পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কীৰ্ত্তিক হণের কথা স্তার! তবে ভবিষ্যতে যাতে আর তার ওপর কোন অত্যাচার না হয়— । সাহেব বলিলেন—সামান্ত অত্যাচার যদি হয়, আপনি আমায় সংবাদ দেবেন, আমি তাকে হাতকড়া দিয়ে প্রকাগু ভাবে চালান দেব—আর সাজ ঘাতে হয় তার ব্যবস্থা আমি করব। শুধু সে-লোকটা কেন—যে-কোন লোকের ওপর অত্যাচার হোক আপনি আমায় জানাবেন। এবারও ওকে ঘোষের খুশী করবে, খারিজ এমনি ক’রে দেবে, আর এবারকার খাজনা মাফ দেবে। বিশ্বনাথ সানন্দে মত দিয়া বলিল—আমার কোন অমত নেই ! সাহেব বলিলেন--এ কথা আপনারই যোগ্য। আমি আপনার সম্বন্ধেও খবর নিয়েছি। আপনি খুব বড় বংশের ছেলে, কাজ এবং কথা দুষ্টই আপনার বংশোচিত হয়েছে ! সেই দিনই ব্যাপারটার উপর যবনিক পড়িয়া গেল । বিশ্বনাথ একটা আরামের দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া বাচিল । ীেষবাবুর বিপন্ন হওয়াতে তাহার মনে একটা কাটা যেন বিধিয়াছিল, বার-বার মনে হইয়াছে এত দূর অগ্রসর না হইলেই ভাল হইত। অfর নিশ্চিস্ত হইয়া সে” যাইতে পারিবে সেও একটা বড় আরামের কথা। পরদিনই সে রওনা হইয়া গেল । যাইবার সময় ছয়টি টাকা মায়ের হাতে দিয়া বলিল-সেদিন চার টাকা দিয়েছি—আর এই ছ-টাকা । আমার তো দিন-পনরর বেশী হবে না। এতেই হবে, কেমন ? মা বলিলেন—ষাচ্ছ বাবা, ওখানে একটা কাজকর্শ্বের চেষ্টা দেখো না ! অমূল্যকে বলে ! বিশ্বনাথ বলিল—যে-সে কাজ করতে যে কেমন—। কথাটা সে শেষ করিতে পারিল না, শুধু একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিল । o ঘরের ভিতর হইতে স্ত্রী মন্তব্য প্রকাশ করিলেন–রাজ-. রাজড়ার বংশধরেরা শুনেছি এখন জুতো বেচে খায় ! রাজবংশ ব'লে ত আর কেউ সিংহাসন গড়িয়ে দেবে না ! বিশ্বনাথ ডাকিল-বাণীমা, রাণীম, মণিৰা, ধনিম, টামি, রাঙিম!—ম গো একটি চুমু দাও। রাজপুত্র 8● বাণীমা চুমা দিয়া বলিল—কানে কানে একটা কথা বলি বাৰা ! বিশ্বনাথ ইেট হইয়া মৃেয়ের মুখের উপর কান পাতিয়া দিল, বাণী চুপি চুপি ব}িল—আমার জন্যে এক শিশি আলতা আর সাবান, কেশ। হাসিয়া বিশ্বনাথ বলিল--বেশ । --আর একটি কথা বলি ৰাবা ! আবার বিশ্বনাথ কান পাতিয়া দিল, বাণী বলিল— আর পাউডার—আর স্কার ( স্থাট) শাড়ী, বেশ । " বিশ্বনাথ বুলিল—বেশ ! –এই কাগজে লিখে দিয়েছি বাব| বিশ্বনাথ দেগিল, হিজিবিজি দাগটানা এক টুকরা কাগজ। সে সেটা পকেটে পুরিল। 崙 碑。 * • কলিয়ারীর পয়সা, কুলি হইতে আরম্ভ করিয়া সকলের নিকট হইতেই টাকায় এক পয়সা করিয়া আদায় হইয়া একটা তহবিলে জমা হয়, সে-জমার পরিমাণ যেমন মোটা, দাতার হাজও তেমনি দরাজ । সুতরাং টাকার অভাব ছিল না। বিশ্বনাথ মনোমত করিয়া ষ্টেজ গড়িয়া তুলিল এবং কলিকাতায় প্রথম শ্রেণীর পোষাকওয়ালার নিকট হইতে পোষাক ভাড়ার ব্যবস্থা করিল। নাচগানের জন্য একটা ছেলের দলও ভাড়া করা হইল । অভিনয় মোটের উপর ভাল ন হইলেও মন্দের পর্যায়ে পড়ে না। বিশ্বনাথের আর বিশ্রাম নাই--সে ইহার চুল ঠিক করিয়া দেয়, উহার পোষাকটা একটু শোধরাইয়া দেয়, কখনও দৃশ্যপটের দড়ি টানে, কখনও প্রমূট করে, কখনও ঘণ্ট। মারে, আবার সঙ্গে সঙ্গে দুই-একটা ছোট পাট করিয়া

  • আসিতেছিল।

অমূল্য আসিয়া বলিল—দাদ, সাহেবরা বলছেন নাচগান কই ? দু-একটা নাচগান ঢুকিয়ে দেন না। • বিশ্বনাথ একটু চিস্ত করিয়া বলিল-মাদল আনিয়ে দিতে পার একটা ? কয়লাকুঠি সাওতালেবু রাজ্য—অমূল্য তৎক্ষণাং মাদল আনিবার. বাৰম্বা, করিল। বিশ্বনাথ নাচের ছেলেদের পাওঁার কাছে গিয়া বলিল--সেই সাওতাল-নাচটা একবার দিতে হবে ।