পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৭৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অঙ্গসঞ্চালনক্ষম উদ্ভিদ ও তাহাদের জীবনস্পন্দন শ্রীগোপালচন্দ্র ভট্টাচাৰ্য্য উদ্ভিদ ও প্রাণীর মধ্যে একই জীবনীশক্তি ক্রিয় করিলেও তাহার। ভয়ে ক্রমবিকাশের পথে বিভিন্ন ধারা অনুসরণ করিয়া পৃথিবীতে অভিব্যক্ত হইয়াছে। প্রাণীদেহের অন্ততম প্রধান বৈশিষ্ট্য এই যে, তাঙ্গর বান্তিরের উত্তেজনায় শরীর সঙ্কুচিত করিয়া বা অবস্থবিশেষে চীংকার বা অঙ্গভঙ্গী করিয়া সাড়া দিয়া থাকে । এমিব নামক আণুবীক্ষণিক প্রাণী শরীর প্রসারিত করিয়া চলে ; কিন্তু ১৯াং একটু নাড়া পাইলেই সঙ্কুচিত হইয়৷ বৰ্ত্ত লাকার ধারণ করে। উত্তাপ, শৈত্য, বৈদ্যুতিক প্রবাহ বা কোনরূপ রাসায়নিক পদার্থ প্রয়োগ মাত্রই উহার একই ভাবে শরীর সঙ্কুচিত করিয়া সাড়া দয়, প্রয়োজনের তাগিদে অথবা উত্তেজন প্রয়োগে অঙ্গসঞ্চালনের ক্ষমত দেথিয়াই সাধারণতঃ আমরা প্রাণী ও উদ্ভিদের পার্থক্য বুঝিয়ু থাকি । কিন্তু আমাদের দেশীয় লজ্জাবতী-জাতীয় উদ্ভিদ স্থল-লঞ্জাবতী পাতা মেলিয়া আছে সমূহের অঙ্গসঞ্চালন-ক্ষমতা সৰ্ব্বজনবিদিত । বিভিন্ন অবস্থায় ইঙ্গণের অঙ্গসঞ্চালনের অদ্ভূত ক্ষমতা দেখিলে বিশ্বিত হইতে হয়। ব:িধর আঘাত-উত্তেজনায় ইহার এমন দ্রুত গতিতে অঙ্গসঞ্চালন করি। সাড়া দিয়া থাকে যে অনেক উন্নত শ্রেণীর প্রাণীর মধ্যেও * ক্ষিপ্রতা পরিদৃষ্ট হয় না। এক আকৃত্তিগত পার্থক্য ছাড়া শ্রণির সঙ্গে আর কোন পার্থক্যই সহজে উপলব্ধি হয় না । আমাদের দেশে বনে জঙ্গলে লজ্জাবতী নামে এক ৰোটায় চারটি পাতাওয়ালা এক প্রকার ছোট ছোট গাছ প্রায় সৰ্ব্বত্রই দেখিতে পাওয়া ধৰ্ম্মি । গাছের গায়ে গোলাপ গাছের মত কঁাট ৷ পাতাগুলি লগত ছোট ছোট তেঁতুল-পাতার মত। গুয়র মত পাপড়িপরিপূর্ণ বেণ্ডনে রঙের গোল গোল ফুল ফোটে । একটু স্পর্শ :িসই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পত্রগুলি অতি দ্রুত গতিতে পর পর মুদ্রিত ية و مسسه مb হইয়া যায় । স্পৰ্শজনিত আঘাত একটু বেশী হইলেই ক্ষুদ্র পত্রগুলি মুড়িবার সঙ্গে সঙ্গেই লম্বা লম্ব ৰোটাগুলি ৰূপ ঝুপ করিয়া নীচের দিকে শুইয়া পড়ে। কিছুক্ষণ এই ভাবে থাকিবার পর ধীরে ধীরে আবার পত্র মেলিয়া পূৰ্ব্বাবস্থা প্রাপ্ত হয় । সন্ধ্যাসমাগমে পত্র মুদ্রিত হইলেও আঘাতের ফলে পড়িয় যাওয়ার অবস্থা হইতে তাহার পার্থক্য পরিষ্কার উপলব্ধি হয়। একটু জোরে বাতাস বহিলে, ফু দিলে, বা জলের ফোট পড়িলেও তৎক্ষণাং পত্র মুদ্রিত হইয়া যায়, বাতাসে পাত নড়িয়া পরস্পর ঠোকাঠুকি হইলেও পাত মুদ্রিত হইয়া যায় । কিন্তু অনেকক্ষণ বাতাস বহিতে থাকিলে বা বার বার আঘাত পাওয়ার পর ইহার এমন অসাড় হইয় পড়ে ষে, অল্পসময়ব্যবধানে পুনরায় বাতাস বহিলে বা জোরে আঘাত দিলেও অার সহজে মুদ্রিত হইতে চাহে না । কিন্তু অনেকক্ষণ নিশ্চেষ্ট থাকিবার পর সাড়া দেওয়ার ক্ষমতা পুনঃপ্রাপ্ত হইয়া থাকে। কোন স্থলে সামান্ত একটি পোকায় দংশন করিলেও দেখিতে দেখিতে পত্রগুলি এক দিক হইতে মুদ্রিত হইয়। ৰোটাগুলি ক্রমে স্থল-লজ্জাৰতীর পাত আঘাতের ফলে বুজিয়া গিয়াছে ক্রুমে ঝুপ ঝুপ করিয়া পড়িয়া যাইতে থাকে। সমস্থে সময়ে দেখা যায়, কোথাও কিছু নাই হঠাৎ একটি পাতা মুড়িয়া ৰোটাসমেত কাৎ হইয়া পড়িয়া গেল। আভ্যস্তরিক কোন অস্বস্তির কারণেই বোধ হয় ওরূপ ঘটিয়া থাকে । শত শত গাছ একসঙ্গে জন্মিয়৷ জঙ্গল হইয়া বুহিয়াছে । কাটার ভয়ে তার মধ্যে পা বাড়াইবার জো নাই । হঠাৎ তাহার মধ্যে একটা ঢ়িল ছুড়িলে দেখা যাইবে চক্ষের নিমিষে যেন রঙ্গমঞ্চের পট-পরিবর্তন হইয়া গেল, একটু পূৰ্ব্বেই যেস্থানে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অসংখ্য পত্রাবৃত ঝোপ ছিল, এখন আর সে-সব কিছুই নাই, সব ফাক, কেবল কতকগুলি নেড়। কাঠি যেন এদিক ওদিক ইতস্ততঃ পূড়িয়া রহিয়াছে। ভোজৰাজীর মত স্থানটার চেহার এমনই বেমালুম বদলাইয়া যায়। আত্মরক্ষার