পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

कॉर्डिंक অলখ-ৰোগরণ ግጭ বলিয়া ডাকিয়াছে। এই জঙ্গ মৃগাক্ষ-দাদ। তাহাকে মহামায়া ক্ষুঃস্বরে বলিলেন, “অাদত দোষ ত আমার কত ক্ষেপাইত ! ঠাকুরঝি! তুমি অকারণ অন্তের উপর রাগ করছ কেন ?” করুণা বলিল, “ম, সংসারে আর আমার মায়া নেই । ছেলে বল, মেয়ে বল, সবাই টাকার বশ । টাকা না দিতে পারলে ছেলেও মুখে লাথি মারবে। তাদের অচ্ছেদার ভাত আমি খেতে চাই নে। তোমার ভাত এতদিন খেলাম, বাকি ক’টা দিনও যদি খেতে পেতাম তার কি ব্যবস্থা হয় না ?” মহামায়া বলিলেন, “সেখানে দুখানা আট হাত দশ হাত ঘর বাছা, তার ভেতর তোকে নিয়ে আমি কোথায় রাখব ? আপনি পাশ ফিরতে জায়গা পাব না, পরকে দুঃখ দিতে নিয়ে যাব কেন ?” করুণা বলিল, “আই, তবে কেন মা এ সোনার সংসার ছেড়ে সীতের বনবাসে যাচ্ছ ?” শিবু শুনিয়া বলিল, “ম, আমি তোমার জন্তে সাত মহলা বাড়ী করে দেব। দুখানা ঘরে তুমি কখখনো থাকবে না। তুমি ঘরজোড় খাটে ধূত খুশী পাশ ফিরবে।” মহামায় হাসিয়া বলিলেন, “টাকা রে ?” শিবু বলিল, “কেন ? হাটে নোট করুণা দিদি টাকা নিয়ে আসবে।” মৃধা বলিল, “তার নোটগুলে। কি গাছ থেকে পড়বে ?” শিবু হার মানিবার ছেলে নয়। সে বলিল, “ও, ভারি ত নোট, অমন আমি ঢের বানাতে পারি।” মহামায়া হাসিয়া বলিলেন “তবেই হয়েছে ! একেবারে সাতমহলে মায়ে পোয়ে বন্দী হব।” দুপুর বেল পুরানো পাড়ের রঙীন স্থত তুলিয়া হৈমবতী বুড়া আঙুলে বাধিয়া পাক দিতেছিলেন। গল্পের শব্দ পাইয় কাছে আসিয়া হৈমবতী বলিলেন, “বাসা বাড়ী কি আর বাড়ী ? পরের কাছে হাত জোড় করে থাকা! এ বলছে দূর দূর উঠে যেতে হবে, সে বলছে দূর দূর উঠে যেতে হবে। মামুষের মান সন্ত্রম থাকে না ওতে। আমি আর কি বলব বল ? অামার কথায় ত কেউ চলবে না ? মুখে থাকতে সব ভূতে কিলোচ্ছে।” কোথায় পাবি ভাঙাতে দেব । মা ষে কোনও বিষয়ে দোষ করিতে পারেন একথা মা’র মুখে শুনিয়াও শিবুর বিশ্বাস করিতে অত্যন্ত মানহানি হইত। সে রাগিয়া বলিল, “ম, তুমি কিছুই জান না। অস্থখ করলে কখনও কারুর দোষ হতে পারে না ।” মহামায়া হাসিয়া বলিলেন, “সে টুকুন বুঝি বাছা! কিন্তু আমারই জন্তে ষে সমস্ত সংসারটা ওলটপালট হতে চলল এটা কি আর দোষের চেয়ে ছোট কথা ?” হৈমবতী বলিলেন, “থাকৃগে, ছেলেপিলের কাছে বাপ মায়ের দোষগুণ বিচার করতে হবে না। ওরা কচির্বণচা, অত কথার মানে কি জানে ? যা, তোরা যা দিখি, আপন চরকায় তেল দিগে য৷ ” শিবু বলিল, “ও বুঝতে পেরেছি, আমি চলে গেলেই মাকে বুঝি তুমি বকবে ?” পিসিমা ধমক দিয়া বলিলেন, “বিষের সঙ্গে খোজ নেই, কুলোপারা চক্কর, উনি এলেন আমায় শাসন করতে ! কে কার নাড়ী কেটেছিল রে ?” এবার আর শিবুর সাহসে কুলাইল না। সে সেখান হইতে এক দৌড় দিয়া আমবাগানে পলাইল । গাছে কচি কচি আমি ধরিয়াছে, যদি কিছু দুপুরবেলা একেলার জন্ত সংগ্ৰহ করা যায়। হৈমবতী ও মহামায়া করুণাকে লইয়া সিন্ধুক খুলিয়া বাসন বাছিতে বসিলেন । হাল্কা দেখিয়া কাস-পিতলের কিছু বাসন কলিকাতা লইয়া যাইতে হইবে। যে সকল বাসনের সঙ্গে তাহার মা-ঠাকুমার স্থতি জড়িত, সেগুলি হৈমবতী সযত্নে আলাদা করিয়া রাখিলেন, “এ সব সাত কালের জিনিষ বাসাবাড়ীতে নিয়ে গিয়ে কাজ নেই, কে কোথায় ভেঙে ছড়িয়ে নষ্ট করবে।” ননদ সম্পর্কে ত বড়ই, বয়সেও অনেক বড়, কাজেই মহামায়া তাহাকে সমীহ করিয়া চলিতেন। হৈমবর্তী যাহা বাছিয়া দিলেন মহামায় তাহাই করুণার হাতে দিয়া নিজের ঘরে পাঠাইলেন। নিজের পছন্দ ও মতামত প্রকাশ করিলেন না । পাড়াগায়ে কাঠের বাজ পাওয়া যায় না, ছোটবড়