পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

N○8い” প্রবাসী SNSBNS নিজের খিড়কির দরজা দিয়া চুপি চুপি চোরের মত চালিয়ে এলুম—তুমি একলা আছ। প্রথমটা আমাকেও ত বাহির হইয়া গেলাম । অভিনয় করিতে হুইবে । 碌 碌 纖 কিছু খাবে নাকি ? দুধ মিষ্টি ঢাকা দিয়ে রেখেছি।’ কেঁচো খুঁড়িতে সাপ বাহির হইয়া পড়িল। কিন্তু তবু, চিরদিন অন্ধের মত প্রতারিত হওয়ার চেয়ে এ ভাল । প্রমীলার চুম্বন আমার অধরে পোড়া ঘায়ের মত জলিতেছিল, তাহার কথাগুল বুকের মধ্যে কাটিয়া কাটিয়া বসিয়া গিয়াছিল। ইহজন্মে আমাদের মধ্যে সব সম্পর্ক ঘুচে গেছে—’ কিরূপ সম্পর্কের ইঙ্গিত এই কথাগুলার মধ্যে রহিয়াছে ? বাসতুম—এখনও ভালবাসি’—আমার সঙ্গে তবে এই তিন বৎসর ধরিয়া কেবল অভিনয় চলিয়াছে ! ‘আমি তোমারই, আর কারুর নয়’—হ, স্বামী শুধু বিলাসের সামগ্ৰী জোগাইবার যন্ত্র! উঃ! এই নারী ! আধুনিক শিক্ষিত নারী ! বন্ধুর গৃহে ফিরিলে বন্ধু জিজ্ঞাসা করিলেন, “কি হ’ল ? বিদুষী বেী সন্ন্যাসীঠাকুরকে কি রকম অভ্যর্থনা করলে ? মুখের ছাই ধুইতে ধুইতে বলিলাম, ভাগ । ‘দাতকপাটি লেগেছিল ?” মনে মনে বলিলাম, লেগেছিল আমার ।" স্থির করিলাম, নাটুকে কাও ছোরাছরি আমার জন্য নয়। প্রমীলা কতখানি ছলনা করিতে পারে আজ দেখিব ; তার পর তাহার সমস্ত প্রতারণা উদঘাটিত করিয়া দিয়া বাড়ী ছাড়িয়া চলিয়া আসিব । ভদ্রলোক ইহার বেশী জার কি করিতে পারে ? ইহার পরও যদি প্রমীলা তাহার আধুনিক কালচারের দর্প লইয়া বাঁচি থাকিতে পারে ত পারুক। রোহিণী-গোবিন্দলালের থিয়েটারি অভিনয় করিয়া আমি নিজেকে কলঙ্কিত করিব না। বাড়ী গিয়া দ্বারের কড়া নাড়িলাম। প্রমীলা আসিয়া দ্বার খুলিয়া দিল। দেখিলাম, তাহার মুখ প্রশাস্ত, চোখের দৃষ্টিতে গোপন অপরাধের চিহ্ন মাত্র নাই। সে বলিল, ‘এরই মধ্যে ষ্টেশন থেকে এলে কি ক'রে ? এই ত পাচ মিনিট হ'ল ট্রেন এল, আওয়াজ শুনতে পেলুম।" জুতা জামা খুলিতে খুলিতে বলিলাম, তাড়াতাড়ি পা ‘না— খেয়ে এসেছি।’ টেবিলের উপর আলোটা বাড়াইয়৷ দিয়া চেয়ারে বসিলাম । ‘শোবে না ? অালো বাড়িয়ে দিলে যে । আমার সমস্ত ইন্দ্রিয় তাহার কণ্ঠস্বরে, মুখের ভঙ্গিমায়, দেহের সঞ্চালনে, কোন একটা নির্দেশক চিহ্ন খুজিতেছিল । কিন্তু আশ্চৰ্য্য তাহার অভিনয়, চক্ষের পলকপাতে তাহার মনের কথা ধরা গেল না ---এমনি করিয়াই এত দিন অন্ধ করিয়া রাখিয়াছে । উঃ– বলিলাম, ‘আলো বাড়িয়ে দিলুম তোমার মুখ ভাল করে দেখব বলে |’ সে গ্রীবাভঙ্গী সহকারে হাসিয়া বলিল, ‘কেন, আমার মুখ এই প্রথম দেথছ নাকি ? বলিলাম, না। কিন্তু মুখ কি ইচ্ছে করলেই দেখা যায়! আমার মুখ তুমি দেখতে পেয়েছ ? ‘পেয়েছি। এত রাত্রে আর হেঁয়ালি করতে হবে ন!— গুয়ে পড়।—আমি আসছি । পাশের ঘরে গিয়া অতি শীঘ্ৰ বেশ পরিবর্তন করিয়া সে ফিরিয়া আসিল । এখনও শোও নি ? শীতও করে না বুঝি ! আমি বাপু ছেলেমামুস, আর দাড়াতে পারব না।" একটু হাসিল । তার পর আমার হাত ধরিয়া টানিয়া বলিল, “ওগো এস, শুয়ে পড়ি । এত ঘনিষ্ঠ, এত অস্তরঙ্গ এই কথা কয়টি, যে আমার হঠাৎ ধোক লাগিল--আগাগোড়া একটা দুঃস্বপ্ন নয় ত ? ‘প্রমীলা ! শঙ্কিত চক্ষে চাহিয়া সে বলিল, “কি গা ! আত্মসম্বরণ করিয়া বলিলাম, ন, কিছু নয়। পড়াই যাক, রাত হয়েছে।’ শয়ন করিবার পর কিয়ংকাল দু-জনেই চুপ করিয়া রহিলাম। পাশাপাশি গুইয়া দুই জন মানুষের মধ্যে কতখানি লুকোচুরি চলিতে পারে ভাবিলে আশ্চৰ্য্য হইতে क्षु । শুয়ে