পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ربع میبسون প্রবাসী たNご8Nシ এই খানেই অবসান। গ্রামটি ছোট কিন্তু অত্যন্ত সুসজ্জিত, একেবারে ছবির মত। পাঠকের বুঝতে বাকী নেই যে এইটি শচীন্দ্রের পরিকল্পিত সেই নারী-প্রতিষ্ঠান। আয়তন হিসাবে এখানকার জনসংখ্যা অল্পই। দরিদ্র ভদ্ৰগৃহস্থের কৰ্ম্মক্ষম বিধবাদের জন্য এই আয়োজন। ‘কোসঃ পাচ বৎসরের এবং এই পাচ বৎসরের মধ্যে এদের বাইরে যাবার নিয়ম নেই। প্রায় এক-শ ছাত্রীর এখানে থাকবার ব্যবস্থা আছে। দুটি করে ঘরওয়াল পঞ্চাশটি কুটীরের স্থান এখানে নির্দিষ্ট । শচীন্দ্রের বিপুল অর্থ এবং পাৰ্ব্বতীর অক্লান্ত পরিশ্রমে অত্যন্ত অল্প সময়ের মধ্যেই এই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে উঠতে পেরেছিল। ՀԵ তিন বৎসর অতীত হ’য়ে গেছে। পাৰ্ব্বতীর নাম এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বাংলাদেশময় ছড়িয়ে পড়েছে অথচ প্রতিষ্ঠাতার নাম প্রায় কেউই জানে না। সমস্ত কাজই পাৰ্ব্বতীর নামে চলে । একদা পাৰ্ব্বতী প্রতিষ্ঠানের অফিস ঘরে বসে কাজ করছে এমন সময় একটি মেয়ে এসে একটি নূতন ছাত্রীর আগমনবার্তা জানাল ! পাৰ্ব্বতী উঠে ঘাটের দিকে গেল এবং লঞ্চে গিয়ে তার অভিভাবকের সঙ্গে দেখা করলে । ভদ্রলোকটি বৃদ্ধ। পাৰ্ব্বতী নমস্কার ক'রে ভদ্রলোক ও মেয়েটিকে নিয়ে নেমে এল। এই রকম লোক এসে কয়েক ঘণ্ট নেত্রীর বাড়ীতে অতিথি হ’ত । আহারের পর পাৰ্ব্বতী বললে, “আপনাকে বিকেলের লঞ্চে ফিরে যেতে হবে। আপনি ইচ্ছে করলে আমাদের গ্রাম দেখে যেতে পারেন।” “বেশ, আমিও ভাবছিলাম আপনাকে বলব। ত, চলুন।" “চুতোর ঘর” “র্তাত ঘর”, “শেলাই ঘর", “ছবি ঘর” প্রভৃতি নানা শিল্পের ব্যবস্থা দেখতে দেখতে তারা পাঠগৃহে এসে পৌছলেন। তাদের আগমনে গৃহে কাজের কোন বিরতি বা শৈথিল্য দেখা গেল না । ভালোক একটু অবাক হয়ে বললেন, “কই, আপনাকে দেখে এরা দাড়ালো না ত?” “দাড়াবে কেন ?" “সন্মান করবে না আপনাকে ?” “সন্মানই ত করছে। আমি যে কাজ দিয়েছি সেট তারা মন দিয়ে করছে এইটাই ও সম্মান ।” ভদ্রলোক একটু অবাক হ’য়ে চুপ করলেন। প্রত্যেক ঘরে শিক্ষক তাদের কোন-না-কোন বিষয়ে কিছু বলছেন । মেয়েদের কারুর কাছে বই নেই—কেউ পড়া দিচ্ছে না, কেউ পড়া নিচ্ছে ন—শুধু শুনছে আর মাঝে মাঝে প্রশ্ন করছে । ভদ্রলোক আবার জিজ্ঞাসা করলেন, “এদের বই নেই ?” יין וף." “তবে ওরা কি পড়ে ?” "ওরা ত পড়ে না, ওরা শোনে—বার-বার ক'রে বল। হয় আর ওরা বার-বার ক’রে শোনে। তারপর রাত্রিতে গিয়ে সেগুলি নিজেদের মত ক'রে লিখে রাখে। “পরীক্ষা কবে হয় ?” “পরীক্ষা ত হয় না।” “হয় না ?—তবে শেখে কি করে বোঝেন ?" “শেথেই । না বুঝলে আবার জিজ্ঞেস করে আবার শোনে। নইলে লিখে রাখবে কি ক’রে ? লিখতেই হয়। সেইটাই ওদের নিজেদের পরথ ।" বৃদ্ধের মনে বোধ হয় একটু খটকা বোধ হ’ল। পাৰ্ব্বতী সেইটুকু অম্বভব করে তিন বৎসর আছে এমন গুটি দুই মেয়েকে ডেকে বললে, “এই ভজ লোকটিকে তোমাদের গ্রাম দেখিয়ে আন”—বলে অন্যত্র চলে গেল । মেয়ে দুটি তাদের হাতের তাতের কাজ, আসবাব, সতরঞ্চি প্রভৃতি দেখানোতে তিনি খুব খুশী হলেন এবং পাৰ্ব্বতীর অনুপস্থিতিতে চক্ষুলজার হাত থেকে রেহাই পেয়ে তাদের নানা প্রশ্ন করতে লাগলেন। দেশের এবং বিদেশের র্তার নিজের জ্ঞাত এবং অজ্ঞাত বহু বিষয়ে তারা অত্যন্ত সহজ এবং স্বাভাবিকভাবে তাকে ব'লে যেতে লাগল। কোন বই না পড়িয়ে কোন পরীক্ষা না নিয়ে যে সত্যি এত সহজে এত জ্ঞাতব্য বিষয় শেখানো যায় তা দেখে তিনি আশ্চৰ্য্য হলেন । বস্তুত আর বেশী প্রশ্ন করতে তিনি দ্বিধা বোধ করছিলেন পাছে নিজের অজ্ঞতা ধরা পড়ে যায়। এদের পরিচ্ছন্নতা দেখেও তিনি কম আশ্চর্ধ্য হন নি।