পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৭০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ԾՅՓ প্রবাসী SNలి83 বীরেনবাবু বলিলেন, "কই, এখন অবধি ত এসে পৌছায় নি ।” বিমল বলিল, “আসবে এখন খানিকক্ষণের মধ্যেই সকালে তার নানা হাঙ্গাম, পুজোপালি ঢের করতে হয়, সব শেষ না ক’রে ত বেরতে পারে না ? তা বাজারটা কি এখনই ক’রে দেব, না বিকেলে হ’লে চলবে ?” বীরেনবাবু বলিলেন, “দেখি মাকে জিগগেষ ক’রে শিনি কি বলেন ।” র্তাহার মা বলিলেন, “বাজার বিকেলের মধ্যেই হ’লে চলবে, আমরা রাত্রে তরকারিগুলো কুটে রাখব এখন । তবে মিমুকে এখন নিয়ে এলে হয়, চাল, ডাল, মশলা সব বাছতে হবে আরও কাজ আছে, খানিক ক’রে রাখত, আমিও একটা কথা কইবার লোক পেতাম।” : বিমল বলিল, “তাহলে আপনি আমার সঙ্গে চলুন, আমি একলা গেলে ত হবে না ?” বীরেনবাবু বলিলেন, “ত চল। এখান থেকে গাড়ী ক’রে যাব ? খরচের ত আর শেষ নেই ?” বিমল বলিল, “এখান থেকে ট্রামেই যাই । ওখানে গিয়ে গাড়ীও করা যেতে পারে, আর উনি যদি ট্রামে আসতে আপত্তি না করেন, তাহ’লে ট্রামেই ফেরা যেতে পারে।” বীরেনবাবুর মা বলিলেন, “কাপড়চোপড় নিয়ে আসে যেন, দুদিন থাকতে হবে ত?” বিমল আর বীরেনবাবু বাহির হইয়া পড়িলেন। বোর্ডিঙে পৌঁছিয়া শুনা গেল আজ দেখা করিবার দিন নয়, প্রধান শিক্ষয়িত্রীর অনুমতি ছাড়া দেখা করা যাইবে না। বীরেনবাবু হতাশ হইয়া বলিলেন, “তাহলে কি করা যাবে, বাবা ?” বিমল বলিল, “একখানা চিঠি লিখুন না লেডী প্রিন্সিপ্যালের নামে। লিখুন যে বিশেষ প্রয়োজনে আমরা দেখা করতে এসেছি।” শিক্ষিতা এম্-এ পাস মহিলাকে চিঠি লেখা বীরেনবাবুর চোঁদ পুরুষে অত্যাস নাই। তিনি বলিলেন, “তুমি লিখে দাও, বাবা । আমি না-হয় নামটা সই ক’রে দিচ্ছি।: আমি পাড়াগেয়ে মাচুষ, কি লিখতে কি লিখব।” অগত্য বিমলই চিঠি লিখিয়া দরোয়ানের হাতে ভিতরে পাঠাইয়া দিল । মৃণাল তখন সবে স্নান সারিয়া বাহির হইয়া আসিয়াছে, এমন সময় ছোট একটি মেয়ে আসিয়া বলিল, “তোমার ডাক পড়েছে মিতু-দি, বিভাদির ঘরে ” এখন যে কি কারণে তাহার ডাক পড়িতে পারে তাহা আন্দাজ করিবার চেষ্টা করিতে করিতে মৃণাল বিভাদির ঘরে গিয়া উপস্থিত হইল । প্রধান শিক্ষয়িত্রী স্লেটখানা উচু করিয়া তুলিয়া ধরিয়া মৃণালকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “এদের তুমি চেন ?” মৃণাল বিমলের নাম দেখিয়া অত্যন্ত অবাক হইয়া গেল । বিমল কি কারণে তাহার সঙ্গে দেখা করিতে চায় ? মনের ভিতর তাহার একটা মৃদু পুলকশিহরণ থেলিয়া গেল । শিক্ষয়িত্রীর প্রশ্নের উত্তরে সে বলিল, “হ্যা, চিনি বই কি ? এদের সঙ্গেই আমি এবার কলকাতায় এসেছি ।” বিভাদি বলিলেন, “ও, আচ্ছা, তা হ’লে তুমি দেখ করতে পার।” মৃণালের ভিসিটাস লিষ্ট বলিয়া কোনও পদার্থ ছিল না, তাহার মামা বলিয়া দিয়াছিলেন যে সে নিজের গ্রামের যে কোনও লোকের সঙ্গে দেখা করিতে চাহিবে তাহারই সঙ্গে যেন তাহাকে দেখা করিতে দেওয়া হয় | দেখা করিতে ধাইবার আগে মৃণাল একবার ড্রেসিংরুমে ঘুরিয়া গেল। চুলটা ভাল করিয়া আঁচড়াইয়া লইল । ভিজা চুল বাধিবার উপায় নাই, কাজেই খোলাই রহিল। আধ ময়লা, নিতান্ত বাজে একটা মিলের শাড়ী তাহার পরনে, এইটা পরিয়া বিমলের সামনে বাহির হইতে তাহার ইচ্ছা করিল না। একখানা টকটকে লাল পাড়ের তাতের শাড়ী পরিয়া, চুলটা আর একবার একটু ঠিক করিয়া লইয়া সে ভিসিটাস রুমের দিকে চলিল । ঘরের ভিতর তাহার দুই দর্শনপ্রার্থী বসিয়া । বীরেনবাবুকে ত প্রণাম করিল, কিন্তু বিমল সম্বন্ধে কি করা স্বায় তাহা সে ভাবিয়া পাইল না। সত্য বটে ট্রেনে এক সঙ্গে আসিয়াছে, কিন্তু কথাবার্তা কিছুই সে বিমলের