পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৬২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

عسوا لهيع প্রবাসী Seegg হয় “ইম্বো-ইউরোপীয়" বা "আৰ্য্য”। এক বিশিষ্ট ভাষার এক বিশিষ্ট জাতির সহিত সম্বন্ধ অনেক সময়েই দেখা যায়। সেই কারণে পাশ্চাত্য পণ্ডিতগণ জছুমান করিলেন ষে সংস্কৃত, পারসী প্রভৃতি ভাষাভাষীগণ মূলতঃ এক জাতি হইতে উদ্ভূত ; এই জাতিরও নাম দেওয়া হইল “ইন্দোইউরোপীয়" বা “আর্ধ্য"। ইউরোপীয় পণ্ডিতগণ মনে করিতে লাগিলেন যে এই মূলস্থত্রের দ্বারা আমরা তাহাদের সহিত সংবদ্ধ। অতএব তাহারা নিজেদের সম্বন্ধে যাহা ভাবেন, তাহার কিছু কিছু আমাদের পূর্বপুরুষগণ সম্বন্ধেও ভাবিতে লাগিলেন। মানুষ নিজেকে যতই বুদ্ধিমান মনে করুক, ভুল সে করেই। প্রত্যেক মামুষেরই ব্যক্তিগত বা জাতিগত দৃষ্টিদোষ থাকে। তাহার ফলে অনেক সময়েই তাহার দর্শন বা বোধ বিকৃত হয়। এস্থলেও তাহাই হইল । আমাদের ইংরেজ প্রভূর মনে করেন যে র্তাহার আমাদের অপেক্ষা উচ্চতর সভ্যতা লইয়া এদেশে আসিয়া আমাদের "সভ্য* করিতেছেন । ইহার উপমানে তাহারা কল্পনা করিলেন যে প্রাচীন কালে আর্ধ্যরাও ঠিক এই ভাবে ভারতবর্ষে আসিয়া স্থানীয় "অসভ্য” জাতিদের পরাজিত করিয়া তাহাদের ধীরে ধীরে "সভ্য” করিয়াছিলেন । ইংরেজদের এই অনুমান পাশ্চাত্য অন্যাঙ্ক জাতির পণ্ডিতদের মনেও স্থান পাইল । আর পাইবেই না কেন ? তাহারা সকলেই "সভ্য", এবং ঔপনিবেশিক প্রচেষ্টা বা স্পৃহা র্তাহাজের সকলেরই অল্পবিস্তর আছে। এই কারণে আজকাল স্কুলপাঠ্য সকল ইতিহাসের প্রারম্ভে দেখিতে পাই আর্ধ্যজাতি কর্তৃক “অসভ্য” দ্রাবিড়ীয় বা কোল-জাতীয় আদিম অধিবাসীদের পরাজয়ের কথা । বেদে, বিশেষ প্রাচীনতম গ্রন্থ ঋকৃ-সংহিতায়, আমরা অনেক যুদ্ধের কথা পাই। তাহাদের মধ্যে প্রায়ই দাস ও দস্থ্যর পরাজয়ের জঙ্ক দেবতাদের নিকট প্রার্থনার কথা আছে । পাশ্চাত্য পণ্ডিতগণ কল্পনা করিলেন ষে দাস বা দহ বলিতে আদিম অধিবাসী বুঝিতে হইবে, এবং ইহাদের সহিত আৰ্যদের অনবরত যুদ্ধ হইত। আর্ধসভ্যতা যে মনাৰ্য্যসভ্যতা হইতে উৎকৃষ্ট হইবেই, সে-বিষয়ে ইহারা সন্দেহ করিতে পারিলেন না, যেহেতু ইংরেজ প্রভৃতি পাশ্চাত্য পণ্ডিতগণ মনে করেন যে তাহারা আর্ঘ্য। আজ কিন্তু ভারতের প্রাচীন ইতিহাস বুঝিবার বিষয়ে এক নূতন যুগ আসিয়াছে। আমাদের দ্রাবিড়ীয় ভ্রাতার কিছু কাল হইতে বলিয়া আসিতেছেন ষে জাহাদের প্রাচীন সভ্যতা আর্ধ্যসভ্যতা হইতে নিকৃষ্ট নহে, বরং কয়েক অংশে উৎকৃষ্ট । ইহাও বোধ হয় পাশ্চাত্যদের মত জাত্যঙিমানের কথা। কিন্তু ইংরেজের প্রতিষ্ঠিত আর্কিয়লজিক্যাল ডিপার্টমেন্টের কল্যাণে আজ উভয়বিধ দৃষ্টি-কোণ ছাড়িয় আমাদের নূতন ভাবে সত্যকে দেখিবার স্বযোগ ঘটিয়াছে। স্বৰ্গীয় ঐতিহাসিক রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের সূক্ষ্ম দৃষ্টির ও সবু জন মার্শাল ও র্তাহার সহযোগীদের অধ্যবসায়ের ফলে পঞ্জাব ও সিন্ধু প্রদেশের যে প্রাগৈতিহাসিক সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কৃত হইয়াছে, তাহাতে ভারতের প্রাচীন অনাৰ্য্য সভ্যতাকে আর নিম্নস্তরের বলা চলে না। এই সভ্যতাকে আর্ষ্যসভ্যতা বা বৈদিক সভ্যতা প্রমাণ করিবার চেষ্টা অনেকেই করিতেছেন। কিন্তু নিরপেক্ষ ভাবে এইগুলির অনুধাবন করিলে স্পষ্টই বুঝা যায় ষে বৈদিক সভ্যতার সহিত এ সভ্যতার কোনই সম্বন্ধ নাই। এ-বিষয়ে Mohenjodaro and the Indus Civilization strų ( SN RS, পৃ. ১১০-১১২ ) সবু জন মার্শালের উক্তি বিশেষ ভাবে প্রণিধানযোগ্য। ঋগ্বেদসংহিতা হইতে আমরা প্রাচীন অর্ধসভ্যতা সম্বন্ধে যে-চিত্র পাই, মোএঞ্জোদড়ে, হারাপ্পা প্রভৃতি স্থানের প্রাচীন অধিবাসিগণ তাহ অপেক্ষ অনেক উচ্চতর সভ্যতার দাবী করিতে পারিত, এবং এই সভ্যতা ষে বৈদিক সভ্যতার পূর্ববর্তী তাহা মনে করিবারও পর্যাপ্ত কারণ আছে । ঋগ্বেদ-সংহিতায় যুদ্ধের কথা অনেক থাকিলেও সেগুলি যে সব অাৰ্য্য-অনাৰ্য্য সংঘর্ষের কথা, তাহা কিন্তু গ্রন্থদ্বার ঠিক সমর্থিত হয় না। ঐযুক্ত রমাপ্রসাদ চন্দ্র মহাশয় "Survival of the Pre-historic Civilisation of the Indus Valley" atas fäärvi ( ‘i. S-7 ) দেখাইয়াছেন যে আমরা অনেক স্থলে জার্ষ্য রাজার সহিত জার্ধ্য রাজার যুদ্ধের কথাই দেখিতে পাই। তা ছাড়া দেবদানবের সংঘর্ষের কথা ত আছেই। পাশ্চাত্য পণ্ডিতগণ “দাস” বা "দন্থ" শব্দের সাধারণতঃ যে অর্থ করেন, তাহার মূলে কোন প্রমাণ নাই। আমি ঋকু-সংহিতা