পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৮৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভার্গাড় হইতে চৰ্ম্মশালা আচাৰ্য্য শ্রীপ্রফুল্লচন্দ্র রায় প্রায় চল্লিশ-পয়তাল্লিশ বৎসর পূৰ্ব্বে যখন প্রেসিডেন্সি কলেজে রসায়ন-শাস্ত্রের অধ্যাপনা করিতাম তখন ইহার ব্যবহারিক দিক মাহুষের কত উপকারে আসিয়া থাকে এবং তাহা দ্বারা দেশের ধনসম্পদ কত ভাবে বদ্ধিত হয় তাহার উদাহরণ রূপে নানা দৃষ্টান্ত উপস্থিত করিয়া ছাত্রদের সম্মুখে, ধরিতাম। আজ পুনরায় অল্পরূপ একটি বিষয়ের অবতারণা করিতেছি । - কলিকাতায় সাকুলার রোডে, যেখানে আবর্জন ফেলিবার প্ল্যাটফৰ্ম্ম ছিল ( সৌভাগ্যের বিষয় আজ তাহা শহরের বাহিরে গিয়াছে ) সেখানে অনেক সময় গরু, মহিষ, ঘোড়া প্রভৃতি জন্তুর মৃত পূতিগন্ধযুক্ত দেহ স্থূপীকৃত হইয়া পড়িয়া থাকিত। একটি ইংরেজ কোম্পানী কলিকাতা কর্পোরেশনের সহিত এই মৃত জন্তুর দেহগুলি উঠাইয়া লইবার চুক্তি করে। সেই কোম্পানী ধাপাতে এই জন্য বহু লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি কারখানা প্রতিষ্ঠিত করিয়া এই সমস্ত মৃত জন্তুর পূর্ণ ব্যবহারের প্রয়াস পাইতেছে এবং অনেক টাকা আয়ও করিতেছে। তাহারা মৃত জন্তুর চামড়া, হাড়, মাংস, চৰ্ব্বি, শিং, খুর সমস্তই বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পরিষ্কার ভাবে সংগ্ৰহ করিয়া লইতেছে এবং বিক্রয় করিয়া লাভবান হইতেছে। বোম্বাইয়ে এবং অন্ত বড় বড় শহরেও এই প্রকার মৃত জ্বস্তুর সদ্ব্যবহারের জন্য কারখানা রহিয়াছে। কিন্তু এগুলি সমস্তই বিদেশীদের সম্পত্তি। দেশী এই প্রকার কোন কারখানা আছে কিনা অবগত নহি । আমাদের দেশে এত অর্থব্যয় করিয়৷ এইরূপ নোংরা জিনিষের কারখানা প্রতিষ্ঠা করার দিকে লোকের মনও আকৃষ্ট হয় না। প্রায় তিন বৎসর হইল খাদি-প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা কর্মপ্রবর ক্রযুক্ত সতীশচন্দ্র দাসগুপ্তের দৃষ্টি এই দিকে আৰ্কষ্ট হয়। হরিজন-সেবার কাজে আত্মনিয়োগ করায় মুচি, চামার, ডোমদের সহিত ঘনিষ্ঠ সংশ্রবে অসিয়া তিনি উপলব্ধি করেন—ইহাদের সেবা করার একমাত্র পথই হইতেছে ইহাদের কাজকে মৰ্য্যাদা দেওয়া, ইহাদের কাজকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন মুঠু বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মৃতপশুশাল, হাবড় নিয়মিত করা। এই উদ্দেশ্য লইয়া তিনি পরীক্ষা আরম্ভ করেন এবং ছোট শহরে, গ্রামে হরিজনের যাহাতে মৃত জস্তুর পূর্ণ উপয়োগ করিতে পারে, তাহা শিক্ষা দিবার জন্য দুইটি শিক্ষাশালা প্রতিষ্ঠিত করেন। প্রথম, হাবড়া মিউনিসিপ্যালিটি হইতে বাৎসরিক ৩,০০০ টাকায় উহার ভাগাড় ইজারা লইয়া সতীশবাবু “মৃতপশুশালা” প্রতিষ্ঠা করিয়াছেন ; দ্বিতীয়, ধাপার নিকটে ট্যাংরায় চামড়া-পাকাই শিক্ষা দেওয়ার জন্য “কুটীর চৰ্ম্মকারুশালা” প্রতিষ্ঠা করিয়াছেন। খাদি-প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে, গ্রামোন্নয়ন নামে একটি দাতব্য ট্রাষ্ট্র সংগঠন করিয়া এই প্রতিষ্ঠান