পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

कोर्छन्। ফলাফল নির্ণয় করিতে সমর্থ হুইব । এই কায্যে প্রবৃত্ত হইয়ু আমরা প্রতিদিনই অমুভব করিতেছি যে পল্লীগ্রামে জনসাধারণের মধ্যে স্বাস্থ্যনীতি পালন সম্বন্ধে জ্ঞান অতি সামাছ । এই বিষয়ে তাহাদের চিত্তকে সচেতন করিবার জন্য ম্যাজিক লণ্ঠন ইত্যাদির সাহায্যে বক্ততা ও আলোচনার ব্যবস্থা করা হইয়াছে । পশ্চিম-বঙ্গের বাঁকুড়া প্রভৃতি জেলার অবস্থা বীরভূমের সদৃশ। তথাকার বহু পল্লীগ্রামে শ্ৰীনিকেতন-প্রবর্তিত স্বাস্থ্যসমিতিসমুহের মত সমিতি স্থাপিত ও পরিচালিত হইলে তাহার দ্বারা দেশের হিত হইবে বলিয়া সমিতিগুলির কিঞ্চিৎ বিস্তারিত বৃত্তান্ত দিলাম। কনফারেন্সটিতে বীরভূমের জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের সভাপতিত্ত্বে কতকগুলি প্রস্তাব আলোচিত ও গৃহীত হয়। জলসেচনের অনেক হাজার পুষ্করিণী বীরভূম ধাকুড়া প্রভৃতি জেলায় আছে ( বা ছিল ) । কিন্তু অধিকাংশ ভরাট বা আধ-ভরাট হইয়া যাওয়ায় তদ্বারা জলসেচনের কাজ হয় না, অধিকন্তু সেগুলি মশার উৎপত্তির কারণ হইয়া পল্লীবাসীদের স্বাস্থানাশ করে । এইগুলির পঙ্কোদ্ধার একান্ত আবশ্বক। তাহার গুল্প অস্ততঃ অৰ্দ্ধেক টাকা গবন্মেন্টের দেওয়া উচিত। তাহা গবন্মেন্টের কৰ্ত্তব্য । এবং তাহাতে গবয়েন্টের লাভ বই লোকসান হইবে না। এইরূপ ব্যয় করিলে যে-সব গ্রামের পুষ্করিণীর পক্ষোদ্ধার হইবে, তথাকার লোকদের চাষের আয় বাড়িবে ও স্বাস্থ্য ভাল হইবে । তাহাতে সাক্ষাৎ ও পরোক্ষ ভাবে গবন্মেন্টেরও আয় বাড়িবে। ব্যবসায়ী সমিতি ফরিদপুর জেলার ব্যবসায়ী সমিতির বার্ষিক অধিবেশন উপলক্ষ্যে কয়েক দিন পূৰ্ব্বে ফরিদপুর গিয়াছিলাম। প্রাতঃকালে এক বার ও অপরাহ্লে এক বার তাহার অধিবেশন হইয়াছিল। প্রাতঃকালের অধিবেশনে সমিতির সভাপতি ঐযুক্ত যতীন্দ্রমোহন সিংহ মহাশয় একটি বহুতথ্যপূর্ণ অভিভাষণ পাঠ করেন। তাহাতে তিনি, ফরিদপুর হইতে যত রকম জিনিষ রপ্তানী হয় বা হইতে পারে, এবং ফরিদপুরে যত রকম জিনিষ আমদানী হয়, তাহার প্রধান প্রধান দ্ৰব্যগুলির উল্লেখ করেন ; ফরিদপুরের কৃষিজাত জব্যসমূহের উল্লেখ করেন এবং লাভজনক আরও কি কি শস্য উৎপন্ন হইতে পারে তাহ বলেন ; এবং স্থলপথে ও জলপথে যাতায়াত ও পণ্যফ্রব্য আমদানী রপ্তানীর সুবিধা-অস্থবিধার কথা বলেন। ব্যবসা-বাণিজ্যের অন্ত নানাবিধ সুবিধা-অসুবিধার কথাও তাহার অভিভাষণে ছিল । অপরাহ্লের অধিবেশনে সমিতির নানা প্রস্তাব গৃহীত হয়। তাহার মধ্যে কয়েকটিতে রেল ও