পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কীৰ্ত্তিক ঘোড়ায় চড়ে পাহাড়ী পথে উঠছি, খীল, অ্যাডভেঞ্চার । , উঃ আপনার মাথা থেকে কি সব প্ল্যান বার হয় মিঃ নন্দী। আপনিই ত কাশ্মীর যাওয়ার কথা সজেষ্ট করলেন প্রথমে । আচ্ছা.গুড মণিং নিৰ্ম্মল বাবু।...আসি ইন্দির । মেসোমশায় কেমন থাকেন খবর দিল নমস্কার মিস গুপ্ত । নদী ও ফুল্লরা যেমন অকস্মাৎ আসিয়াছিল তেমনিই আচম্বিতে বাহির হইয়া গেল । , নিৰ্ম্মল। আমি শুধু এক-এক সময় বড় ব্যথার সঙ্গে ভাবি, ইন্দু তুমি যদি তোমার ঐ ফুল্পরাদিদের মত হতে, হয়ত ংসারের কত দুঃখকষ্টের হাত থেকেই ন তাহলে রেহাই পেতে । কিন্তু আমার ভাবনাও যে সেই জন্যেই । তুমি ত ওদের মত নও। আমি কি পারব তোমাকে সব আঘাতের হাত থেকে বাচাতে ? ইন্দিরা । তবেই ত দেখছি আপনার আমার উপর খুব শ্রদ্ধা ! আমাকে সব আঘাত থেকে বাচনই কি আপনার একমাত্র কাজ ? আঘাত যদি না পাই তবে মানুষ হয়েছি কেন ? কিন্তু ফুল্লরাদিকেই বলুন আর যাকেই বলুন, আমার মাকে দেখে আমি বুঝতে পেরেছি মেয়েদের যথার্থ স্বাধীনতা কাকে বলে । আমার মা কখনও সভা-সমিতিতে বক্তৃতাও করেন নি কিংবা কলেজেও পড়েন মি, কিন্তু জীবনের দায়িত্ব ষোল আনাই ঘাড় পেতে নিয়েছেন । আমি জানি যে-কোন আঘাতই আমুক তাকে দুৰ্ব্বল ব’লে টলাতে পারবে না । কক্ষান্তর হইতে মোহিনী ডাকিলেন, ইন্দু, ইন্দু। নিৰ্ম্মল । তাহার তাড়াতাড়ি পাশের ঘরে যেখানে জ্ঞানদাবাবু শুইয়া আছেন সেখানে গেল । মোহিনী স্থির নিম্পলক মেত্রে স্বামীর প্রতি চাহিয় আছেন । ] ইন্দু। মা বাবা কি উঠেছেন । বেদানার রস আনব? মোহিনী । [ ঠোট চাপিয়া ধরিয়া প্রাণপণ বলে ] বেদানার রস আনতে হবে না ইন্দু, তোমরা কাছে এসে ব’ল । নরেনকেও ডাক । তোমার বাবার অবস্থা ভাল নয় । इंन्नू । भl ! ক্রম্বনের বেগে তাহার সমস্ত শরীর দুলিয়া উঠিল । ] মোহিনী। ওঁর জ্ঞান নেই, আর জ্ঞান হবেও না । তোমাদের যে শেষ কথা কিছু ব'লে যাবেন সে অবসর হ’ল নী । তোমরা মনে মনে প্রার্থনা কর তোমাদের ভালমন্দ সব ভাবনাই ফেলে রেখে যেন উনি শাস্তিতে যেতে পারেন। এখন কেঁদ না ইন্দু। নরেন নিঃশব্দে পায়ের কাছে আসিয়া দাড়াইল । নীচে ডাক্তারের মোটর ধাড়াইবার শঙ্ক পাওয়া গেল । ] 尊 翁 নিৰ্ম্মল। [ পাগলের মত ] ঐ যে ডাক্তারবাবু এসেছেন, ভাক্তার বাৰু ডাক্তার বাৰু , স্বরের উৎস ১২৩ { দু-জন ডাক্তার ঘরে ঢুকিলেন । নিকটে গির পরীক্ষাস্তে ] ডাক্তার। আর কি দেখব নিৰ্ম্মল বাৰু ! ইন্দির পিতার পায়ের উপর মুখ গুজিয়া কাদিতে লাগিল। মোহিনী স্বামীর বক্ষের উপর একট। হাত রাখিয় নিম্পদের মত বসিয়া রহিলেন । তৃতীয় অঙ্ক ॐथभ नृथ्र ইন্দির ঘরে চুপ করিয়া চেয়ায়ে বসিয়া আছে। ঘর সেই আশের, আসবাবপত্রও সেই, কিন্তু সমস্তই কেমন ছিন্নভিন্ন ষ্ট্রহীন । সে নিজেও যেন শোকের মুক্তিমতী প্রতিমা । ] নিৰ্ম্মল । [ ঘরে ঢুকিয় ] ওবেলায় আসতে পারি নি, এত জোরে বৃষ্টি এল । মা কেমন আছেন ? ইন্দির । তার অসীম ধৈৰ্য্য । এই ক’দিনে তার ওপর দিয়ে যা বয়ে গেল তার তুলনা নেই, তুবু আজ দেখছি বাবার বসবার ঘরের দেরাজ-বাক্স ঝেড়ে মুছে রাখছেন । নরেন ঝড়ের মত ঘরে ঢুকিল, তাহার হাতে একখানা কাগজ । ] নরেন । [ উত্তেজিত স্বরে ] জানেন নিৰ্ম্মল-দা,আজ কি আবিষ্কার করলুম, আমরা পথের ভিখিরী, কিছু, নেই আমাদের । নিৰ্ম্মল । আঃ কি বাজে বকছু নরেন, এই ত সবেমাত্র কলেজ থেকে ফিরলে । মুখে হাতে জল দিয়ে কিছু থাও গে । নরেন । [ উচ্চহাস্য করিয়া ] ওসব বাবুগিব্লি-আরচলবে না নিৰ্ম্মল-দী, কলেজ যাবার জন্যেও আর তাড়াহুড়ে নেই। এই দেখুন এই নোটিসখানা। বাব৷ কিছুই রেখে যেতে পারেন নি, উপরন্তু দশ হাজার টাকা দেন । এমন কি এই বাড়ীগানা ও মর্টগেজ রয়েছে । যাদের কাছে আছে তারা বাবার মৃত্যুসংবাদ পেয়ে নোটিস পাঠিয়েছে। নিৰ্ম্মল । [ তাহার হাত হইতে কাগজপান কাfড়য়া লইয়া তিরস্কারের স্বরে ] বেশ, এসব বিষয়ে যা স্থির করবার

  • তোমার মায়ের সঙ্গে পরামর্শ করে আমরা ঠিক করব।

তুমি ছেলেমান্বষ,তোমার এ নিয়ে মাথা ঘামানোর প্রয়োজন কি ? যাও, তুমি চা-টা খেয়ে একটু বেড়িয়ে এস। বিকেলবেলায় ঘরে ব’সে থেকে কি করবে ।

  • নরেন । নিৰ্ম্মল-দ। আপনি ভুল বুঝছেন, আর ছেলেমানুষ বলে সরে দাড়ালে আমার চলবে না, এখন আমাকেই সংসারের ভার নিতে হবুে। দাদার কাছ থেকে কাল চিঠি এসেছে, লে ওখানে চাকরি পেয়েছে। এখন দেশে ফিরবে না। মা তাকে বাবার মৃত্যুসরাদ দিতে দেন নি। তিনি বলেন আর কোন চিঠিপত্রই তাকে লিখতে হবে না।