পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] “ఇవి নৃপেনের ভগিনীর বাকৃপটুতা কিছু বেশী এবং ধৈর্য্য কিঞ্চিৎ কম। কাজেই সে উত্তর না পাইয়া আর এক পা আগাইয়া আসাই বেশী বুদ্ধির কাজ বলিয়া ঠিক করিল। হঠাৎ গেীরীর গল। ধরিয়া ঝুলিয়া পড়িয়া এক হাতে তাহার চিবুকট উচু করিয়া ধরিয়া সে জিজ্ঞাসা করিল, “হ্যা ভাই, দাদাকে কি তোর মনে ধরে না ? কেন সে ত বেশ দেখতে। বল না ওকে বিয়ে কবি ? আমাদের কেমন রাঙা বউ হয় তাহ’লে।” গৌরী এতক্ষণে একট। পথ পাইল । তাহার যে বিবাহ হইয়াছিল এ স্মৃতিট। তাহার মনে বেশ পরিষ্কারই জাগরুক আছে। ভালবাসিলে মানুষ যে মানুষকে বিবাহ করিতে চায়, এরকম একটা সন্দেহ আজ কয়েকদিন হইতেই আপনাআপনি তাহার মনে জাগিতেছিল ; কিন্তু সে ঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হইতে পারিতেছিল না । বাড়ীতে সে অনেকের বিবাহ দেখিয়াছে, কিন্তু সেখানে ভালবাসার কথা ত কোনো দিন শুনে নাই । কনে দেখিতে যায় আসে একদল লোক, আর বিবাহ হয় সম্পূর্ণ আলাদা আর একজনের সঙ্গে ; তারপর তাহার সঙ্গে শ্বশুরবাড়ী যাইতে মেয়েটি র্কাদিয়া হাট বসায়, এই ত তাহার অভিজ্ঞতা। এখানে ভালবাসা অপেক্ষ রাগটাই বরং বেশী- “হওয়ার কথা । তা ছাড় স্থনরিয়াও এতদিনের মধ্যে একবারও বিবাহের কথা বলে নাই। ৰলিলে গৌরী সোজা একটা উত্তর দিতে পারিত । আজ পরিষ্কার প্রশ্নটা সাম্নে দেখিয়াই সে বলিয়া বসিল, *আমার ত ভাই, অনেক দিন আগেই বিয়ে হ’য়ে গেছে । আবার দুবার কি কারুর বিয়ে হয় নাকি ?” গেীরীর উত্তরে একান্ত বিস্মিত হইয়া মেয়েটি তাহার মুখের দিকে খানিকক্ষণ চাহিয়া রহিল। তাহার পর তাহার সর্বাঙ্গে সধবার চিহ্ন কি কি আছে চোখ বুলাইয়া খুজিতে গিয়৷ দেখিল কিছুই নাই, এমন কি একজোড়া শাখাও নয়। একেবারে কুমারীর বেশ । সে হাসিয়া বলিল, “বাবা, কি দুষ্ট মেয়ে। আমাকে শুধু শুধু ভড়কে দিলে ? তোর বিয়ে হয়েছে না ছাই ক’য়েছে। তবে লোহা সিদুর পরিস নি কেন ?” বছর দুই আগে চুল বাধিবার সময় সে সিদ্ধর পরিত বটে ; কিন্তু তখন চুল বাধার ব্যাপারখানাই তাহার কাছে এমন বিরক্তিকর ছিল যে, তাহার কোন অঙ্গটার সঙ্গে বিবাহের বিশেষ যোগ আছে অত ভাবিয়া দেখিবার তাহার অবসর ছিল না। কাজেই সিঁদুর পর যে সে কবে হইতে কি কারণে ছাড়িয়া দিয়াছে তাহা তাহার মনেই পড়ে না। আর হাতের চুড়িও সে এতবার বদলাইয়াছে যে লোহা পরান-পরার দিন তাহার স্বতি হইতে সম্পূর্ণ লুপ্ত। সে বলিল, "কেন সিন্ধুর না পরলে কি হয় ? আমি এমনিই পরি না । অত আমার মনে থাকে नां ।’ মেয়েটি বলিল, “তোমার মনে থাকার উপরেই সব দাড়িয়ে আছে কি না ! সধবা মেয়ে কবে আবার লোহাসিদ্ধর পরতে ভুলে যায় শুনি ? তোমার মা তা হ’লে তোমাকে পিটিয়ে পরাত, না ? কৈ, তিনি নিজে ত পৰ্বতে ভোলেন না ! তোমাকে যেন আর পরিয়ে দিতে পারতেন না। আহ, আমার সঙ্গে চালাকি কবুলে আমি আর ধরতে পারি না, না ?” গৌরী ভাবিল, "তাও ত বটে। মার পক্ষে ভুলিয়া যাওয়াট। একটু অদ্ভুত।” জেরার স্বরে হঠাৎ মেয়েটি বলিল, “আচ্ছ, তোর বর তোকে চিঠি লেখে ? তোদের বাড়ী আসে ?” গৌরী বলিল, “আমার সঙ্গে ত তার ভারি ভাব কি না, তাই আমাকে চিঠি লিখবে ! সেই কবে ছেলেবেলা দেখেছি ; তারপর আর দেখাই হয়নি। আর আমরাও বেড়াতে বেরিয়েছি আজ দেড় বছর ; কবেইবা আসবে।” মেয়েটি বলিল, “বাব, এতও গ’ড়ে গ’ড়ে বলতে জানিস্। বিয়ে হ’লে বর নাকি আবার ভাবের অপেক্ষা রাখে ! এত দিনে চিঠি লিখে ঘর ভরিয়ে দিত, আর ঘাড়ে ধ’রে তোকে দশ বার শ্বশুরবাড়ী নিয়ে যেত । নিতান্ত না হ’লে নিজে ত পাঁচবার আসতই। তাও যদি কালে পেচা বউ হ’ত ত না হয় তোর কথা বিশ্বাস কবুতাম।” গৌরী সব বিষয়েই হারিয়া যাইতেছে দেখিয় তাহার নিজের মনেও একটু খট্কা লাগিল। সে একটু চিন্তান্বিত হইয়া পড়িল । মেয়েটি বলিল, “আচ্ছা, ওই ত তোর মা