পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জাহাজের মেমরী শাড়ী পরেছেন মেয়ের সঙ্গে ঘুমোচ্ছে। জেগে থাকলে দুই বন্ধুতে স্কিপিং রোপ নিয়ে লাফিয়ে, গ্রামোফোন বাজিয়ে, ডেক-গল্ফ খেলে জাহাজ মাতিয়ে রাখত। কেবিন থেকে জিনিষ বাইরে নিয়ে যাওয়া বারণ। কিন্তু এরা কেবিন থেকে কম্বল বার ক’রে নিয়ে উপর তলায় ডেকে চেয়ার জোড়া দিয়ে বিছানা পেতে ঘুম দিতে মহা আনন্দ পেত । ঢেউ বেশী আর হাওয়া জোরাল হ’লে ঢেউয়ের আছড়ানির চোটে জলের গুড়ো গুড়ো কণা উপরে এসে সকলের কাপড়-চোপড় ভিজিয়ে দিত। প্রায়ই দেখতাম এই দুই বন্ধুর কাপড়-চোপড় ও কম্বল সব ভিজে । তাই নিয়েই তারা এক জায়গা থেকে আর-এক জায়গায় চেয়ার সরিয়ে সরিয়ে বিছান পেতে বারবার গুচ্ছে । এক জন জাপানী ভদ্রলোকও আমাদের টেবিলে খেতে বসতেন। প্রথম দিন দেখলাম লোকটি খুব বীয়ার খেল । তার পর দিন-দুই খালি জল। আবার থেকে থেকে বীষ্টার ধেত । ধারে না। কখনও কিমোনো গ'রে খেতে আসে, কখনও মাথায় ভিজে রুমাল বেঁধে আসে, কখনও বা চীনের ঘরের ছোট তোয়ালে নিয়ে খাবার টেবিলেই নাক মোছে। প্রবাসী এ-ব্যক্তি ইউরোপীয় আদব-কায়দার বেশী ধার ' ১৩৪৪ একদিন তাই দেখে কে হেসেছিল । জাপানীর কাছে বোধ হয় এটা বেয়াদবি । জাহাজের ষ্টুয়াড স্বদেশীয়ের অসভ্যতা দেখে মহা লজ্জিত হ’য়ে টেবিলের সকলের কাছে মাপ চাইল এবং ব’লে দিল, “জাপানে কেউ এ-রকম করে না।* আমি অবগু তাতে আপত্তি করবার কিছু কারণ দেখতাম না । সভ্যতা বিলাতী হলেও সভ্যতা। অসভ্যতা বিলাতী হলেও অসভ্যতাই। জাহাজে বিলাতী অসভ্যতা যখন বরদাস্ত করা চলে তখন অন্ত দেশীয়ও নিশ্চয় চলবে । তাছাড়া মাথায় ভিজে তোয়ালে বাধার চেয়ে স্বল্পবাস হয়ে সারাদিন ঘুরে বেড়ানোটাই আমাদের চোখে বেশী অসভ্যতা ব’লে মনে श्ध्र । জাপানী ভদ্রলোকটি বাটি আর কাঠিতে খেতেই বেশী ভালবাসত ; অবশু, বিলাতী খানাও প্রচুর খেত। আমাদের একদিন বাটি আর কাঠি নিয়ে খেতে শিখিয়ে দিল । খেতে খুব অসুবিধা হয় না। তবে ওরা যেমন বাটিটা মুখের কাছে ধরে অনেক সময় প্রায় মুখ দিয়েই খাবারটা টেনে নেয়, কাঠিটা কেবল গোজা দেয় মাত্র, আমাদের তেমন করতে লজ্জা করে। তাছাড়া জোড়া কাঠির মধ্যে উপর দিকের কাঠিটা নাড়বারও একটা ভঙ্গী আছে যাতে খাবারের দলটি বেশ দুটো কাঠির উপরে উঠে আসে। এই ভজটা খুব শীঘ্ৰ আয়ত্ত করা যায় না । আর একটি ইউরোপীয় মহিলা আমাদের সঙ্গে খেতে বসতেন, বোধ হয় বেশ বড়লোক। প্রত্যহ সন্ধ্যায় খুব দামী দামী পোষাক প'রে খেতে বসতেন, নানা দেশে ঘুরে বেড়ান এবং কংগ্রেস কনফারেন্স ইত্যাদিও করেন। পোষাকপরিচ্ছদে খুব শালীনতা দেখে মনট প্রসন্ন ছিল তার প্রতি । একদিন ঝড়বৃষ্টির সময় দেখলাম তিনিও হাফপ্যাণ্ট পরে ড়েকে দেড়চ্ছেন। - - ক্যানেডিয়ান এক মহিলাও আমাদের সঙ্গে বসতেন। বাকি দলের ছিল আর একটা টেবিল। এই টেবিলে সবই প্রায় মিশনারী মেম । এক জন বৃদ্ধ ডেন মহিলা, প্রায় চলৎশক্তি রহিত । তিনি ভারতবর্ষে ৩৪ বৎসর আছেন বললেন, লক্ষ্মেীয়ের দিকে তাদের কি আশ্রম আছে। ইনি বেশ তামিল বলতে পারেন । ইনি জাভায় যাচ্ছিলেন, “নারী ও বালিকা জোগানো” ৰ্যবসা ( Traffic