পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৯৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অর্থবল থাকায়, অন্যায় প্রতিযোগিতাও কখন কখন করিয়াছে । বৰ্ত্তমানে যে নূতন আইন হইতেছে তাহার খসড়াটি আলোচনা করিলে দেথা যায়, যে, গবয়েণ্ট কয়েকটি বিষয়ে বিশেষ করিয়া মন নিয়োগ করিয়াছেন। যথা:– ১। বীমা প্রতিষ্ঠানের মূলধন ও গবন্মেন্টের নিকট গচ্ছিত অর্থের পরিমাণ । ২ । মোট তহবিলের কতটা সাক্ষাৎ ও পরোক্ষ ভাবে “গবন্মেন্টের হস্তে রক্ষিত হইবে। ৩ । বীমার এজেণ্টদিগের কমিশনের হার । ৪ । বীমার এজেণ্টদিগের লাইসেন্স। ৫ । বিদেশী প্রতিষ্ঠানগুলির সম্বন্ধে বিধান। মূলধন সম্বন্ধে নূতন আইনে যাহা দেখা যায় তাহার তাৎপৰ্য্য এই যে অতঃপর কোন বীমা-প্রতিষ্ঠান এই ব্যবসাতে আসিতে হইলে প্রচুর মূলধন না লইয়া আসিতে পারিবেন না। পূৰ্ব্বে ২৫/৩০ হাজার টাকা লইয়া এই ব্যবসাতে নামা চলিত এবং ক্রমশঃ টাকা জমা দিয়! গবন্মেন্টের নিয়ম রক্ষা করা চলিত। এখন প্রথম হইতেই ৫০ ০০০ টাকা জম দিতে হইবে এবং অতি শীঘ্র টাকা জমা করিয়া দুই লক্ষ টাকা পূর্ণ করিতে হইবে । ভারতীয় বীমার ইতিহাস চর্চা করিলে দেখা যায় যে বহু বিরাট প্রতিষ্ঠান কৰ্ম্মীদের পরিশ্রমে ধীরে ধীরে গড়িয়া উঠিয়াছে। অধিক মূলধন থাকিলেই যে কোন ব্যবসায়ী অধিক ন্যায়বান হইবেন এ কথা বলে চলে না। ব্যবসাতে সততা ও কৰ্ম্মকুশলতাই প্রধান জিনিষ। বিরাট মূলধন থাকিলেও যে বহু ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীগণ জনসাধারণকে প্রবঞ্চনা করেন তাহার উদাহরণ দুলভ নহে। ভারতীয় বীমা ব্যবসায় শিক্ষিত সম্প্রদায়ের পরিশ্রম ও আদর্শবাদের নিদর্শন। এই ব্যবসাতে যদিও বর্তমানে বণিক-সম্প্রদায়ের আবির্ভাব হইয়াছে, তথাপি প্রধানতঃ শিক্ষিত মধ্যবিত্ত লোকেরাই এই ব্যবসাটি গড়িয়া তুলিয়াছেন। আজ প্রায় পঞ্চাশ বৎসর ধরিয়া অল্পধনীলোকের যে-প্রতিষ্ঠান প্রাণপাত করিয়া স্বপ্রতিষ্ঠিত করিয়াছেন সেই ব্যবসাতেই অকস্মাৎ বিরাট মূলধনকে জয়যুক্ত করিয়া দেবতার স্থানে বসাইবার চেষ্টা বিশেষ লজ্জার কথা । অন্যায় কথাও । কারণ এখন বহুসংখ্যক ছোট ছোট বীমা-প্রতিষ্ঠান নিজ নিজ কাৰ্য্য উত্তমরূপে চালাইয়া ধীরে ধীরে উন্নতির পথে অগ্রসর হইতেছেন। নূতন আইনে এই সকল প্রতিষ্ঠানের বিশেষ ক্ষতি হইবে এবং সম্পূর্ণরূপে সৎ ও কৰ্ম্মকুশল বহু ব্যবসায়ী, শুধু স্বল্প মূলধন অপরাধে উৎপীড়িত হইবেন। বীমপ্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে ইতিহাসে যেগুলি নষ্ট হইয়াছে বলিয়া দেখা যায় তাহাদের মধ্যে অধিকসংখ্যকই যে মূলধনের অভাবে নষ্ট হইয়াছে, এ-কথা আমরা অস্বীকার করি। নিৰ্ব্ব দ্বিতা ও প্রবঞ্চন-চেষ্টা এবং কোন কোন ক্ষেত্রে দুর্ভাগ্যবশতই বীমা-প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি প্রধানত হইতে পারে। গবষ্মেন্টের আইনে এই যে এককালীন অধিক মূলধন রিসার্ভ ব্যাঙ্কে গচ্ছিত রাখা অথবা সরকারী সিকিউরিটি ক্রয় করার ব্যবস্থা হইতেছে ইহার উদ্দেশু যদি বীম! ব্যবসায়ী অথবা বীমণকারীর স্বার্থরক্ষা হয় তাহা হইলে এই চেষ্টা ইতিহাস ও সুবিবেচনা বিরুদ্ধ। কারণ যে ব্যবসায় মূলত সমবায়-জাতীয় তাহার পরিণতি মূলধনের উপর নির্ভর করে ন}—করে সততা ও কৰ্ম্মকৌশলের উপর । দ্বিতীয়ত গবন্মেণ্ট চাহিভেছেন যে অতঃপর সকল বীমা-প্রতিষ্ঠান নিজ নিজ মোট তহবিলের এক-তৃতীয়াংশ সরকারী সিকিউরিটিতে মজুদ রাখিবেন । যে কোন ব্যাবসাতে তহবিল-সংরক্ষণ-নীতি চারিটি বিষয় বিচার করিয়া করা হয় । ১। নিরাপদে ও নষ্ট হইবার আশঙ্কা বর্জিত ভাবে সংরক্ষণ ২। মূল্য বৃদ্ধি ও হ্রাসের আশঙ্কা বর্জিত ভাবে সংরক্ষণ ৩ । ইচ্ছামত নগদে পরিণত করিবার সুবিধা 8 ! आंध्र সরকারী সিকিউরিটি নিরাপদ সন্দেহ নাই। তাহ ইচ্ছামত নগদে পরিণতও করা যায়। কিন্তু তাহার মূল্য হ্রাস-বৃদ্ধি ক্রমাগতই হইয়া থাকে। আজ ১৯০২ শত টাকা এই সিকিউরিটিতে ন্যস্ত করিলে এক বৎসর পরে তাহ নগদে মাত্র ৯০২ দাড়াইতে পারে। স্বতরাং যে অর্থ কোনন-কোন সময় শতকরা এক শত টাকা হারে অপরকে ফিরাইয়া দিতে হুইবে তাহার এক-তৃতীয়াংশ সরকারী