পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৯২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

سونگ سوb চিস্ত/করে তার মনটা অত্যস্ত ত্ৰিয়মাণ হয়ে গেল্প। সত্যিই যদি জ্যোৎস্না তার স্বামীর কোন সন্ধান পায়ও, তা হ'ণেs.e তার উপায় কি হবে । একবার ভাবলে নিতান্ত সেকেলে কনসারভেটিব বুড়ো নয় বোধ হয়, বিলাত যেত না তাহলে । আবার মনে হ’ল, কোথাকার কে তার ঠিক নেই—আগে থাকতেই একটা যোগাযোগ ক'রে সমস্তার সমাধান করতে বসেছি। যাই হোক, এই স্বত্র টুকুকে ছাড়া হবে না ; ভাল ক'রে অনুসন্ধান ক'রে শেষ পৰ্য্যস্ত দেখতে হবে । নানা চিন্তায় বিনিদ্র রজনী কাটিয়ে পরদিন সকালে তারা কমলাপুরীর ঘাটে গিয়ে পৌছল। কমলাপুরী পৌঁছে সে শুনতে পেল যে পাৰ্ব্বতী দেবী আশ্রমে নেই। সম্প্রতি অবশু পাৰ্ব্বতী দেবীর অনুপস্থিতি সম্বন্ধে তার দুশ্চিন্তার কোন কারণ ছিল না । তাকে দেখবার আগ্রহ থাকলেও আসল লোকটির সন্ধান এখনই তার পাওয়া দরকার। স্বতরাং যে-ভদ্রমহিলা পাৰ্ব্বতীর বদলে আশ্রমের কর্ণধাররূপে ছিলেন, অগত্যা তার সঙ্গেই সাক্ষাৎ করে সে সীমার সংবাদে আরও দুশ্চিম্বাম্বিত হয়ে পড়ল। পাৰ্ব্বতীকে নিয়ে সীমা চলে গেছে, দুশ্চিন্তার কারণ বইকি ? একে ত সীমাকে কলকাতার দুৰ্ঘটনার কথা বলে তার গতিবিধি সম্বন্ধে বিশেয সংযত হবার জন্যে সাবধান করবার অবসরই তার হ’ল না ; তার উপর নারী-প্রতিষ্ঠানের অধিনেত্রীকে এই কদিনের আলাপে সে এমনভাবে আকর্ষণ কেমন ক'রে করতে সমর্থ হ’ল যাতে তার সমস্ত পরিবেষ্টন থেকে মুক্ত করে এমন অনায়াসে নিজের অনুসরণ করতে তাকে প্রলুব্ধ করলে। পাৰ্ব্বতী যে কিসের আকর্ষণে সীমার অনুসরণ করেছিল নিখিলনাথের তা জানবার সম্ভাবনা ছিল না ; সুতরাং রুদ্রপন্থার অগ্নিমোহেই যে পাৰ্ববতীকে সীমা আকর্ষণ ক'রে নিয়ে গেছে সেই কথা ভেবে এবং এই প্রতিষ্ঠানের সর্বনাশ কল্পনা ক’রে সে সত্যই বিশেষ চিন্তিত হ’য়ে পড়ল । এতগুলি অল্পবয়সী নারীর সমগ্র ভবিষ্যৎ অচিরে তাওবের সব্বনাশে ধবংস হয়ে যাবে, অথচ একমাত্র সীমার মোহে এই দুৰ্গতি থেকে এদের সে বঁাচাতে পারছে না এই মনে ক’রে অনুশোচনায় আবার তার চিত্ত পীড়িত হ’তে লাগল। মনে মনে কোন উপায় সে স্থির করতে পারলে না। কোন প্রকারে সীমাকে লুটে নিয়ে সে প্রবণসী S్సల8vరి যদি উধাও হতে পারে, ভারতবর্ষের বাহিরে, জাভায় হোক, -’এফ্রিকায় হোক, বনে জঙ্গলে মরুভূমিতে, মনুষ্যবিহীন নির্জন দ্বীপে, যেখানে হোক, যদি পালাতে পারে । উঃ সে আর ভাবতে পারে না । তার মনে হ’ল এতগুলি জীবনের নিশ্চিত সৰ্ব্বনাশের অভিশাপ তার উপর উদ্যত হ’য়ে উঠেছে । তার জীবনের সত্যব্রতের অগ্নিপরীক্ষায় সে একেবারেই অপদার্থ হয়ে রইল। যেমন ক’রেই হোক সীমাকে তার ধরাই চাই । অস্তরের এই ঝঞ্চাকে অন্তরে অবরুদ্ধ রেখে সে উপনেত্রীকে জিজ্ঞেস করলে, “দেখুন, অনিন্দিতা দেবীর আশ্রম থেকেই আমি আসছি। তাকে আমার বিশেষ দরকার। র্তার বোর্ডিঙের একজন মেয়ের বাড়ীতে ডাকাতি হয়ে তার ভগ্নীপতিকে খুন করেছে। সেই সম্পর্কে অনিন্দিতা দেবীকে এখনই অবিশুক । দয়া করে তিনি কোথায় গেছেন— ।" নিখিলকে তার কথা শেষ করতে হ’ল না। এবটি বাঙালী মেয়ের কাছে অকস্মাৎ একটা খুনের কথা উল্লেখ করলে যে সে অভিভূত হয়ে পড়বে এবং অনেক প্রশ্ন ইত্যাদির বিড়ম্বনা থেকে সে বেঁচে যাবে এই উদ্দেশ্যে কথাট সে বলেছিল। উদ্দেশু সফল হতে বিন্দুমাত্র বিলম্ব হ’ল না। “ও মা গো, কি সৰ্ব্বনাশ ! খুন করেছে ? কি ভয়ানক। চলুন, নিয়ে যাই আপনাকে । ভোলাদ, ও ভোলাদা।” বিশেষ বিচলিত হয়ে সে ডাকাডাকি স্বরু ক’রে দিলে। অল্প অনুসন্ধানের পর ভোলানাথকে তার নদীর ধারে দেখতে পেল । নিখিল ভাবলে, “ভোলাদা” “ভোলাদ” এ নাম যেন কার কাছে শুনেছে। চিত্ত বিব্রত না থাকলে একথা স্মরণ করতে এতটুকু বিলম্বও তার হোত না : হঠাৎ তার মনে পড়ে গেল কমলার প্ৰেলাপ, “ভোলাদ, খোকনকে একটু ধর না।” আবার লঞ্চের সারেঙের কথাও মনে পড়ল । অত্যন্ত মনোযোগ সহকারে সে শুভ্রকেশ সেষ্ট বুদ্ধকে দেখতে লাগল । এই কয় বৎসরের মধ্যেই পোকনের শোকে এবং নানা চিস্থায় তার অনাগতপূৰ্ব্ব বাৰ্দ্ধক্য তাকে এসে আক্রমণ করেছিল। তার বলিষ্ঠ দেহ অনেক কৃশ অল্প মুজি, তার কেশ পলিত এবং মুখশ্ৰী বলিরেখায় আকীর্ণ হয়েছিল। জ্যোংস্কার বণিত ধেীবনলাবণ্য এবং বলিষ্ঠতার বিশেষ চিহ্ন এই লোকটির