পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৭৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নামরহস্য ঐবিজনবিহারী ভট্টাচার্য, এম-এ কান ছেলের নাম পদ্মলোচন দিলে তাহার দৃষ্টিশক্তি ফিরে না জানিয়াও হয়ত কোন স্নেহান্ধ পিতা চক্ষুহীন পুত্রের এক দিন ঐ নাম দিয়াছিল। সস্তানের বাহিরের অন্ধতা ঢাকিতে গিয়া সে ষে আপনার অস্তরের অন্ধতাই জগতের কাছে প্রকাশ করিতেছে, এ কথা হয়ত সেদিন তাহার মনে উদয় হয় নাই । বস্তুত নাম মামুষের বাহিরের পরিচয় মাত্র । অস্তরের সঙ্গে তাহার কোন সম্বন্ধই নাই, তাই শেক্সপিয়র এক দিন বলিয়াছিলেন, “নামে কি আসে যায় ? গোলাপকে যে নামই দাও না কেন, তাহার গন্ধের কোন তারতম্য হইবে না।” কথাটি নিতান্তই সত্য। গোলাপ-হাসমুহান, মল্লিকমালতী, ডেজি-ড্যাফোডিলকে ক-ক২, খ-খ২, গ’-গই এই রকম নাম দিলে কাজ যে চলে না এমন নয় । বরং কাহারও কাহারও কাজ তাঁহাতে মৃগমই হয়, বিশেষতঃ বৈজ্ঞানিকের। কিন্তু মনুষ্যসমাজে বৈজ্ঞানিক অপেক্ষা অবৈজ্ঞানিকের সংখ্যাই বেশী । তাহারা আবার নামের মধ্যে কোথাও বা মাধুর্ধ এবং কোথাও বা গাম্ভীর্ষ আশা করিয়া বসে। এমন ব্যক্তিও আছেন র্যাহারা পুত্ৰকস্তার নামকরণের জঙ্ক অভিধানের শরণাপন্ন হন । তাঁহাতেও ফল না ফলিলে শেষ পর্যন্ত শিশুটিকে সঙ্গে লইয়া সম্বামিক কবিগুরুর শ্রীচরণ সম্প্রদর্শনে যাত্রা করেন। কবিগুরুর কথাই যখন উঠিল তখন নাম সম্বন্ধে তাহার মতামত কি সেটি বলি । তিনি বলেন— "মামুষের মাধুর্য...সৰ্বাংশে সুগোচর নহে, তাহার মধ্যে অনেকগুলি সূক্ষ্ম সুকুমার সমাবেশে অনিবচনীয়তার উদ্রেক করে। তাহাকে জমির কেবল ইন্দ্রিয় দ্বারা পাই না, কল্পনা দ্বার স্বষ্টি করি। নাম সেই স্বজন কার্যের সহায়তা করে । একবার মনে করিয়া দেখিলেই হয় দ্রৌপদীর নাম যদি উৰ্মিলা হইত তবে সেই পঞ্চবীরপতিগতি ক্ষত্রনারীর দীপ্ত তেজ এই তরুণ কোমল নামটির দ্বারা পদে পদে খণ্ডিত হইত।” কাব্যের নায়ক-নায়িকা বা ক্ষুদ্র বৃহৎ চরিত্রগুলি কবি নিজেই স্থষ্টি করেন। কবি জাহাকে যেমনটি করিয়া আমাদের সম্মুথে ধরিতে চাহেন, ঠিক তেমনটিই ধে আমরা দেখি তাহা নয়। আকৃতি-প্রকৃতির যে বিবরণ দিয়া কবি র্তাহার নায়কের মূর্তি রচনা করেন, আমরা কল্পনার রঙে তাহাকে আর একটু রাঙাইয়া লই। এই সকল ক্ষেত্রে নামও চরিত্রের অন্যতম পরিচয় । অনস্বয় এবং প্রিয়ম্বদা এই দুইটি নাম দিয়াই কবি কালিদাস শকুন্তলার দুই সখীর চূড়ান্ত পরিচয় দিয়াছেন। শাঙ্গ রব ও শারদ্বতের নাম সম্বন্ধেও এই কথাই বলা যায়। কালকেতু, শ্ৰীমন্ত, চন্দ্রশেখর, কপালকুণ্ডল, বিক্রম, স্বমিত্র প্রভৃতি নামগুলিও যথেচ্ছাসঘাত নয়, পরস্তু চিস্তাসম্ভূত। সত্যই রচনার মধ্য দিয়া যে রস পরিবেশন করা হয়, স্বনির্বাচিত নাম তাহার পাত্র-স্বরূপ । কনক-কটোরা আধারহিসাবে নিতান্ত নিন্দনীয় না হইলেও সিরাজি সেবনের পক্ষে পেয়ালাই যে সমধিক প্রশস্ত, একথা ওমর খৈয়াম হইতে অত্যাধুনিক খুনখারাপি গজল গান রচয়িতাগণ পর্যন্ত কেহই অস্বীকার করিতে পারিবেন না । হাস্যরসের ক্ষেত্রে নামের দাম আরও অধিক, সেই জন্ত যেখানে নিমাইচন্দ্রও যথেষ্ট তিক্ত প্রতিপন্ন হন না সেখানে ‘গঙ্গাই’ নামে দ্বিতীয়বার নামকরণ করার প্রয়োজন হয়। কাছেপিঠে না পাইলে অস্তুত বাগবাজারের চৌধুরীদের বাড়ী হইতে শ্ৰীমতী কাদম্বিনী'কে পাপ্তি করিয়া আনাইয়া লইতে श्छ। ‘ब्रनिकषांना'ब्र ब्रनिरूउ ७द९ ‘छीफू मरड'द्र ऊँीफ़ॉर्भि এক শ্রেণীর না হইলেও দুই জনের নামে ও আচরণে হাস্তরসের প্রচুর উপাদান পাওয়া যায়। চিরকুমার সভার এই রসিকদাদা নৃপ ও নীরর জন্ত ষে দুইটি ফাড়ার আয়োজন করিয়াছিলেন র্তাহীদের সহিত আপনাদের অবগুই পরিচয় আছে