পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্রশৰe বাসা-ৰদল ��‰ው ভাব, বললে, “তুমি ষে সত্যি এ বাড়ী ছেড়ে যাবে, এমন কথা ভাবি নি বৌদি। কাