পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Q سر \لتN প্রবাসী . SNetBg খাইল, চোখে না দেখিলে তাহা বিশ্বাস করিবার কথা নহে । এই ভোজ খাইবার জন্য এত আগ্রহ দেখিয়া ঠিক করিলাম, দোবাদের এই মেয়েদের নিমন্ত্ৰণ করিয়া এক দিন খুব ভাল করিয়া সত্যকার সভ্য খাদ্য খাওয়াইব । সপ্তাহখানেক পরেই পাটোয়ারীকে দিয়া দোষীদপাড়ার মেয়ে কমুটি ও তাহাজের ছেলেমেয়েদের নিমন্ত্ৰণ করিলাম, সেদিন তাহার যাহা খাইল-লুচি, মাছ, মাংস, ক্ষীর, দই, পায়েস, চাটুনি–জীবনে কোনও দিন সে রকম ভোজ খাওয়ার কল্পনাও করে নাই। তাদের বিশ্বিত ও আনন্দিত চোখমুখের সে হাসি কত দিন আমার মনে ছিল । সেই ভবঘুরে গাঙ্গেীত ছোকরা বিগুয়াও সে দলে ছিল । সার্ভে-ক্যাম্প থেকে একদিন ঘোড়া করিয়া ফিরিতেছি, বনের মধ্যে একটা লোক কাশঘাসের ঝোপের পাশে বসিয়া কলাইয়ের ছাতু থাইতে বসিয়াছে। পাত্রের অভাবে ময়লা খান কাপড়ের প্রান্তে ছাতুটা মাখিয়াছে—এত বড় একটা তাল, যে এক জন লোকে—হইলই বা হিন্দুস্থানী, মানুষ ত বটে—কি করিয়া অত ছাতু খাইতে পারে এ আমার বুদ্ধির অগোচর । আমায় দেখিয়া লোকটা সসম্রমে খাওয়া ছাড়িয়া উঠিয় দাড়াইয়া সেলাম ঠুকিয়া বলিল—ম্যানেজার সাহেব ! থোড়ী জলখাই করতে হেঁ, হুজুর মাফ কি জিয়ে। এক জন ব্যক্তি নির্জনে বসিয়া, শাস্ত ভাবে জলখাবার খাইতেছে, ইহার মধ্যে মাপ করিবার ব্যাপার কি আছে খুজিয়া পাইলাম না । বলিলাম-খাও, খাও, তোমায় উঠতে হবে না । নাম কি তোমার ? লোকটা এখনও বসে নাই, দণ্ডায়মান অবস্থাতেই সসন্ত্রমে বলিল—গরীব কী নাম ধাওতাল সাহু, হুজুর। চাহিয়া দেখিয়া মনে হইল লোকটার বয়স ষাটের ওপর হইবে। রোগী লম্ব চেহারা, গায়ের রং কালে, পরনে অতি মলিন খান ও মেরজাই, পা খালি । ধাওতাল সাহুর সঙ্গে এই আমার প্রথম আলাপ । কাছারিতে আসিয়া রামজোত পাটোয়ারীকে জিজ্ঞাসা করিলাম-ধাওতাল সান্থকে চেন ? রামজোত বলিল-জী হুজুর। খাওতাল সাহকে এ অঞ্চলে কে না জানে ? সে মন্ত বড় • মহাজন, লক্ষপতি cणांक, ७क्रिक नवांडे ठांद्र थांप्टक । नeअंझिबांग्र ठांब्र ঘর। পাটোয়ারীর কথা শুনিয়া খুব আশ্চর্ষ্য হইয়া গেলাম। লক্ষপতি লোক ময়লা উড়ানির প্রাস্তে বনের মধ্যে বসিয়া এক তাল নিরুপকরণ কলাইয়ের ছাতু খাইতেছে-এ দৃশু কোনো বাঙালী লক্ষপতির সম্বন্ধে অস্ততঃ কল্পনা করা অতীব কঠিন। ভাবিলাম পাটোয়ারী বাড়াইয়া বলিতেছে, কিন্তু কাছারিতে যাহাকে জিজ্ঞাসা করি, সে-ই ঐ কথা বলে, ধাওতাল সাহ ? তার টাকার লেখাজোখা নেই। ইহার পরে নিজের কাজে ধাওতাল সাছ অনেকবার কাছারিতে আমার সহিত দেখা করিয়াছে, প্রতিবার একটু একটু করিয়া তাহার সহিত আলাপ জমিয়া উঠিলে বুঝিলাম একটি অতি অদ্ভুত লোকোত্তর চরিত্রের মানুষের সঙ্গে’ পরিচয় ঘটিয়াছে। বিংশ শতাব্দীতে এ ধরণের লোক যে আছে, না দেখিলে বিশ্বাস করা যায় না । ধাওভালের বয়স যাহা আন্দাজ করিয়াছিলাম, প্রায় তেঘটি-চৌষটি। কাছারির পূর্ব-দক্ষিণ দিকের জঙ্গলের প্রাস্ত হইতে বারো-তেরো মাইল দূরে নওগছিয়া নামে গ্রামে তার বাড়ী। এ অঞ্চলের প্রজা, জোতদার, জমিদার, ব্যবসাদার প্রায় সকলেই ধাওতাল সান্থর খাতক । কিন্তু তাহার মজা এই যে, টাকা ধার দিয়া সে জোর করিয়া কখনও তাগাদ করিতে পারে না। কত লোকে যে কতটাকা তাহার ফাকি দিয়াছে । তাহীর মত নিরীহ, ভালমাতুয লোকের মহাজন হওয়া উচিত ছিল না, কিন্তু লোকের উপরোধ সে এড়াইতে পারে না। বিশেষতঃ সে বলে, যখন সকলেই মোট স্বদ লিখিয়া দিয়াছে, তখন ব্যবসা হিসাবেও ভ টাকা দেওয়া উচিত । এক দিন ধাওতাল আমার সঙ্গে দেখা করিতে আসিল, উড়ানিতে বাধা এক বাণ্ডিল পুরানো দলিলপত্র। বলিল—হজুর মেহেরবানী ক’রে একটু দেখবেন দলিলগুলো ? * পরীক্ষা করিয়া দেখি প্রায় আট-দশ হাজার টাকার দলিল ঠিক সময়ে নালিশ না-করার দরুন তামাদি হইয়া গিয়াছে। উড়ানির আর এক মুড়ে খুলিয়া সে আরও কতকগুলি জরাজীর্ণ কাগজ বাহির করিয়া বলিঙ্গ—এগুলো দেখুন দেখি হুজুর। ভাবি একৰার জেলায় গিয়ে উকীলদের দেখাই, তা মামলা কখনো করি নি, করা পোষায় না। তাগাদ করি, দিচ্ছি দেব ক’রে টাকা দেয় না অনেকে।