পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(ՆԵ লইবার জন্ত মুখট। আবার এক চোট বির করিয়া লইয়া মুরুবিয়ান চালে বলিল, “নেহাৎ উপায় নেই তাই, নইলে বাংলা কি আর তাচ্ছিল্য করবার জো আছে স্যার ? কি রকম ফেল করছে আজকাল বাংলাতে! বরং আজ হেডপণ্ডিত মশাই আসেন নি, যদি দুটে ঘণ্টাই বাংলা হ’ত • বাঙালীর ছেলে হয়ে ..” কয়েক জন একসঙ্গে বিলাসের জামার খুঁট ধরিয়া টানিলাম। সে থামিল বটে, কিন্তু ততক্ষণে ক্ষতি যাহা হইবার হইয়া গিয়াছে। হেডমাষ্টার একটু চিন্তিত ভাবে মাথা নাড়িলেন, তাহার পর বলিলেন, “তা বলেছ ঠিক। -- তাহলে ?” আমরা সবাই শ্বাসরুদ্ধ করিয়ু৷ দাড়াইয় পড়িলাম । চিস্তিত ভাবে মাথা মাড়িতে নাড়িতে হেডমাষ্টীর হঠাৎ মাথা তুলিয়া সেকেণ্ড মাষ্টারের দিকে চাহিলেন, একটু হাসিয়া বলিলেন, “এই ত কালীবাবু রয়েছেন। কি মশাই, আপনার মতে তো ম্যাথেমেটিক্স-জান লোকের কিছু আটকধুর কথা নয়। দেখবেন নাকি একবার চেষ্ট করে ? আপনার এ-ঘণ্ট। ত ফুঃসংও আছে ।” পিছনে বিলাসের চারি ধারে দাতে দাত ঘষার একটা উৎকট আওয়াজ হইল। হেডমাষ্টার মহাশয় ঘুরিয়া চাহিতেই হরা সঙ্গে সঙ্গে মুখটা প্রসন্ন করিয়ু লইয়া বলিল, “তাহ’লে বেশ হয় স্তার ” সেকেণ্ড মাষ্টার মহাশয়ের চেহারাট বেশ মনে আছে। মোটাসোটা দীঘর্ণকুতি পুরুস। দর্প, প্রসন্নতা এবং দাড়িতে ভরা মুখমণ্ডল ; দেখিলে ভয়, শ্রদ্ধা এবং সম্বমে মাথা নত হইয়া আসে। সৰ্ব্বদাই ভাল করিয়া কাচা এবং ইঞ্জি-করা একটি কামিজ গায়ে । গলায় কেঁচোন চাদর, দুই কঁধের উপর দিয়া বুকের মাঝামাঝি আসিয়া পড়িয়ছে, তাহাতে বিশাল বক্ষটিকে আরও বিশাল রলিয়া বোধ হইত। মাষ্টার মহাশয়ের একটা অভ্যাস ছিল প্রায়ই চাদরের ক্টোচান প্রাস্ত দুইটি দুই হাতে মাঝামাঝি আনিয়া • ওtহাদের মুখ মিলাইয় আবার ছাড়িয়া দিতেন। বোধ হয় কোন দিকে বেশী কোন দিকে কম বুলিয়া थाका उिने गश् করিতে পারিতেন না। জিনিষটাকে আমরা মাষ্টার প্রৰণসী ১৩৪৪ মহাশয়ের ম্যাথেমেটিক্যাল জিম্ন্যাসটিক্স্ বা অঙ্কের কসরং বলিতাম । এই অঙ্কই ছিল তাহার দর্প। দপের মূলে ছিল দুইটি কথা । এক, তাহার নিজের শক্তির উপর প্রবল আস্থা—অবশু শক্তিও ছিল অবিসংবাদিত; আর দ্বিতীয়, শাস্ত্রটার উপর তাহার অটুট নিষ্ঠ। সেকেণ্ড মাষ্টার বলিতেন, সমস্ত স্বষ্টিট বিধাতার কষ। একটা অঙ্ক মাত্র। আমাদের ধৰ্ম্মে যে বলে এটা তাহার ধ্যানের পরিণাম একথাও যেমন ভুল, খ্ৰীষ্টান মতের খামখেয়ালী ইচ্ছার থিয়োরিটাও ঠিক তেমনি ভুল। তারা যে বলে—ভগবান বলিলেন জল হোক আর আমনি জল হইল, একথার কোন মানে হয় না। গণিতধৰ্ম্মী স্বষ্টির কোন গাণিতিক প্রয়োজনের জন্তই ভগবানকে জল স্বজন-করিতে হষ্টয়াছিল এবং তা করিতে হইয়াছিল নিপুং আঙ্কের হিসাবে যথাপরিমাণে অক্সিজেনের সহিত যথাপরিমাণ হাইড্রোজেন মিশ্রিত করিয়া। এতে যদি একটুও ভুল হইত ত ধ্যানই বল কিংবা খামখেয়ালী ইচ্ছাই বল—মাথা খুড়িয়া মরিলেও জলের জন্ম হইত না । * স্বষ্টির মূলতত্ত্ব গণিত বলিয়া মাষ্টার মহাশয়ের মতে এর সব রহস্তের কুলুপই এক গণিতের মাষ্টার-কী’ বা রাম-চাবি দিয়া খোলা যায়। ধৰ্ম্ম—অঙ্ক, সঙ্গীত-অঙ্ক ; ইতিহাস, দর্শন—অঙ্ক, ব্যাকরণ—অঙ্ক • • আজ টিফিন-পিরিয়ডেই একচোট ঘোর তর্ক হইয়া গেল। সেকেণ্ড মাষ্টার মহাশয় বুকের উপর চাদরের দুই প্রাস্ত মিলাইয়া ধরিয়া বলিতেছিলেন, “অঙ্কের ভিতর কি নেই মশাই ? অার অঙ্কের বাইরে অাছেই বা কি ? • নিউটন অঙ্কের একটি খুটি ধ'রে টান দিলেন,-সামান্ত 'একটি ফল-পড়া নিয়ে গ্রহনক্ষত্রের গতিবিধির সারা রহস্ত ফরফর ক’রে বেরিয়ে এল। আপনারা কালিদাস কালিদাস * করেন, ভাবলাম একবার দেখাই যাক না ব্যাপারটা কি । সেদিন মেঘদূত পড়ছিলাম,—ভেবে সারা হচ্ছিলাম আপনার ওতে ভাবে এলিয়ে পড়বার মত কি পান এত । ও ত একেবারে খাটি অঙ্কের হিসেব—কি রেটে গেলে, কোথা থামলে কোন সময়ে কি ব্যাপারটি প্রত্যক্ষ করতে করতে যাবে তার নিক্তি দিয়ে ওজন করা হিসেৰ ।