পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৬৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাঘ শিক্ষার ভার মাতৃজাতিই গ্রহণ করেছেন । শিশুশিক্ষার ভারও মায়েদের হাতেই চলে যাচ্ছে । দিল্লীর মহিলা-সমিতির সুশিক্ষার দিকে বিশেষ প্রয়াস আছে। আনদের মধ্য দিয়ে সাধারণভাবে শিক্ষা প্রচারের সুযোগের দিকেও এই মহিলা-সমিতির বিশেষ আগ্রহ ও প্রচেষ্ট দেখা যায় । কিছুদিন হ’ল এই মহিলা-সমিতি রবীন্দ্রনাথের “শেষবর্ধণ” গীতিনাট্যের নুত্যাভিনয়ের আয়োজন ক’রে সব্বসাধারণকে যে আনন্দ দিয়েছেন, তা বিশেষভাবে উল্লেখ এবং প্রশংসার যোগ্য। এই নৃত্যাভিনয়ের প্রযোজনায় প্রকৃত রসজ্ঞান ও সৌন্দৰ্য্যবোধের পরিচয় ছিল। “শেষবর্ষণে"র এক-একটি গান উপযুক্ত ভূমিকাসহ এমন সুন্দর ভাবে নিয়োজিত করা হয়েছিল এবং তার মৰ্ম্মকথাটি অবলম্বন করে এমন একটি অপূৰ্ব্ব নৃত্যসঙ্গীতমুখরিত খণ্ডকল প্রদর্শিত হয়েছিল, যা শুধু মুদ্র নয়, যা প্রতিপ্রদ, উত্তম এবং সুমঙ্গলজনক। নাট্যের অংশ-চয়ন হ'তে আরম্ভ করে গানের সুর, আবৃত্তি-কৌশল এবং নৃত্যলীলা সবগুলিই সমিতির সভ্যদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ও নিয়োজিত হয়েছিল। এ-প্রসঙ্গে এইটুকু বলা আবশ্বক যে এই রসকল্পনার পশ্চাতে মহিলা-সমিতির সভ্যারাই আছেন, কিন্তু নৃত্যাভিনয়ের কৃতিত্ব সবটুকু তাদের কুমারী কস্তাদেরই 伞馆目 ছোট বড় ২২টি মেয়ে ভূমিকা নিয়েছিলেন । নৃত্য-ভূমিকায় ছিলেন–কুমারী মালবী সেন, সান্তন গুহ, কল্যাণী সেন, মালঞ্জ সেন, অশোকা মল্লিক, প্রমীলা সেন, উৰ্ম্মিল সেন, উমা মুখোপাধ্যায়, অরুণ বসু, সুলেখা সেন, সাত্ত্বন চট্টোপাধ্যায়। গীতাংশে ছিলেন— কুমারী রেখা সেন, অণিমা বন্দ্যোপাধ্যায়, মঞ্জরী সেন, সবিতা বসু, গীত মুখোপাধ্যায়, রমলা সেন, জয়ন্ত্র সেন, অতসী সেন, রেব বঙ্গ্যোপাধ্যায় ও কুমারী বাঁটু বন্ধ্যোপাধ্যায় ; এবং ভূমিকা আবৃত্তি করেছিলেন কুমারী সুজাত। গুপ্ত । ছোট মেয়েদের এই নৃত্যাভিনয় অতীব সুন্দর ও মৰ্ম্মস্পশী । কতখানি সুশিক্ষা, সংযম, জাদশপ্রিয়তা তার ঘরে পেয়েছে, ধার পরিচয় তার সাধারণকে দিতে পেরেছে এবং এর থেকে সহজে ধারণা ক’রে নেওয়া যেতে পারে যে, নারীর স্থান শিক্ষায় দীক্ষায় পুরুষের খুব