পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৮৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

t=S_o প্রবাসী SS88 বসন্তোৎসবের সরল নিরাড়ম্বর প্রচেষ্টায় উচ্ছসিত আনন্দের সহিত আমার মন এক হইয়া গেল । সে আমার জীবনের এক পরম বিচিত্র মুহূৰ্ত্ত। কত ক্ষণ দাড়াইয়া আছি, দু-একটা নক্ষত্র উঠিল মাথার ওপরকার সেই নীল আকাশের ফালিটুকুতে, সন্ধ্যার অন্ধকার ঘনাইয়া আসিল চারি দিকে, এমন সময় ঘোড়ার পায়ের শব্দে চমকাইয়া উঠিয়া দেখি আমীন পূরণটাদ নাগ বইহারের পশ্চিম সীমানায় জরীপের কাজ শেষ করিয়া কাছারি ফিরিতেছে। আমায় দেখিয়া ঘোড়া হইতে নামিয়া বলিল—হুজুর এখানে ? তাহাকে বলিলাম বেড়াইতে আসিয়াছি। সে বলিল—একা এখানে থাকবেন না সন্ধ্যাবেলা, চলুন কাছারিতে। জায়গাটা ভাল নয়, এখানেই সেদিন বাঘ বেরিয়েছিল। আমার টিগুেল স্বচক্ষে দেখেছে হুজুর। খুব বড় বাঘ, ওধারের ওই কাশের জঙ্গলে । পৰ্ব্বতের সীমানা পৰ্য্যন্ত সব জায়গায় গরু বাছুর মারে। আমুন, হুজুর। পিছনে অনেক দূরে পূরণটাদের টিগুেল গান ধরিয়াছে – लग्नां ¢शझे छौ সেই দিন হইতে ঐ কাটার ফুল দেখিলেই আমার মন হু হু করিয়া উঠিত বাংলা দেশের জন্যে। এ কোন দেশে আছি ! যেখানে বসন্তের সম্বল মাত্র এই কাটার ফুলগুলি! আর ঠিক কি পূরণটাদের টিণ্ডেল ছটু লাল প্রতি সন্ধ্যায় নিজের ঘরে রুটি সেকিতে সেকিতে ঐ গানই গাহিবে! मघ्नां ८शंझे छौ এই যে-দেশের বসন্ত, সেখান হইতে কবে উদ্ধার পাইব ? আসন্ন ফাঙ্কন-বেলায় আম্ৰবউলের গন্ধভর ছায়ায় শিমুলফুলফোটা নদীচরের এপারে দাড়াইয়া কোকিলের কুজন শুনিবার স্বযোগ এ জীবনে বুঝি আর মিলিবে না, এই বনেই বেঘোরে বাঘ বা বন্যমহিষের হাতে কোন দিন প্রাণ হারাইতে হইবে।” বনঝাউ বন তেমনই স্থির হইয়া দাড়াইয়া থাকিত, দূর বনলীন দিশ্বলয় তেমনই ধূসর, উদাসীন দেখাইত । এমনি এক দেশের জন্য মন-কেমন-করা দিনে রাসবিহারী সিংহের বাড়ী হইতে হোলির নিমন্ত্রণ পাইলাম। রাসবিহারী সিং এ-অঞ্চলের দুৰ্দ্দাস্ত মহাজন, জাতিতে রাজপুত, কারো নদীর তীরবর্তী গবর্ণমেণ্ট খাসমহলের প্রজা । তাহার গ্রাম কাছারি হইতে ১২১৪ মাইল উত্তরপূর্ব কোণে, মোহনপুরা রিজার্ভ ফরেষ্টের গায়ে । নিমন্ত্রণ না রাখিলেও ভাল দেখায় না, কিন্তু রাসবিহারী সিংয়ের বাড়ীতে যাইতে আমার নিতান্ত অনিচ্ছা । এঅঞ্চলের যত গরিব দুঃস্থ গাঙ্গোতী-জাতীয় প্রজার মহাজন হইল সে। গরিবকে মারিয়া তাদের রক্ত চুষিয়া নিজে বড়লোক হইয়াছে। তাহার কড়া শাসন ও অত্যাচারে কাহারও টু শব্দটি করিবার ষো নাই। বেতন বা জমিতোগী লাঠিয়াল পাইকের দল লাঠিহাতে সৰ্ব্বদা ঘুরিতেছে, ধরিয়া আনিতে বলিলে বাধিয়া আনিয়া হাজির করিবে । যদি কোন রকমে রাসবিহারীর মনে হইল অমুক বিষয়ে অমুক তাহাকে যথেষ্ট মৰ্য্যাদা দেয় নাই বা তাহার প্রাপ্য সম্মান ক্ষুঃ করিয়াছে, তাহা হইলে সে হতভাগ্যের আর রক্ষা নাই । রাসবিহারী সিং ছলে বলে কৌশলে তাহাকে জব্দ করিয়া, রীতিমত শিক্ষা দিয়া ছাড়িবেই। আমি আসিয়া দেখি রাসবিহারী সিংই এদেশের রাজ । তাহার কথায় গরিব গৃহস্থ প্রজা থরহরি কাপে, অপেক্ষাকৃত অবস্থাপন্ন লোকেও কিছু বলিতে সাহস করে না, কেনন। রাসবিহারীর লাঠিয়াল-দল বিশেষ দুৰ্দ্দান্ত, মারধর দাঙ্গাহাঙ্গামায় তাহারা বিশেষ পটু। পুলিসও নাকি রাসবিহারীর হাতে আছে। খাসমহালের সার্কেল অফিসার বা ম্যানেজার আসিয়া রাসবিহারী সিংয়ের বাড়ীতে আতিথ্য গ্রহণ করেন । এ অবস্থায় সে কাহাকে গ্রাহ করিবে এ জঙ্গলের মধ্যে ? © আমার প্রথার উপর রাসবিহারী সিং প্রভুত্ব জাহির করিবার চেষ্টা-করে—তাহাতে আমি বাধা দিই। আমি স্পষ্ট জানাইয়া দিই, তোমাদের নিজেদের এলাকার মধ্যে ৰা হয় করিও, কিন্তু আমার মহালের কোনও প্রজার