পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/২৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আগ্রহণয়ণ গীতিসরে রবীন্দ্রনাথ i SRas এরূপ শিক্ষাদান-প্রণালী শিক্ষকদের পক্ষে আত্মসম্মানের হাfনজনক । সাধারণত আমাদের দেশে অল্পবয়স্ক বালকগণ প্রাপ্তবয়স্ক শিক্ষকদের নিৰ্ম্মম শাসনের উপলক্ষ্য হয়ে থাকে, একথা আমার জানা আছে, সেই কারণেই সতর্ক করে দিলাম। ১৪ই শ্রাবণ ১৩৪৪ ।” বিদ্যালয় হ'তে কিছুক্ষণের জন্ত রবীন্দ্রনাথ পুণ্যাহস্থলে বসেই বোটে ফিরে এলেন, সঙ্গে সঙ্গে এলেন কয়েকজন বিশিষ্ট প্রধান মুসলমান প্রজা। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে তাদের কথাবাৰ্ত্ত হতে যা বুঝলাম, সেটা এ-ক্ষেত্রে বিশেষ করে বলা পৰ্বন্য মনে করি । সাম্প্রদায়িক এই ছুদিনে, পতিসরে মুসলমানবহুল প্রজমণ্ডলীর মধ্যে রবীন্দ্রনাথের আসন কোথায় সেটা চোখে যারা দেখেছেন তারা যতটা বুঝবেন—চোখে যারা দেখেন নি তাদের সে কথা লিখে বুঝিয়ে বলা খুবই শক্ত। মরজগতে *ঠাৎ দেবতার আবির্ভাব হ’লে মানুষ যেমন উৎফুল্ল হয়ে শুঠে এবং দেবতাকে কি দিয়ে খুশী করবে সেই কথাই ভাবে, প্রজারাও (শতকরা ৯৯ জনের চেয়েও বেশী মুসলমান ) রবীন্দ্রনাথকে পেয়ে সেই রকম খুশী হয়ে উঠল । তারা কবির কাছে কোন রকমের আর্থিক উপকারের প্রার্থী তার কবিকে অনেক দিনের পরে নিজেদের মধ্যে পেয়ে পরমানন্দিত, এ যেন হারাধন ফিরে পাওয়া । এই শ্রেণীর প্রজাদের পক্ষ হ’তে মোঃ কাফিলউদ্দীন আকন্দ কবিকে মুদ্রিত ষে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেছিলেন তার নকল এই— “প্রভুরূপে হেথা আস নাই তুমি দেবরূপে এসে দিলে দেখা, দেবতার দান অক্ষয় হউক হৃদিপটে থাকু স্থতিরেখা।” এদের কথাবাৰ্ত্তার ভিতর দিয়ে বার বার একটি প্রার্থনাই বেজে উঠছিল, সেটি তাদেরই ভাষায় বলি— “আমরা ত হুজুর বুড়ো হয়েছি, আমরাও চলতি পথে, আপনিও চলতি পথে, বড়ই দুঃখ হয়, প্রজ-মনিবের এমন মধুর সম্বন্ধের ধারা ৰুঝি ভবিষ্যতে বন্ধ হয়ে যায়। ছেলেপিলেদের মতিগতি বদলে যাচ্ছে, তারা আমাদের সব গদান মনে ক’রে—এমন জমিদারের জমিদারীতে" বাস 之*-%

  • 翟日

করবার সৌভাগ্য-বোধ তাদের বুঝি হবে না।” এজেরি মধ্যে একজন সাশ্রনয়নে ব'লে উঠলেন, “হুজুর আমরা হিন্দুদের মত জন্মাস্তরবাদ মানি না,—মানলে খোদার কাছে এই প্রার্থনাই জানতাম, বার বার যেন হজুরের রাজ্যেই প্ৰজা হয়ে জন্ম নিই।” এই সব প্রজাদের অবস্থা ভাল, এরা কেউ কবিকে এসব কথা খোসামোদ-ছলে বলেন নি । রবীন্দ্রনাথের কথাবার্তা থেকেও বুঝেছি যে, তিনিও তাদের কোন দিন অবজ্ঞা করেন নি,—তাদের নিজের অন্নদাতা হিসেবে মনে করেন। অতীর্তের পুরনো কথা বলতে বলতে কবি এবং প্রজাদের চোখ ছলছল ক’রে উঠেছে আনন্দের অশ্রুবাম্পে । এ-দৃশু দেখতে পাব, কোন দিন ভাবতেও পারি নি । - প্রজারা যে নিবেদনমিশ্রিত অভিনন্দন মোঃ আকবর অtলী অাকন্দের মারফতে কবিকে প্রদান করেছিল, তার কিছু নমুনা দিচ্ছি । “তুমি যে মোদের দেবতা হৃদয়ের o নহ ভ তুমি পাষাণে গড় জানি চিরকাল হে প্ৰভু দয়াল হৃদয় যে তব মমতায় ভর। " এই সময়ে বগুড়া হ’তে একদল ছাত্র ও শিক্ষক এলেন রবীন্দ্রনাথকে দেখতে এবং তার উপদেশ নিতে । এই দলের শিক্ষকদের লক্ষ্য ক’রে রবীন্দ্রনাথ যা বলেছিলেন তার মৰ্ম্ম এই— “যতক্ষণ পর্ষ্যস্ত তোমরা ছাত্রদের সঙ্গে নিজেদের এক করতে না পারে। ততক্ষণ তাদের ঠিক শিক্ষা দিতে পারবে না । তোমরা ছাত্রদের নিকট হ’তে মৰ্য্যাদা রক্ষার নামে, এবং শিক্ষাভিমানে ষে-দূরত্ব রক্ষা কর, সেই দূরত্বরক্ষার নীতিই প্রকৃত শিক্ষাদানের পথে বিশেষ श्ररुष्ठद्रांश्व ' এই শিক্ষক ও ছাত্রদের দল চলে যাবার পর, কয়েক জন প্রধান প্রজা এলেন কবির সঙ্গে দেখা করতে । তখন রাত্রি ৯ ঘটিকা' কবি অশ্রাপ্ত ভাবেই তাদের সঙ্গে অতীত দিনের মুখদুঃখের কথা আরম্ভ