পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

'ఫ్రెల আলোকে উজ্জল, কিন্তু নানা রঙে আঁকা কাচের মধ্য ! একটু আলো সালামাঙ্কার প্রাচীন বিরাটু গীর্জার মর্শ্বর-স্তম্ভের অন্তরালে ক্ৰশের উপর মূচ্ছিত হয়ে রয়েছে। এই গীর্জায় মূরীয়, বাইজেণ্টাইন ও গথিক—তিন রকম শিল্পধারারই যে অতুলনীয় সমাবেশ ও ক্রমবিকাশের উদাহরণ রয়েছে তা থেকে আমার দৃষ্টি অন্ত দিকে আসতে বাধা হ'ল। আমি বিশ্বাৰিত হয়ে আপাদমস্তক কালে দেখছিলাম ও মৰ্ম্মে মর্শ্বে উপলব্ধি করছিলাম যে খ্ৰীষ্টধৰ্ম্ম পাশ্চাত্যকে প্রাচ্যের দান। এই দৃপ্ত ত এত দিনেও ইউরোপে ধৰ্ম্মমন্দির ছাড়া আর কোথাও দেখলাম না। এ যেন আমাদের অতি-চেন, এর সঙ্গে অন্তরের পরিচয় আছে। যে ভূমিখণ্ডে এই পূজারী রয়েছে সে যেন ইউরোপের মধ্যে প্রাচ্যের এক টুকরা। প্রতীচ্যের অন্ধ গতিবেগ, সান্ত ও ক্ষণস্থায়ীর প্রতি অনুরাগকে খ্ৰীষ্টধর্মের প্রভাবই প্রাচ্যের স্বভাবস্থলভ ধ্যানের স্থিতিশীলতা দিয়ে সংহত ক’রে রেখেছে ; চিত্তবিক্ষেপ থেকে সমাধি, বিষয় থেকে আদর্শ, আত্মবিশ্বরণ থেকে মননে ফিরিয়ে এনেছে । সালামাঙ্কা প্রাচীন স্পেনের একটি অক্ষুণ্ণ পরিপূর্ণ চিত্র। সৌভাগ্যক্রমে বর্তমানের কালোপযোগী করে তুলবার প্রয়াস এই শহরটির মাধুর্য্য নষ্ট করে দেবার চেষ্টা করে নি। ষে-যুগে গ্যালিলিওর আবিষ্কার ইউরোপের আর কোথাও স্বীকৃত না হ’লেও এখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ে সে-বিষয়ে বক্তৃতা শুনতে বা কলম্বসের অদ্ভূত নূতন আবিষ্কারের কাহিনী শুনতে দশ হাজার ছাত্র আঁকাবাকা গলিপথ দিয়ে যাতায়াত করত, সে-যুগ এখনও এখান থেকে একেবারে চলে স্বায় নি । oroorg (Casa de las Conchas) «forñ qcar প্রথার শ্রেষ্ঠ নিদর্শন কারুকার্য্যের উপর বিংশ শতাব্দীর কোন ছাপ এখনও পড়ে নি। মধ্যযুগের রঙীন চামড়ার সৌখীন হাতের কাজের শিল্পে সালামাঙ্ক বর্তমান ভেনিসের চেয়ে বড় ছিল। কলেজের ছাত্ররা এখনও তাদের বই এই চামড়ার ক্ষপ্ত আবরণে ঢেকে রাখে। এখনও পচিশটি কলেজের ও বাটটি মঠের সম্পদ হচ্ছে তাদের যত্বরক্ষিত কারুকাৰ্যখচিত প্রৰণসী ●Nご8ー পুস্তকাগারগুলি ও বিশেষতঃ ধৰ্ম্মপুস্তকের বিভাগ। একটিঃ ভিতর থেকে যেদিকেই তাকাই, বিরাট গীর্জাটিই শুধু সেপে পড়তে লাগল। সমস্ত শহর ছাড়িয়ে, তার সকল সাংসাৰি কৰ্ম্ম ও কর্তৃর্যকে ছাপিয়ে, তার সব আশা ও বিশ্বাস, প্রেরণ ও সাধনাকে মুক্তি দিয়ে দাড়িয়ে আছে এই সালামাস্কার গীর্জা । যারা বলছে যে পাশ্চাত্য জাতির ধর্মের প্রয়োজন নেই তারা ঠিক বলছে না। স্পেনে রাজা আলফন্সোর পলায়নের পর থেকেই গণতন্ত্র ক্যাথলিক ধর্শ্বকে রাজধরে পদ থেকে চু্যত করেছে, ক্যাথলিক-পরিচালিত স্কুলগুলি লোপ করে দিয়েছে, দেবোত্তর ও ধর্পোত্তর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে নিয়েছে। তার ফল আজ রাজনীতিক চাঞ্চল্য ও অশান্তির মধ্যে, নব্য স্পেনের সরকারী স্কুলে শিক্ষকের অভাবে, কৃষক ও শ্রমিক আন্দোলনে প্রকাশ পাচ্ছে । স্পেনের গীর্জায় অনেক দোষ ছিল, বৈষয়িকতা তার মধ্যে বহুপরিমাণে ছিল, যাজক হওয়া একটা লাভজনক ব্যবসায়ে পরিগণিত হয়েছিল। কিন্তু খ্ৰীষ্টধৰ্ম্ম হিম্পানীদের অস্তরে অনেকখানি স্থান অধিকার করেছিল । ধৰ্ম্ম বলতে আমি কোন পারলৌকিক মঙ্গলের অনুষ্ঠানমাত্রকেই বলছি না। ধারণাদ ধৰ্ম্ম ইত্যাহুঃ••••••য: স্যাৎ ধারণসংযুক্ত: স ধৰ্ম্ম ইতি নিশ্চয়, । কুশাসিত, বিভক্ত-প্রদেশ, স্থিররাজনীতিহীন স্পেনের বিক্ষুব্ধ, বিক্ষিপ্ত জনসাধারণের চিত্তকে ধৰ্ম্মই একপথে চালিয়ে নিয়েছিল। যে বৃন্ধকে আমার সামনে বিরাট আড়ম্বরময় প্রাচীন মন্দির উপাসনা করতে দেখেছি তার অন্তরের মধ্যে ধৰ্ম্ম একটি গোপন প্রকোষ্ঠ অধিকার ক’রে রেখেছিল। তার সেই বিরামগৃহ যখন লোপ পেয়ে যাবে, তার অন্তরের আশ্রয় আর থাকবে না, তখন সে খুব সহজেই বার্সিলোনার ছাত্র-বিপ্লবীদের পর্যায়ে চলে যাবে। 8 মঠ ও মন্দির, প্রাসাদ ও স্মৃতিসৌধ সম্পন্ন এস্কোরিয়াল’ গৃহটি স্পেন ও ক্যাথলিক ধৰ্ম্মকে যা-কিছু গঠন ক’রে রেখেছে কালের দ্বারা অস্পৃষ্ট তারই কয়েকটি স্মরণচিহ্ন বহন করে দাড়িয়ে আছে। এ-হিসাবে এস্কোরিয়ালের স্থান দিল্লী বা ফতেপুর সিক্রির উপরে। এই জায়গাটি দিল্লীর মতই একটি বিলুপ্ত যুগের মূক প্রহরী। তার প্রাসাদ আছে, প্রহর