পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/২৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্রোতের ফুল ঐআলোক রায় শনিবার। আপিস হইতে একটু শীঘ্রই ফিরিয়াছি। ঘরে ঢুকিয়া দেখি, তখনও শৈলজার স্বানাহার হয় নাই। কোলের উপর পঞ্জিকা খোলা। ডান হাতের একটা আঙুল অধরে চাপিয়া, শূন্তদৃষ্টিতে বাহিরের পানে চাহিয়া তন্ময় হইয় সে কি ভাবিতেছে। আমার ভারী জুতার শব্দও তাহার কর্ণে প্রবেশ করে নাই প্রশ্ন করিলাম, “মহা ভাবনায় পড়েছ দেখছি । ছেলের বিয়ের দিন বুঝি আর কিছুতেই পাওয়া যাচ্ছে না ?” আমাকে ঘরে ঢুকিতে দেখিয়াই চকিতে পঞ্জিকা বন্ধ করিয়া শৈলজা উঠিয়া দাড়াইল । কহিলাম, "ছেলের বিয়ের ভাবনাটা কিছুক্ষণের জন্য বাক্ষবন্দী ক'রে স্নান-খাওয়াটা সেরে নিলেই ত ভাল হ’ভ।” আমার রসিকতার উত্তরে একটা কথাও না কহিয়া ক্ষুদ্র একটি আসছি বলিয়া বই-হাতে শৈলজা দ্রুতপদে কক্ষের বাহির হইয়া গেল । খাটে বসিয়া আপিসের ধড়াচুড়া ত্যাগ করিতেছি, শৈলজা আসিয়া উপস্থিত । সম্মুখের আলনা হইতে কোচন ধুতিটা আনি খাটের উপর রাখিতে রাখিতে শৈলজা কহিল, “আজ যে শনিবার, একদম ভুলে গেছি তা ।” কহিলাম, “স্থ ! যে রকম ভোলা মন হচ্ছে তোমার, কোন দিন হয়ত আমাকেই তুলে যাবে, বাড়ীতে এলে ঢুকতে দেবার বদলে লাঠি নিয়ে তাড়া করবে।” শৈলজা কিন্তু এবারেও হাসিল না। এইবার ভাল করিয়া তাহার পানে চাহিয়া বুঝিলাম ;-বাহিরের আকাশে মেঘের চিহ্নমাত্র না থাকিলেও, গৃহিণীর অন্তরাকাশ মেঘশূন্ত নহে । 峨 প্রশ্ন করিলাম, “কোথা থেকে চিঠি এল আজ ? খবর সব ভাল ত ? একটু যেন চিস্তিত্ব দেখাচ্ছে তোমাকে ?” कषाझे डांज कब्रिग्न ८*श कब्रिाउ मां निम्नांझे १श्वनछ কহিল, “না, না, চিন্তা আবার কি ? চিন্তু আবার আমি কোথায় করতে গেলাম ! তোমার যেমন কথা ।” কহিলাম, “মুসংবাদ | চিন্তা না করলেই মঙ্গল । তবে আমি ভয় পাচ্ছিলাম, কারণ চিন্তা করবার ইচ্ছে থাকলে ত আর তোমার বিষয় খুঁজতে দেরি হয় না।” নিঃশব্দে শৈলজা কাজ করিয়া চলিল। আমার পরিত্যক্ত পোষাক পুনরায় ভাজ করিয়া আলনায় উঠাইয়া রাথিস্থা সে আমার নিকটে আসিয়া বসিল । কহিলাম, "বসলে ষে ! যাও, স্নান ক'রে নাও তাড়াতাড়ি ” শৈলজার কিন্তু স্নান করিতে যাইবার কোন লক্ষণ দেখা গেল না । বরং বেশ ভাল করিয়া বসিয়া প্রশ্ন করিল, “আচ্ছ—পাজি দেখা, হাত দেখা, কোষ্ঠী দেখা কিছু বিশ্বেস কর না তুমি, না ।” প্রশ্নটা নূতন নহে। পূৰ্ব্বেও বহুবার এ-প্রশ্ন হইয়া গিয়াছে, এবং উত্তর লইয়া মতভেদও হইয়াছে প্রচুর । আমার সহিত শৈলজার বিবাহ-ব্যাপার শ ঘটিয়াছিল একটু আশ্চর্ষারূপে। শৈলজার দুই বড় বোনের তখনও বিবাহ হয় নাই । পিতার অবস্থা সেরূপ সচ্ছল নহে, কিন্তু কস্তার সংখ্যা পিতার অায়ের সহিত সামঞ্জস্ত না রাথিস্থা বাড়িয়া চলিয়াছে। অতএব শৈলজার বিবাহের কোন চেষ্টাই হয় নাই। এমন সময় তাহাঙ্গের এক প্রতিবেশীর কস্তাকে আমার ভাবী বন্ধুরূপে আশীৰ্ব্বাদ করিতে গিয়া আমার পিতৃদেব পথিমধ্যে ক্রীড়ারত শৈলজাকে দেখিয়া, তাহাকেই আশীৰ্ব্বাদ করিয়া বসিলেন । ফলে কয়েক দিনের মধ্যে অভাবনীয় রূপে আমার জীবন-নাট্যে প্রধান নায়িকার বেশে শৈলজার প্রবেশ। এই বিবাহ-আখ্যাম্বিকার, শৈলজার পক্ষে সৰ্ব্বাপেক্ষ বিস্ময়জনক এবং আমার পক্ষে সৰ্ব্বাপেক্ষা দুর্ভাগ্যজনক ঘটনাটা ঘটিয়াছিল বিবাহের ঠিক পূৰ্ব্বদিন। সেই দিন সহসা কোথা হইতে এক গণৎকার আসিয়া নাকি শৈলজার