পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৯৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

බ්ථක প্রবাসী ●N●8N○ ঈৰ্য্যাম্বেষ কেমন করিয়া যাইবে ? যোগ্যতা-অযোগ্যতানির্বিশেষে সম্প্রদায় অনুসারে চাকরি ভাগ যে-যে সরকারী প্রতিজ্ঞাপত্ৰ ( Resolution ) দ্বারা করা হইয়াছে, তাহা তিনি রদ করিতে পারিবেন কি ? নতুবা সাম্প্রদায়িক ঈৰ্য্যাম্বেষ কেমন করিয়া যাইবে ? বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিব্যবস্থাতে পৰ্যন্ত যে সাম্প্রদায়িকতা চুকিয়াছে, তাহার প্রতিকার তিনি করিতে পারিবেন কি ? নতুবা সাম্প্রদায়িকত সমূলে নষ্ট কি প্রকারে হইবে ? ব্রিটিশ পালেমেণ্টের সাম্প্রদায়িকতাপরিপোষক পক্ষপাতদুই আইনের কৃপায় যাহার। কিঞ্চিৎ উচ্চপদ পাইবেন, তাহার করিবেন সাম্প্রদায়িকতার মূল উচ্ছেদ । ব্ৰহ্মদেশের ডাকনাশুল বৃদ্ধি ব্ৰহ্মদেশ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অন্তর্গত হইবার পর এ পর্য্যস্ত ভারতবর্ষ ও সেই দেশের মধ্যে চিঠিপত্রের ডাকমাশুল ভারতবর্ষের যে-কোন অংশের সমান ছিল। আগামী ১লা এপ্রিল হইতে ব্ৰহ্মদেশ হইতে ভারতবর্ষে এবং ভারতবর্ষ হইতে ব্ৰহ্মদেশে চিঠিপত্র পাঠাইতে হইলে ইংলণ্ডে চিঠিপত্র পাঠাইবার মত অধিক ডাকমাণ্ডল দিতে হইবে। যথা, এখন ভারতবর্ষ হইতে ব্রহ্মে ও ব্রহ্মদেশ হইতে ভারতবর্ষে পোষ্টকার্ড পাঠাইবার খরচ তিন পয়সা। ১লা এপ্রিল হইতে তাহা হইবে দুই আন— আড়াই গুণেরও বেশী। ব্রন্ধের ডাক-বিভাগে বাধিক ১৬ লাখ টাকা লোকসান হয়। সেই ক্ষতি পুরণের জন্যই নাকি ডাকমাশুল বাড়ান হইতেছে। পরচিত্ত অন্ধকার, স্বতরাং সত্য সত্যই কি উদ্দেশ্যে ইহা করা হইতেছে জানি না। কিন্তু ইহার একটা ফল এই হইবে, যে, ব্রহ্মে ও ভারতবর্ষে বাহ বাণিজ্যের অন্ধবিধা হইবে, এবং মানসিক বাণিজ্য, যাহাকে sits of so wintarista (cultural intercourse ) of হয় ও যাহা বাড়াইতে লর্ড লিনলিথগো রেজুনে উপদেশ দিয়াছিলেন, কমিবে । ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদীরা প্রন্ধে ভারতীয়দের স্ববিধা ও প্রভাব কমাইবার নিমিত্ত এবং আপনাদের স্থবিধা বাড়াইবার নিমিত্ত ব্ৰহ্মকে ভারতবর্ষ হইতে বিচ্ছিন্ন করিয়াছেনতাকমণ্ডল বৃদ্ধির সহিত তাদের নীতিগ্রসঙ্গতি আছে। সিংহল ভারত-গবন্মেন্টের অধীন নহে, এবং তাহা ভারভেব অধিকাংশ স্থান হইতে ব্ৰহ্ম অপেক্ষাও দূরে। অথচ সেখানকার ডাকমাগুল পূৰ্ব্বাপর এবং এখনও ভারতবর্ষেণ সমান । হাবড়ার নূতন পুলের জন্য কলিকাতায় করবৃদ্ধি কলিকাতা ও হাবড়ার মধ্যে হইবে নূতন পুল। তাঁহাতে স্বলি : হইবে ভারতবর্ষের সব প্রদেশের এবং বিদেশের বণিকদেরও, কিন্তু তাহ নিৰ্ম্মাণ করিবার জন্য যে টাকা ব্যয় হইবে, তাহা তুলিবার জন্য ট্যাক্স দিতে হইবে কলিকাতাকে। শুধু তাই নয়, এই ট্যাক্সটি আদায় করিয়া দিতে হইবে কলিকাতা মিউনিসিপালিটিকে—ভারত-গবন্মেণ্ট ইহা নিজের লোক দিয়া আদায় করিবেন না, বাংলা-গবন্মেণ্টও করিবেন না। তাই কলিকাতা মিউনিসিপালিটির প্রধান কৰ্ম্মকর্তা উহার ১৯৩৭-৩৮ সালের বজেটের ব্যাখ্যা করিতে উঠিয়া এই আশা প্রকাশ করেন, যে, গবষ্মেন্ট অন্ততঃ এই ট্যাক্স আদায়ের খরচাটা যেন মিউনিসিপালিটিকে দেন। এই ট্যাক্সটির সম্পূর্ণ সৌন্দৰ্য্যটি উপলব্ধি ও সম্ভোগ করিতে হইলে ইহা স্মরণ কfরতে হইবে, যে, হাবড়ার নূতন পুল নিৰ্ম্মাণের বড় ঠিকাটা ভারতবাসী, বাঙালী, বা কলিকাতাবাসী পায় নাই এবং ছোট ছোট ঠিকাগুলিও কলিকাতার বাঙালী বা বঙ্গের মফস্বলের বাঙালী পায় নাই। র্যাহারা কলিকাতার লোকদিগকে কেবল ট্যাক্স দিবার স্বমহান অধিকার দিয়াছেন, তাহারা তাহাদিগকে গীতোক্ত নিষ্কাম কর্মের অনুষ্ঠান করিবার স্থযোগ দিয়া ধন্যবাদভাজন হইয়াছেন। দুঃখের বিষয়, এত বড় এই যে ধৰ্ম্মোপদেশ, সে বিষয়ে গত মাসের সর্বধৰ্ম্মসম্মেলনে কেহ কোন ব্যাখ্যান পাঠ করিলেন না। কেহ তাহা করিলে, জগতের চারি দিকৃ হইতে আগত ধৰ্ম্মাপিপার ব্যক্তিগণ বুঝিয়া যাইতেন, এদেশ প্রাচীন হইলেও এখানে ধৰ্ম্ম এখনও জরাগ্রস্ত হন নাই—বুঝিয়া যাইতেন, “ব্রিটিশ-শাসিত ভারত ভিতরে কেন সবে আজি বলিছে জয় ।”