নীচে নয়, এমন কি উপরেও হতে পারে। ষে উদ্বেগু নিয়ে এই মহিলা-সমিতিটি গড়ে উঠেছে তার প্রধান মহিলা-সংবাদ ○" ● কথা হ’ল শিক্ষা ও সঙ্গ দ্বারা পরম্পরের জীবন উন্নত ও মধুময় ক'রে তোলা । বাঙালী জাতির একটা বৈশিষ্ট্য নাকি ভাই-ভাই ঠাই-ঠাই থাকা । পার্থক্যের মধ্যেই অপ্রেম সহজে বেড়ে ওঠে, ঐক্যবন্ধন শিথিল হয়। যে-দেশের ইতিকথায় আছে যমের হাত থেকে মৃতপতিকে ফিরিয়ে আনার কথা, সেই দেশের শক্তিস্বরূপিণী হিন্দুনারীগণ স্বামী ও ভাইদের ঐক্যবন্ধনে ৰেখে আনতে পারেন যে-কৌশলে, সে-কৌশল এই নারী-সমিতির মধ্যে আছে। এই মহিলা-সমিতির প্রতি মাসে একবার ক’রে অধিবেশন হয়ে আসছে। প্রতি অধিবেশনে কোন-না-কোন সভ্যাকে একটি করে স্বরচিত প্রবন্ধ পাঠ করতে হয়। প্রবন্ধগুলিতে উচ্চ চিন্তু, আদশপ্রিয়তা, সমাজসেবা, পুত্ৰকস্তাদের শিক্ষাসমস্ত প্রভৃতি নানা হিতকর বিষয়ের আলোচনা হয় । মাননীয়া লেডী সরকার মহোদয় এই সমিতির বর্তমান সভানেত্রী, সহকারী সভানেত্রী শ্ৰীযুক্ত নীহারনলিনী সেন ও সম্পাদিকা ক্রযুক্ত লীলা গুহ। অম্লান্ত কৰ্শ্বকত্রীগণ-ঐযুক্ত সাবিত্রী দত্ত, শ্রযুক্ত। সরল গাঙ্গুলী, শ্ৰীযুক্ত বীণাপাণি সেন, শ্ৰীযুক্ত। সরোজবাল চক্ৰবৰ্ত্তী, শ্ৰীযুক্ত পূর্ণেন্দু সেন, শ্ৰীযুক্ত প্রমোদিনী লাল। উপস্থিত সভ্য-সংখ্যা v • άζ | সমিতির বিশেষ লক্ষ্য ছেলেমেয়েদের চরিত্রগঠনের দিকেষাতে তার সত্যিকারের বাঙালী-মহত্ত্বটুকু, ঔদার্ষ্যটুকু গ্রহণ করে আধুনিক কালের সঙ্গে সামঞ্জস্ত রেখে বড় হতে পারে। কেবল তাই নয়, দুঃস্থ ও गशद्रशैनप्रद इ:५९ श्रडार अभन्नाश्नब চেষ্টা এর সাধ্যমত ক’রে থাকেন। সমিতির আয় খুব অধিক নয় ; তা সত্ত্বেও সমিতি কয়েকটি দুঃস্থ আশ্রমে, দুর্ভিক্ষ-ভাণ্ডারে গরিব-দুঃখীর সহায়তায় এপর্য্যস্ত প্রায় তিন শতেরও অধিক টাকা সাহায্য করেছেন । “শেযবর্ষণ" অভিনয়ের প্রধান উদ্দেশ্ব নান হিতকর কাজের জন্ত একটি দান-ভাণ্ডারের স্বাক্ট করা। এই ভাণ্ডার থেকে দিল্লীর বাংলা স্কুলকে সমিতি পাচ শত টাকা দান করেছেন। সমিতির এই সকল প্রচেষ্টা ও উদ্যম সমাজ ও দেশের পক্ষে অতীব হিতকর । আশা করা যায়, এই মহিলা-সমিতিটি উত্তরোত্তর বাঙালীদের একটি মুক্ষরও স্বাস্থ্যকর প্রতিষ্ঠানরূপে পরিগণিত হবে । ঐযামিনীকান্ত সোম