পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\Oyo প্রবাসী—শ্রাবণ, ১৩৩৩ [ ২৬শ ভাগ, ১ম খণ্ড ( * * } মগের মুলুক “মগের মুল্লুক”—এই প্রবাদের স্বষ্টির বিবরণ নিয়ে প্রদত্ত হইল – স্ববিখ্যাত পলাশী-যুদ্ধের কিঞ্চিৎ পূৰ্ব্বে আঙ্গামূ-প্রা নামে জনৈক মগ ব্ৰহ্মদেশের একাংশে আভা-নামক স্থানে এক ক্ষুদ্র রাজ্য স্থাপিত করেন। কালক্রমে তাহার অনুচরবর্গ রেজুন, তারাকান প্রভৃতি জয় করিয়া আসামমণিপুর পর্য্যস্ত অগ্রসর হয় এবং অত্যাচার করিতে থাকে। সেই অত্যাচারে বঙ্গদেশ পর্য্যস্ত অতিষ্ঠ হইয় উঠে । বলা বাহুল্য যে, এই সময়ে আসাম-বাজ্য রাজঙ্গীন এবং গুহ-বিব:দে লিপ্ত থাকায় মগ-জাতীয় লোকের তথায় আসিয়া আধিপত্য স্থাপন করে এবং নানারূপ অত্যাচার করিতে থাকে । তাহাদের অত্যাচারে অশান্থির হুষ্টি হুইয়া দেশের অবস্থা অতীৰ শোচনীয় হইয় পড়ে। দেশে তখন এমন কোন রাজশক্তি ছিল না, যাহাতে সেই অশাস্তির অনলে শান্তিবারি সেচন করিয়া উহাকে সুশীতল করিতে পারে । মগদিগের এই অত্যাচার হইতেই “মগের মুলুক”–এই নাম প্রচলিত হইয়াছে। সেজন্তু কেহ কাহারও উপর কোন অস্তায় অত্যাচার করিলে, এই প্রবাদ-বাক্যের উল্লেখ করিয়! থাকে । বর্তমান সময়ে কোন অত্যাচারিত উপদ্রুত স্থানকেও “মগের মুলুক”—নাম দেওয়া হয় । লী রমেশচন্দ্র চক্ৰবৰ্ত্তী । মৃত্যু-দূত সেলমা লাগরলফ, চতুর্থ পরিচ্ছেদ পূৰ্ব্ব কথা সহরের বাহিরে একখানি ছোট বাড়ী ; বাড়িখানিতে দুইটি কুঠরী ; একটি একটু বড়—বেশ প্রশস্ত ; ছাদ ও অনেকখানি উচু। অন্য ঘরখানি অপেক্ষাকৃত ছোট। বড় ঘরখানি বৈঠকখানা হিসাবে ব্যবহৃত হয় ; ছোটটি শয়ন-ঘর। বড় ঘরটির মাঝখানে ছাদ হইতে ঝোলান একটি আলো জলিতেছিল। সেই মৃদু-আলোকে ঘরখানি বেশ একট, তৃপ্তি ও স্বচ্ছন্দ্যের আভাস দিতেছিল। ঘরখানির পরিচ্ছন্নতা দেখিলে আগন্তুকের মন খুলী হইয়া উঠে। স্পষ্ট বুঝা যায় যে, অধিবাসীরা গৃহখানিকে অতি যত্নে যথাসম্ভব সুন্দর করিয়া সাজাইয়াছে। সাঞ্জাইবার কৌশল ও আসবাবপত্রাদি দেখিলে মনে হয় যে একটা পুরা সংসার সেখানে বাস করে । বড় ঘরখানির দরজার পাশেই একটি ষ্টোভ ছিল ; ইহার আশেপাশে রান্না-সংক্রান্ত আসবাব রক্ষিত,যেন এইখানেই বাড়ীর রান্না-ঘর। ঘরের মাঝখানে একটি গোল টেবিল—তাহার উপরেই খাওয়া-দাওয়া হয় ; দুটি ওক" কাঠের চেয়ার ; পাশের দেওয়ালে এক অতি পুরাতন ক্লকঘড়ি ; চিনামাটির বাসন ও গেলাস প্রভৃতি রাখিবার জন্ত একটি তাক । এই স্থানটিকে বাড়ীর খাবার-ঘর বল চলে। আলোটি ঠিক গোল টেবিলটির উপরে ঝোলানো ; ঐ একটি আলোকেই ঘরের আনাচ-কানাচ পৰ্য্যন্ত আলোকিত, এমন কি ভিতরের শয়ন ঘরের মেহগিনী কাঠের সোফা, কারুকার্য্য-খচিত আন্তরণ-আচ্ছাদিত প্রসাধন টেবিল, একটি চমৎকার চিনাপাত্রে সজ্জিত পামগাছ এবং দেওয়ালের গায়ের ফোটেচিত্রগুলি পর্য্যন্ত স্পষ্ট দেখা যায় । এই বিচিত্র গৃহে যদি সত্যই কোনো একটি পরিবার বাস করিত, তাহা হইলে সেখানে অতিথি-অভ্যাগত কেই আসিলে যথেষ্ট আমোদ অনুভব করিতেন ; তাহাদিগকে ভিতরের শয়ন-ঘরে বসিতে বলিয়া একলা রাখার জন্য ক্ষমা-প্রার্থনা করিয়া গৃহস্বামিনী হয়ত রন্ধনশালায় আসিতে বাধ্য হইতেন । আহারের সময়, ষ্টোভের অতি নিকটে ভোজন-টেবিল অবস্থিত হওয়াতে গরম হাওয়া গায়ে লাগিত ; এবং একটির পর একটি ডিস শেষ হইলে কায়ন বজায় রাখিবার জন্য.বিকে ডিস তুলিয়া লইয়া যাইবা জন্য ঘণ্টা বাজাইবার কথা ভাবিয়া তাহার হাসি পাইত । কিম্বা, রান্নাঘরে যদি কোনো ছেলে কাদিয়া উঠিত, পাশের খাবার ঘরে স্বামী যাহাতে তাহা না শুনিতে পান তজ্জন্ত