পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/২৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

సెరిరి প্রবাসী SN988 বহু দূরের গ্রাম-গ্রামাস্তর থেকে নরনারী এসেছে সেই উৎসবে যোগ দিতে। এই পাৰ্ব্বত্য প্রদেশের বৈচিত্র্যময় পোষাকে সজ্জিত হাস্তমুখী তরুণীরা পরিচিত ও অপরিচিত সকলেরই বিয়ারের গ্লাসের সঙ্গে নিজেদের গ্লাস স্পর্শ করিয়ে শুভ ইচ্ছা জ্ঞাপন করছে। সকলেরই পাত্রে সসেজ ও লাল বাঁধাকপির পাতা সিদ্ধ। এই সরল পাৰ্ব্বত্য লোকদের মধ্যে আনন্দ খুব নিবিড় হয়ে উঠল। ব্যাও বাজছে, সকলে মিলে সমস্বরে ‘কমিউনিটি’ পল্পীসঙ্গীত করছে ; মাঝে মাঝে উঠে হাত ধরাধরি করে নাচছে । রবীন্দ্রনাথের ভাষায় সকলেরই “পরাণ হল অরুণ-বরণী”, এমন সময়ে সেই উৎসবের ইন্দ্ৰজাল ভঙ্গ করে মূৰ্ত্তিমান উপদ্রবের বেশে এক দল ব্রাউন-শার্ট যুবক প্রবেশ করল। তাদের দলের পোষাক এই উৎসবের মধ্যে নিয়ে আসন্তে একটুও দ্বিধাবোধ করল না। সামরিক টপবুটের রূঢ় শবে একটি মধুর স্বপ্ন যেন নিপীড়িত হয়ে মিলিয়ে গেল। তরুণীর কিন্তু সাগ্রহে এদের আমন্ত্রণ করলেন। বুঝলাম যে বাদামী দলই এ-যুগের একাধারে ব্রাহ্মণ ও ক্ষত্রিয়—বর্ণশ্রেষ্ঠ ও বরমাল্যপ্রাপ্ত বীর । উজ্জল তারায় ভরা নীল আকাশের তলায় গ্রাম্য পাৰ্ব্বত্য পথে ফিরে আসতে আসতে মনে হ’ল—কোন জামানী মামুষের মনে শাশ্বত আসন পাবে। সহস্র রাইনউপকথার স্মৃতি-বিজড়িত, বিটোফেন-হবাগনারের স্বরঝঙ্কত, গোটে-লীলারের জামানী, না ফ্রেডেরিক, বিসমার্ক ও হিটলারের জামানী ? জ্বলে বহ্নিশিখা ঐধীরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় উদ্বেল তরঙ্গমালা একদিন বহিত হিয়ায় মেঘময়ী চন্দ্ৰলেখা আকাশের প্রাস্তে পড়ে লুটি আজি তার শুষ্ক স্রোত, জাগি আছে দীর্ঘ বালুচর, বালুকার স্বপ্ন হতে জাগে বুঝি অসংখ্য কঙ্কাল, আনন্দ প্রবাহহীন আপনাতে আপনি লুকায়, তাহারা আসিতে চায়, তাহার হাসিতে চায় উঠি প্রচও অনলতাপে দগ্ধ তার বুকের পঞ্চর। মরুভূ বহিতে চায় তরঙ্গি হইয়া উত্তাল। কাহারে সে দোষ দিবে ? এ ষে তার অদৃষ্টলিখন, কি ষে চায়, জানেনা সে, চোখে জাগে আশা-মরীচিকা, হৃদয়-দিগন্তে তার উষা-সন্ধ্যা রাঙায় গগন,— স্থদ্বরের মেঘমায়া ! বুকে তার জলে বহিশিখ। দূরে কত হাসে ঢেউ, কত নদী মিশেছে সাগরে, বাতাসের কলগানে জলস্রোত হয়েছে মুখর, আশার শ্মশানে হেথা তৃষাণীর্ণ ধূসর প্রাস্তরে দহিছে অন্তরতল, শব্দহীন বাহির নিথর ।