পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১০৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৯৮e প্রবাসী-আশ্বিন, 'EGම්ම් [ ২৬শ ভাগ, ১ম খণ্ড দেখিল তাহারই পাশে নতজামু হইয়া তাহার প্রেমাস্পদ– তাহার ওষ্ঠ মৃত্তিক চুম্বন করিতেছে। মুখ তুলিয়৷ চাহিবার সাহস ডেভিডের ছিল না, কিন্তু তাহার যে অদৃশু স্পর্শহীন হাতখানি তাহার হাতে আলিঙ্গনবদ্ধ ছিল—তাহার দ্বারাই তাহার প্রেম, তাহার কৃতজ্ঞতা এবং তাহার অস্তরের নিবিড় প্রীতি ব্যক্ত হইতেছিল । রোগিনীর মুখ অপূৰ্ব্ব আনন্দে উদ্ভাসিত হইয়া উঠিল ; সে তাহার মা ও বন্ধুদ্বয়ের দিকে দৃষ্টি ফিরাইল ; এতক্ষণ তাহাদিগের কাছে সে একটিও বিদায়ের কথা বলিবার অবসর পায় নাই; তাহার এই দৃষ্টি যেন তাহার এই অপূৰ্ব্ব ভাগ্য-পরিবর্তনের আনন্দে মাতার ও সর্থীদের সহানুভূতি কামনা করিতেছিল। সে মাটির দিকে হস্ত নির্দেশ করিল --তাহারা যেন তাহার মনস্কামনা পূর্ণ হইয়াছে দেখিয় তাহার অনন্দের ভাগ পাইতে পারেন, যেন তাহার দেখিতে পান যে তাহার ডেভিড. আসিয়াছে—সে তাহারই পদতলে অমৃতপ্তচিত্তে বসিয় । সেই মুহূৰ্বে কৃষ্ণাবরণাচ্ছাদিত মৃত্যুদূত তাহার দিকে ঝুঁকিয়া পড়িয়া বলিয়া উঠিল, “স্নেহের বন্দী—কারাগার ত্যাগ করিয়া আইস ।” সিসটার ঈডিথ শয্যায় এলাইয়া পড়িল—একটি গভীর দীর্ঘ-নিশ্বাসের সঙ্গে সঙ্গে তাহার প্রাণবায়ু বাহির হইয় গেল । ডেভিড হলমকেও যেন সেই মুহূৰ্ত্তে কে টানিয়া লইয়। গেল—যে অদৃশ্ব অথচ ক্লেশকর বন্ধনে সে বদ্ধ ছিল তাঙ্ক। আবার তাহার হাত দুখানিকে বধিয়া ফেলিল । তাহার পা মুক্ত রহিল। জর্জ ক্রোধজড়িত স্বরে বলিল, এই অবাধ্যতার জন্য তাঁহাকে অনন্তকাল কষ্ট ভোগ করিতে হইত, পুরাতন বন্ধুত্বের খাতিরে এবার সে তাহাকে মাপ করিল। সে বলিল,“আমার সঙ্গে এখনই চ’লে এস–এখানকার কর্তব্য শেষ হয়েছে, আমরা যাকে নিতে এসেছিলাম সে এসেছে ।” জর্জ প্রবল বলে ডেভিড কে টানিয়া লইয়া চলিল ডেভিডের মনে হইল, উজ্জ্বলকায় কাহারা যেন সেই ঘরে প্রবেশ করিল—সেন সিড়িতে তাহীদের দেখা গেল বাইরের পথেও যেন তাহারা ছিল, কিন্তু জর্জ এমনই বেগে তাহাকে লইয়। যাইতেছিল যে, সে কিছুই ঠিকমত বুঝি:ে পারিল না । ( ক্রমশঃ ) ডাহুকী শ্ৰী জীবনানন্দ দাশগুপ্ত মালঞ্চে পুপিত লতা অবনতমুখী,— নিদাঘের রৌদ্রতাপে একা সে ডাহুকী বিজন-তরুর শাথে ডাকে ধীরে ধীরে বনচ্ছায়-অন্তরালে তরল তিমিরে! —আকাশে মস্থর মেঘ, নিরালা দুপুর ! —নিস্তব্ধ পল্লীর পথে কুহকের সুর বাঞ্জিয়া উঠিছে আজ ক্ষণে ক্ষণে ক্ষণে ! —সে কোন পিপাসা কোন ব্যথা তার মনে । হারায়েছে প্রিয়েরে কি ?—অসীম আকাশে ঘুরেছে অনন্ত কাল মরীচিকা-আশে ? বাঞ্ছিত দেয়নি দেখা নিমেষের তরে — • কবে কোন রুক্ষ কাল-বৈশাখীর ঝড়ে ভেঙে গেছে নীড়, গেছে নিরুদ্দেশে ভাসি’ —নিঝুম বনের তটে বিমনা উদাসী গেয়ে যায় ; সুপ্ত পল্লী-তটিনীর তীরে ডাহুকীর প্রতিধ্বনি-ব্যথা যায় ফিরে ! —পল্লবে নিস্তব্ধ পিক,—নীরব পাপিয়া, গাহে এক নিদ্রাহারা বিরহিনী হিয়া ! আকাশে গোধুলি এল,—দিক্‌ হ’ল স্নান, ফুরায় না। তবু হায় হুতাশীর গান ! —স্তিমিত পল্লীর তটে কাদে বারবার, কোন যেন মুনিভূত রহস্তের দ্বার উন্মুক্ত হ’ল না। আর, কোন সে গোপন নিল না হৃদয়ে তুলি তার নিবেদন ।