন ভয় কোন লোভ নেই বলে আমার বিশ্বাস ; যার মত লোক দেশের কাজে নামলে আমাদের বুকট দশ হাত বেড়ে যায়, এক বয়সে তিনিও যখন বালাপোষ-মুড়ি-দেওয়া ভামাক-থেকে বুড়োদেব মত ওজন ক'রে ক'রে কথা বলতে থাকেন তখন তোমায় আর কি বলব বল ? কিন্তু সত্যি বল ত সত্যিহ কি তোমরা দেশের স্বাধীনতাকে প্রাণে মনে কামনা কর না ? স্বাধীনতার চেয়ে বড় কাম কেমন ক'রে লোকের মনে থাকৃতে পারে তা আমি ভেবেঙ্গ পাঙ্গ না। সমস্ত স্বাধীন দেশের লোকেদের গিয়ে জিজ্ঞেস কর যে, কি হারালে তারা সবচেয়ে নিজেদের иfии ব'লে অল্প ভব করবে— একবাক্যে তার বলবে স্বাধীনতা । আমরাহ কেবল নানা মনোভাবের তাড়নায় পড়ে দার্শনিক সেঞ্জে রঙ্গলাম।” কমল খুব নরম হরে বললে, "ভাই তোমাদের মত ত আমি পড়াশুনে করি নাই । গবরের কাগজ পড়ে পড়ে যেটুকু শিথি । সব ভাঙ্গ আবার বুঝিও না । স্বাধনও যে ভাল সে-কথা ত “না” বলছি না। তবু আজকাল আবার অনেক চিন্তাশীল লোক ত এই সব জিনিষকে অন্য চোথে দেখতে মুরু করেছেন । কোথায় যেন দেথলাম ধে এহু রাজনৈতিক জাতিভেদ অর্থাং জাতীয় স্বাধীনতা এ-সব জিনিষ সভ্যতা এবং মন্তযুদ্ধের বিরোধী—আর এটা নাকি সভ্যজগতে আর বেশী দিন টিকবে না। এতখানি জমি আমি দখল ক'রে আছি এর মধ্যে কেউ পা বাড়িও না তা হলেই খুনোখুনি বাধবে—কিংবা আমার গায়ের জোর