পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আশষণঢ় নিষিদ্ধ দেশে সওয়া বৎসর 88ご পিনে যতই প্রবল ও সংখ্যাগরিষ্ঠ হউক না কেন, তত দিন উহাদের পরাজয় সম্ভব নয়। বুদ্ধদেবের এই সাতটি সৰ্বই সপ্ত “অপরিহানিধম।” বসঢ়ি এবং আশপাশের গ্রামে জথরিয়া ( ভূমিহার ) জাতিই অধিকতর প্রভাবশালী । আজকাল ত ইহার ষোল আন ব্রাহ্মণ, যদিও একদিন ‘জথরিয়া পুত্র’ ( জ্ঞাতি-পুত্র ) বৰ্দ্ধমান মহাবীর এই ব্রাহ্মণদেরই ভিক্ষুক জাতি এবং তীর্থঙ্করউৎপাদনের অনুপযুক্ত বলিয়া হীনশ্রেণীভূক্ত করিয়াছিলেন । বসাঢ়ে একদিন এক বৃদ্ধ জুথরিয়াকে বলিলাম, “আপনার ব্রাহ্মণ নহেন, আপনার ক্ষত্রিয়’, তাহাতে তিনি তৎক্ষণাৎ নিমসার হইতে আগত ছেবরংডিহের অধিবাসী তাহার ব্রাহ্মণ পূৰ্ব্বপুরুষের কাহিনী শুনাইলেন । তাহার নিকট সমৃদ্ধ, প্রতিভাশালী, স্বাধীন জ্ঞাতু-জাতির বীর-রক্তের সমাদর ততটা ছিল না, যতট ছিল এক ধনহীন, বলহীন, মুখ মিথ্যাভিমানী, কূপমণ্ডক জাতির পয্যায়ভুক্ত হওয়ার । অথচ এখনও রক্তে বই প্রভাবে প্রতিবেশী জাতিদের মধ্যে ইহাদের সম্বন্ধে প্রবাদবাক্য প্রচলিত আছে, সব জাত মে বুর্বক জথরিয়া মারৈ লাঠী জিনৈ চদরিয়া । এই নিৰ্ব্বোধের কথা আর কেন বলি, জুথরিয়-বংশোদ্ভব ১াশক্ষিত মৌলানা শফী দাউদৗহ কি নিজকুলের মহত্ব বুঝেন ? বৈশালী হইতে মজঃফরপুরে ফিরিলাম। সেখানকার কংগ্রেস-নায়ক জনকবাৰু পূৰ্ব্বেই বৌদ্ধধৰ্ম্ম বিষয়ে ব্যাখ্যানের প্রতিশ্রুতি আদায় করিয়াছিলেন, এক “জ্ঞাতু-পুত্বের” সভপুতিত্বে তাহ রক্ষা করিলাম। পরে দেবরিয়ার পথে কুশীনাব । কসিয়া ) যায় করিলাম। দুই-তিন বৎসর পরে পুনৰ্ব্বার কুশীনার দর্শন হইল । সৌভাগ্য এই যে, এত দিনে দেশের লোকে আত্মপরিচয় পাংতেছে, তাই আজ মহাপরিনির্বাণ-স্তুপ মেরামত হইয়াছে । দশ বৎসর পূৰ্ব্বে পদব্রজে এই পথে আসিবার সময় এক গৃহস্থ বলিয়াছিলেন, “কি হে বাপু, বৰ্ম্ম দেশের ( ) দেবতার গন্ধ পেয়ে এসেছ ?" বুদ্ধদেবের নাম বা কসিয়ার সঙ্গে তাহার সম্পর্কের কথা কেইষ্ট জানিত না, জানিত শুধু যে বৰ্ম্ম হইতে আগত স্থবির মহাবীর ঐস্থানে আশ্রম স্থাপন করিয়াছেন । স্থবির মহাবীরের আসল পরিচয় অল্প লোকেই জানে। যাহারা জানেন র্তাহারাও সকলে নিঃসন্দেহ নহেন। সিপাহীবিদ্রোহে বিহারের প্রসিদ্ধ কুবরসিংহ বীরত্বের সহিত লড়িয়াছিলেন। র্তাহার পরাজয়ের পর তাহারই এক স্বালক ইংরেজের প্রতিহিংস হইতে রক্ষা পাইবার জন্য ব্রহ্মদেশে ছদ্মবেশে ছিলেন । সেখানে বৌদ্ধধৰ্ম্ম অধ্যয়ন করিয়া ভিক্ষু ভাবে বহুকাল যাপন করিয়া স্থবির অবস্থায় কসিয়ায় আসেন । এই স্থবির মহাবীরের আশ্রম স্থাপনের ফলেই এত দিন পরে লোকে “বৰ্ম্ম দেশের দেবতা”র প্রকৃত পরিচয় পাইয়াছে এবং হাজার হাজার নরনারী তথাগতের অস্তিম লীলা সংবরণ স্থানকে পরম শ্রদ্ধার সহিত ফুলমালায় সাজাইতেছে। মূর্তির সম্মুখে বসিয়া মনে হইল - ২৪১২ বৎসর পূৰ্ব্বে বৈশাখী পূর্ণিমার প্রাতে এই স্থানেই যুগল শালবৃক্ষের মধ্যে এই ভাবেই উত্তরে শির দক্ষিণে পদ ও পশ্চিমে মুখ রাখিয় শায়িত অবস্থায়, সহস্ৰ সহস্ৰ অশ্রমুখ জনতার পরিবেষ্টনীর মধ্যে, “যাহা হৃষ্ট সবই নশ্বর” এই কথা বলিয়াই লোক-জ্যোতি চিরদিনের মত নিৰ্ব্বাপিত হইয়াছিল। কুশীনারায় দু-চার দিন বিশ্রাম করিলাম। পরে লুম্বিনী দর্শনের ইচ্ছায় গোরখপুর হইয়া নেীতনরা গেলাম। শুনিলাম লুম্বিনী এখান হইতে পাচ ক্রোশ। সেখানে টাটুতে চড়িয়া যাওয়াই প্রশস্ত। কিন্তু যাহাকে হিমালয়ের দুর্গম পথে বহু শত ক্রোশ পার হইতে হইবে তাহার টাটুর প্রয়োজন কিসে? সকালে মিঠাইয়ের দোকানে দেহের পাথেয় সংগ্ৰহ করিলাম এবং পথ জিজ্ঞাসা করিতে করিতে শাক্য ও কোfলয় দিগের সীমানার রোহিণী ইত্যাদি অনেক নদীনালা পার হইয়। চলিলাম । দশ বৎসর পরে পুনৰ্ব্বার লুম্বিনীতে আসিয়া অনেক নূতন ঞ্জিনিয় দেখিলাম। কৃপ ও মণির মেরামত হইয়ছে, ছোট ধৰ্ম্মশালাও নিৰ্ম্মিত হইয়াছে। কঁকরহব পৰ্য্যস্ত পথও প্রায় 2gয়ার শেষ। এ সকলই নেপাল-নরেশ চন্দ্ৰসমসের-জলের নেদেশে হইয়াছে । তাহার ইচ্ছা ছিল "রমিনদেই"কে পুনরায় , ইং ১৯২৯ সালের হিসাবে লিখিত বুদ্ধ শাক্য-বংশোদ্ভব ছিলেন। ট্রহীয় মাত প্রতিবেশী কালিয়..... , এই দুই বংশের আদি দেশের মধ্যের সীমারোহিণী নদী।