পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২২৩৪ যেন একটু আত্মীয়ের মত, যেন বিশেষ করিয়া স্বধারই উদেশে বলা। তাহাদের বাড়ীতে ইতিপূৰ্ব্বে তপন আসে নাই ; আচ্ছা যদি স্বধা তপনকে এক দিন এ-বাড়ীতে নিমন্ত্রণ করে, তবে কি তপন কিছু মনে করিবে ? আসিলে সে স্বধার কাছে মস্ত একটা কাজের ভবিষ্যৎ আশায়ই নিশ্চয় আসিবে, কিন্তু যখন দেখিবে স্বধী কোন কাজই করিবার স্পষ্ট আশা দিতেছে না, কেবল চা খাওয়াইয় গান শুনাইয়৷ বিদায় দিল, তখন স্বধাকে কি একটা অপদার্থই ন জানি সে মনে করিবে। ভয়ে ভয়ে স্বধার সঙ্কল্প মনেই শুকাইয় যাইত। কিন্তু তবু মন হইতে এ চিস্তাকে সে সরাইতে পারিত না। তপন কি দেশের সেবা ছাড়া জীবনে আর কোন কথা ভাবে না ? মানুষ ষে মামুষের সঙ্গ খুজিয়া বেড়ায়, মামুষের বন্ধুত্বের জন্য ব্যাকুল হইয় ওঠে, সেই অতি সাধারণ মানব-ধৰ্ম্ম কি তপনের মধ্যে নাই ? যদি না থাকে তবে সে গানের স্বরের ভিতর দিয়া মানুষের প্রাণের কথাকে এমন করিয়া ব্যক্ত করে কি করিয়া ? কেন ঐ বিষাদ-মধুর গানগুলিই তাহার কণ্ঠে এমন অপূৰ্ব্ব হইয়া ধ্বনিয়া ওঠে ? কেন সে জ্ঞানবৃদ্ধ ঋষিদের সন্ধানে না ঘুরিয়া তাহাদের এই ক্ষুদ্র সান্ধ্যসভার তুচ্ছ হাসিগল্প হাল্কা কথার মাঝখানে এমন করিয়া জমিয়া যায় ? সেখানে তপন ত মহেন্দ্রের মত গুরুগম্ভীর কথা বলিয়া আপনার মধ্যাদা বৃদ্ধির কোন চেষ্টা করে না । স্বধারা যতই সাধারণ মানুষ হউক না কেন, বোধ হয় তাহাদের সঙ্গ তপনের নিতান্ত মন্দ লাগে না। কিন্তু ঠিক যে কতটুকু ভাল লাগে, মনের কোন কোণে কোন বন্ধুর জন্ত তাহার কত খানি স্থান আছে তাহা ত কিছু বোঝা যায় না। ভাবিতে ভাবিতে আপনার উপর স্বধার করুণা হয় । এই মাত্র অল্প কিছু দিন আগেই হৈমন্তীর উদাস মনোভাব চিন্তামগ্ন দৃষ্টি দেখিয়া স্বধার অভিমান হইত, কেন তাer মনের বেদনার কথা সে স্বধাকে বলে না, কেন সে বন্ধুর সমবেদনার মাঝখানে আপনার বিবাদের বোঝা নামাইম ফেলিয়া মুক্ত হইতে চায় না। আর আজ স্বধাও কি তাহাই করিতেছে না ? সে ত আরোই বেশী করিতেছে। সপ্তাহাস্তে হৈমষ্ঠীর কাছে যখন সে যায় তখন তাহার অর্ধেকের বেশী মন পড়িয়া থাকে হৈমষ্ঠীর চেয়ে অনেক প্রবাসী ১৩৪৪ দূরে। অথচ হৈমন্ত্রী মনে করে মৃধা বুঝি শুধু তাহারই জন্য আকুল আগ্রহে এত দূর ছুটিয়া আসিয়াছে । কি জানি স্বধার ইহা ন্যায়সঙ্গত কাজ হইতেছে কি না । স্বধ ঠিক করিল একটুখানি কিছু কাজ করিয়া তপনের বন্ধুত্ব লাভের যোগ্যতা তাহাকে অর্জন করিতে হইবে । এই কলিকাতা শহরে ঘরে বসিয়া বাহিরেব কিছু কাজও কি করা যায় না ? নিশ্চয় যায় । সুধা ও শিবু মিলিয়া তাঙ্গদের বাড়ীর চারতলার চিলেকোঠায় একট পাঠশালা খুলিবে । ননীর মায়ের ছোট মেয়ে ফেমি আর মেখরাণীর মেয়ে কুসি ত রোজ দুই বেলা তাঙ্গদের বাড়ী অাসে । এই মেয়ে দুইটাকে লইয়া কাঞ্জ স্বয় বেশ করা যায় । ইহাদের বর্ণপরিচয় ও ভদ্রতা শিক্ষা দিতে পারিলে পৃথিবীপ দুইটা মানুষের ত উপকার করা হয়। স্বধা সামান্ত মানুষ । তাহার পক্ষে ইহাই যথেষ্ট মা হঠলেও কিছু ত বটে ! শিবু স্কুল হইতে আসিয় খাওয়-দাওয়া সারিয়া মস্ত দুখান খাতায় পৃথিবীর নানা দেশের ষ্ট্যাম্প শুশুম্বল করিয়া সাজাইতে ব্যস্ত ছিল । সুধাকে সে বলিয়াছিল তাহার বন্ধুবান্ধবদের নিকট হইতে কিছু কিছু ষ্ট্যাম্প যোগাড় করিয়া দিতে। স্বধা এত দিন গা করে নাই। আজ সে অকস্মাৎ বলিল, “শিবু, তুই যদি ভাই, আমার একটা কাজ করে দিস ত আমি তোকে অনেক ষ্ট্যাম্প এনে দেব।" শিবু বলিল, “কি কাজ ? মার্কেটে সাত বার জুতো বদলাতে যেতে হবে, না ফ্লস সিন্ধ এনে দিতে হবে, না ধোপা নাপিত কাউকে চাটি মারতে হবে ? শেষের কাজট বললেই পারব, অন্তগুলো হ’লে একটু দেরী হবে ।” স্বধা হাসিয়া বলিল, “না বাপু মা, আমার জুতো এই সবে গত মাসে কিনেছি আর ফ্লস সিদ্ধ জন্মদিনে এক বান্ম পেয়েছিলাম গত বার। ও সব চাই না। ধোপাকে তুমি যদি টাটি মারতে ভালবাস আমার আপত্তি নেই, ও ভীষণ জালাচ্ছে। কিন্তু তা ছাড়াও আর একটা কাজ আছে । আমাদের চারতলার টিনের ঘরে আমি একটা পাঠশালা করব হথায় তিন সদ্ধা। তাতে ফেনি জার ফুসি প্রথম ছাত্রী। তুষ্ট যদি আমাকে একটু সাহায্য করিস ও একটু कांछ झग्न ।” শিবু নাকট সিটকাষ্টয় বলিল, “রা—ম—চ–ঞ্জ ।