পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরীর সামূলাও ! শ্ৰী অশোক চট্টোপাধ্যায় মানুষ নিজেকে নিজে তারিফ করে ; তা নইলে সে বঁাচ তে পারে না। অবশ্ব এ স্বভাবের জন্যে মানুষকে দেয দেওয়া যায় না ; গোড়া দুঃখবাদীদের মতে জীবনটা যা,— নিজেকে তারিফ করে মানুষ জীবনকে তার চেয়ে ত’ বড় করতে পেরেছে । তা ছাড়া এই আত্ম-প্রশংসা যখন এমন একটি আদর্শবাদের সঙ্গে সম্মিলিত হয়—যার লক্ষ্য ক্রমাগতই জীবনের কুত্র বাস্তবতা ফেলে বৃহত্তর সবার - মানসিক তেমনি শারীরিক উৎকর্যের বেলাতেও যতই অগ্রসর হওয়া যাকু না—সামনে আদর্শের অভাব হয় না। মাতুষ যে এ-ক্ষেত্রে থামে, সে নেহাৎ অস্তরের চির-অশান্ত চির-অস্থির প্রেরণাটিকে অলস দার্শনিক ‘বুক্‌নি' দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে—“কুছ হরজ, নেই, থাসা চলেছে দুনিয়া, তার সঙ্গে আমিও।” আদর্শকে কোনকালে আয়ত্ত করা যায় না বলে যেন অক্সফোর্ড—কেমৃব্রিজ, পানে,—তখন মানুষ বার-বার আপনাকে নিজের আদশের সম্মুখীন করে বিচার করে, এবং সমস্ত অক্ষমতা উপলব্ধি করে’ আদর্শ অনুযায়ী হবার জন্য সচেষ্ট হয়। নীতিশাস্ত্রে ত এমন কথা লেখে না যে, নিজেকে নিজে তারিফ, করে। না ! সহজবুদ্ধিতে এমন কথা বলে বটে—আত্মশ্লাঘা যেন মুখের মত না হয়। এ ধরণের আত্মশ্লাঘার উৎপত্তি —হয় মাতুষের নিজের সম্বন্ধে ভ্ৰান্ত ধারণা থেকে, অথবা নিজেকে বড় করবার জন্তে নিজের সাধ্যাতিরিক্ত আরও কিছু যে থাকৃতে পারে তা অস্বীকার করবার প্রবৃত্তি থেকে । মানুষ যখন নিজের সাফল্যকে যথেষ্ট মনে করে’ তাইতেই সন্তুষ্ট থাকে তখন সে আপনার অক্ষমতা নিজের কাছে গোপন রাখবার চেষ্টা করে মাত্র। যত ভাল হওয়া মানুষের পক্ষে সম্ভব তত ভাল এপৰ্য্যন্ত কেউই হ’তে পারেননি। বিশেষত শারীরিক উৎকর্ষের বেলায় একথা যেমন খাটে এমন আর কোথাও খাটে না। যেমন 〉》○ー● কেউ ম বলে,—সে-চেষ্টা করাই ভুল । আদশের পথে অগ্রসর হওয়াতেই কি এচেষ্টার চরম সার্থকতা নেই ? এই আদর্শই ত’ মাহুষকে শ্রেয় থেকে শ্রেয়তরতে নিয়ে চলেছে। মূঢ় আত্মপ্রশংসার দোষ এইখানে ধে, মানুষ তাতে আদর্শ সম্বন্ধে অন্ধ হয় এবং সমস্ত প্রেরণা হারিয়ে বদ্ধজলার মত পচে’ মরে । যুগে যুগে মাহুষ শারীরিক উৎকর্যের জন্যে সাধনা ও কামনা করেছে—এ কামনা মহৎ । এ কামনার অর্থ— দেহকে আত্মার উপযুক্ত মন্দির করে’ গড়ে তোলা । এই তপস্যা ও সাধনার দেশে মামুষের জীবনের প্রধান কথাই ছিল—উৎকৰ্ষ লাভ । এবং শারীরিক উৎকর্ষ এখানে তার যোগ্য সম্মান পেয়েছে। কিন্তু তারপর অধঃপতনের যুগে দেশের লোক সকলপ্রকার সাধনার সঙ্গে শারীরিক উৎকর্ষের জন্য সাধনাকেও অবহেলা করেছে। আজকাল কথায় কথায় আধ্যাত্মিক শক্তির কথা শুনতে পাওয়া যায়। এ শক্তি নিয়ে বড়াই যারা করে, তাদের পেছনে