পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৮৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রবাসী SN988 কুটার চৰ্ম্মকারুশালায় তাতে চালানে গ্লেজিং যন্ত্রে চামড়া গ্লেজ করা হইতেছে লইয়। যাওয়া মাত্রই চামড় থালাইয়া লওয়া হয় ৷ হাড়মাংস কাটিয়া গণ্ড খণ্ড করা হয় । নাড়ীভূড়ি পরিষ্কার করিয় ফেলা হয় । চামড়া পরিষ্কার করিয়া ধুইয়। লবণ দিয়া রাখা হয়। কিছু কিছু চামড় বিক্রয় করা হয় । অবশিষ্ট ক্রোম-ট্যান করার জন্য পূৰ্ব্বোল্লিখিত কুটার চৰ্ম্মকারুশালাতে পাঠান হয় ৷ হাড়-মাংস তাজা অবস্থাতেই অর্থাৎ পচনের পূৰ্ব্বেই সিদ্ধ করা হয় । অনেক ক্ষণ সিদ্ধ করার ফলে হাড়-মাংস পৃথক হইয়া যায়। চৰ্ব্বিও জলের উপরে ভাসিতে থাকে । তখন চর্লিট তুলিয়া লওয়া হয় এবং হাড়-মাংস আলাদা করিয়া শুকাইয়া ফেলা হয়। সাধারণতঃ রৌদ্রে শুকান সম্ভব হয় না বলিয়া আগুনের উপর বড় বড় পাত্রে করিয়া ভাজিয়া শুকান হয় । এই শুষ্ক হাড়-মাংস ঢেকিতে গুড়া করিয়া মহামুল্য সারে পরিণত করা হয়। বৰ্ত্তমানে পেষণযন্ত্রে ( Disintegratorএ ) হাড়-মাংস গুড়া করিবার ব্যবস্থা করা হইয়াছে । গ্রামে গ্রামে অবশ্যই ঢেকিতে গুড়া করার ব্যবস্থা সহজেই হইতে পারে। ঢেকিতে হাড় গুড় করা কঠিন, কিন্তু সামান্য পুড়াইয়া লইলে সহজেই গুড়া করা যায়। পরীক্ষা করিয়া দেখা গিয়াছে, এই গুড়ানো মাংসে শতকরা ১১-১২ ভাগ নাইট্রোজেন আছে। হাড়ে শতকরা ২১-২২ ভাগ ফসফেট আছে। জমির পক্ষে এইগুলি অত্যন্ত মূল্যবান সার। হাড়-মাংস সিদ্ধ করিয়া প্রাপ্ত চল্লি রিফাইন করিয়ু উহা সাবানপ্রস্তুতকারকদের নিকট বিক্রয় হয়। সোদপুর খাদিপ্রতিষ্ঠান কলাশালায় ব্যবহারের জন্য আবশ্যক সাবানও উহা হইতে তৈরি করিয়! লওয়া হয়। শিং ও খুর সাধারণতঃ পৃথক ভাবে বিক্রয় করা হয় । খুর অনেক সময়ে হাড়ের সহিত গুড়া করিয়া সারে পরিণত করা হয়। মহিষের শিং দ্বারা চিরুণী, বোতাম, ছুরির বাট, কলমের হোল্ডার প্রভৃতি তৈরি করা যাইতে পারে । পরিণতদেহ গরু বা মহিষের পৃষ্ঠদেশে ঠিক চামড়ার নীচেকার স্থানের লম্ব অংশ কাটিয় লওয়া হয়—এগুলিকে “পুঠ” বলে । ইহা দ্বারা তাত (gut) তৈরি হয়। সোদপুর কলাশালায় পুঠ হইতে তাত তৈরি শিক্ষা দেওয়া হইতেছে । চুলসমেত লেজ গুলিও পরিষ্কার করিয়া শুকাইয়া বিক্রয় করা হয় । এখানে হাতে-কলমে শিক্ষা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই সমস্ত দ্রব্যের ব্যবসায়িক দিকও দেখা হয়। এই শিক্ষণশালা সম্পূর্ণ স্বাবলম্বী ভাবে চলিতেছে । ভাগাড়ের কল্পনাতেই আমাদের দেহমন অ্যাংকাইয়া, উঠে। মুঠ পশুর উপয়োগ করিবার জন্য খাল খালাইবার অথবা হাড়-মাংস সিদ্ধ বা গুড় করার কথা অনেকের কাছেই ন্যকারজনক । ১৮৩৫ খ্ৰীষ্টাব্দে মেডিক্যাল কলেজ স্থাপিত হুইবার পর মধুসূদন গুপ্ত প্রথম শবব্যবচ্ছেদ করেন ও সমস্ত দেশে হুলস্থল পড়িয়া যায়, এমন কি ফোর্ট উইলিয়ম হইতে তোপধ্বনি করিয়া তাহাকে সম্বৰ্দ্ধিত করা হয় । তদবধি আজ পর্য্যন্ত শত শত কেন সহস্ৰ সহস্র উচ্চ বর্ণের শিক্ষিত যুবক শবব্যবচ্ছেদ করিতে বিন্দুমাত্র ইতস্তত: করেন না । আমি জিজ্ঞাসা করি, পূতিগন্ধময় নরদেহ অপেক্ষ গরু-মহিষ-ছাগলের মৃতদেহ কি হিসাবে অস্পৃশ্য মনে হয় ? ' হাবড়ার ভাগাড় সতীশবাবুর হাতে আসিবার পূৰ্ব্বে ষে-অবস্থায় ছিল, তাহাতে কখনও যে উহ! পরিষ্কৃত হইয়ালোকের ৱাসোপযোগী হইতে পারে তাহা কল্পনাও করা যায় নাই। কিন্তু সতীশবাবু নিজে ওখানে দিবারাত্র থাকিয়া ও কৰ্ম্মীদের সাহস ও উৎসাহ দিয়া উহা এরূপ মুন্দর পরিষ্কৃত স্থানে পরিণত করিয়াছেন যে এক্ষণে উছা