ষ্টীমারের কর্তৃপক্ষ এবং গবল্পেটিকে ব্যবসায়ীদিগের অনেক অন্ধবিধার কথা বিৰিখ প্রসঙ্গ—ৰ্যৰসাল্পী সমিতি so ৭৬৫ জানান হইয়াছে। এইগুলি শম দূরীভূত হওয়া আবগুক । ভেজাল দ্রব্যের সরকারী রাসায়নিক পরীক্ষা সম্বন্ধীয় অন্ধবিধা ও অভিযোগটির প্রতিকার না হইলে শুধু যে ব্যবসায়ীদের অস্থবিধা তাহা নহে, যে-সকল ক্রেতা না-জানিয়া ভেজাল জব্য ব্যবহার করে তাহাজেরও স্বাস্থ্যহানি ঘটে। ভেজাল জব্যের রাসায়নিক পরীক্ষা সম্বন্ধীয় প্রস্তাবটি ও তাহার আলোচনা হইতে জানিলাম, যে ভেজাল জিনিষের পরীক্ষার ফল জানিতে পাচ ছয় মাস বিলম্ব হয়, তত দিনে দোকান হইতে তাহা সমস্তই বিক্ৰী হইয়া যায় এবং তাহার ব্যবহারে সাধারণের যে স্বাস্থ্যহানি হইবার তাহা হইয়া যায়। তখন ভেজাল-জব্যবিক্রেতা দোকানদারের শাস্তি হক্টলেও ক্রেতাদের স্বাস্থ্যহামি যাহা হইয়া যায় তাহার কোন প্রতিকার হয় না । অভিযোগটির আলোচনায় ইহাও শুনিলাম, যে, ভেজাল ভ্ৰব্য যাহারা উৎপাদন করে-যেমন ভেজাল সরিষার তেল উৎপাদক কলওয়াল, শাস্তি তাহাদের হয় মা; কিন্তু মফস্বলের যে আমদানীকারী খুচরা বিক্রেতা তাঙ্গ আমদানী করিয়া বিক্ৰী করে, শান্তি তাঙ্গর হয়, কারণ ভেজাল ত্রব্যের নমুনা তাহার দোকান হইতে গৃহীত। ফরিদপুরে যেরূপ ব্যবসায়ী সমিতি আছে, তেমন সমিতি আর কোন কোন জেলায় আছে জানি না। কিন্তু সকল জেলাতেই এই প্রকার সমিতি থাকা উচিত, এবং সকলগুলির সহিত সহযোগিতা করিবার জঙ্ক ও প্রয়োজনমত পরামর্শের জন্ত কলিকাতায় কেন্দ্রীয় সমিতিও একটি থাকা আবশুক । বেঙ্গল দ্যাশঙ্কাল চেম্বারের উদ্দেশু যদি এইরূপ হয় এবং তাহার দ্বারা যদি এইরূপ কাজ হয়, ত ভালই। নতুবা অল্প একটি কেন্দ্রীয় সমিতি স্থাপিত হওয়া আবগুক । কলিকাতার ইণ্ডিয়ান চেম্বার অব কমাসে* বাঙালীও সভ্য হইতে পারে বটে, কিন্তু তাহাতে অবাঙালীর সংখ্যা ও প্রাধান্তই বেশী । মাড়োয়ারী চেম্বার অব কমাসের্ণ মাড়োয়ারী ব্যবসাদারদেরই স্বার্থ দেখা হয়। স্বতরাং বাঙালী ব্যবসাদারদের স্বার্থরক্ষার জন্ত বিশেষ করিয়া বাঙালীদের ব্যবসায়ী সমিতির প্রয়োজন রচিয়াছে। ফরিদপুর ব্যবসায়ী সমিতি কোন একটি ধর্শ্বসম্প্রদায়ের ব্যবসাদারের সমিতি নহে। এই জন্ত এই প্রকার সমিতির স্বারা সকল ধৰ্ম্মসম্প্রদায়ের ব্যবসায়ীদের কল্যাণ সাধিত হইতে পারে । ফরিদপুর ব্যবসায়ী সমিতির কাধ্যবিবরণ, প্রস্তাবাবলী এবং শ্রযুক্ত যতীন্দ্রমোহন সিংহ মহাশয়ের অভিভাষণটি মুজিত হইয়া সকল জেলার ব্যবসায়ীদিগের মধ্যে প্রচারিত হইলে ফল ভাল হইবে মনে করি ।