পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৯৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নিখিল জিজ্ঞেস করলে, “দেখেছেন তাকে ?” “দেপব না কেন ? এই ত সেদিন আর একটা মেয়ে নিয়ে সিংযোড়ে গেল। কি মতলব, সেই জানে ৷” ট্রেন এসে পড়েছিল, স্থতরাং কথাবাৰ্ত্তা আর চলল না । বুদ্ধদ্বয়কে নমস্কার করে নিখিল বেরিয়ে গেল । জমিদার বাড়ী যখন গিয়ে সে পৌছল তখন রাত অনেক । গ্রামের পক্ষে তখন নিশুতি রাত। তার সেবা-যত্ন-খাতিরের ক্রটি হ’ল না বটে, কিন্তু ম্যানেজারের শরীর অনুস্থ থাকায় তার সাক্ষাৎ সে রাত্রে আর সে পেল না। পাৰ্ব্বতীরা যে কলকাতায় চলে গেছে সে সংবাদ দরোয়ানের কাছেই সে জেনেছিল । ক্লান্ত দেহ এবং চিন্তাকুল চিত্তে সে সমস্ত রাত নজীব হয়ে বিছানায় পড়ে রইল। দুৰ্দ্দৈব পদে পদে . তাকে ব্য হত করছে মনে ক’রে । একটা দুৰ্দ্দমনীয় সৰ্ব্বনাশের আশঙ্কায় মনটা তার পূর্ণ হ’য়ে উঠল । ( ক্রমশ: ) অন্তঃসলিলা শ্রবিভূতিভূষণ গুপ্ত লোকে বলে বৃদ্ধ ; কিন্তু হিমি-ঠানদি তাঙ্গ স্বীকার করেন না, বরং উষ্ণ কণ্ঠে বলিয়া থাকেন, পোড়ারমুখোদের কথা শুনেছিস্ বিশু—এই ত সেদিনের কথ}, কোমরে কাপড় জড়িয়ে ছুটোছুটি করে পাড়া মাতিয়ে তুলতুম । নালুদের গাছ থেকে কোচড়-ভৰ্ত্তি জামরুল নিয়ে এসে বিলিয়ে দিয়েছি । দেশগায়ে ত থাকিস নে, জানবি কি ক’রে । ঠানদি থামিলেন—চোখ বুজিয়৷ অতীতকে বোধ করি চোখের সম্মুখে স্পষ্ট করিয়া আর একবার অনুভব করিয়া পুনশ্চ তিনি কহিলেন, ওদের নজর শুধু বাবার টাকার দিকে জানিস বিশ্বনাথ। ওদের মুগে যদি না আমি ছাই তুলে দি তবে আমার নাম— হেমাঙ্গিনী বৃদ্ধ হইয়াছেন একথা সত্য, কিন্তু যে লোক তার বয়সের অঙ্কটা কিছু হ্রাস করিয়া খুশী থাকিতে চান তাহাকে এই সামান্ত আননটুকু হঠতে বঞ্চিত করিতে আর যাহারা চান করুন, কিন্তু ইহাকে আমি ভাল বলিয়া গ্রহণ করিতে পারি নাই। ঠানদির পক্ষাবলম্বন করিয়া কথা বলিতে গিয়া অনেক ক্ষেত্রেই সাধারণের টাকাটিপ্পনী শুনিয়া থাকি—কথাগুলি মৰ্ম্মান্তিক হহলেও এখন কতকটা গা-সহ হইয়া গিয়াছে। তা ছাড়া কেন জানি না এই সামান্ত কয়েকটা দিনের মধ্যেই আমি রূঢ়ভাষী কদাকার চেহারা ঠানদিটিকে ভালবাসিয়া ফেলিয়াছি। را به سمتیسد: ) می دا আমার নীরবতাকে লক্ষ্য করিয়া ঠানদি পুনরায় কথা কতিয়া উঠেন, আচ্ছা তুই-ই বল বিশু, ওদের কি চোখ নেই রে, এই ত কয়েকটা বছর আগে রাঙা চেলী পরে পান্ধী ক'রে শ্বশুরঘর করতে গিয়েছিলাম। কে ফিরে আসত বাপু ! নিজের চেহারা করলে বেষ্টমানী, তা দুষব কা'কে ! এই চেষ্টার নিয়ে কখন পুরুষমান্তষ ঘর করে ! ঠানদি তার দস্তঙ্গীন মুপে খানিক করুণ হাসিলেন— র্তার বিগত দিনের অতৃপ্তির হাঙ্গকার সে-মুখে আৰ্ত্তনাদ করিয়া ফিরিতে লাগিল । ঠানদির জীবনের এই ইতিবুন্তু আমি এরই মধ্যে অবগত হষ্টয়াছি । তার কুৎসিত চেহারা বাপের অগাধ পয়সাও চাপা দিতে পারে নাই—বিবাহের অনতিকাল মধ্যেই ঠানদিকে তার বাপের কাছে ফিরিয়া আসিতে হইয়াছে। তার বাল্য-ভতিহাস৪ বৃদ্ধমহলে আলোচিত হইতে শোনা যায়। সুপারির খোলায় ঠোঙা তৈয়ারী করিয়া কবে লালমোহনদের র্কাচামিঠা আমগাছতলায় মধ্যরাত্রে গিয়া উপস্থিত হুষ্টয়াছিলেন, কবে খ্যাম গুপ্তের ছোট ছেলেট সন্ধ্যার প্রাক্কালে তাহাকে দেখিয়া বেছস হইয়া পড়িয়াছিল এ-কথা শুনিয়া শুনিয়া এত পুরান হষ্টয়া গিয়াছে যে উহার পুনরাবৃত্তি নিতাস্ত একঘেয়ে হইয়া উঠিয়াছে । কিন্তু আজ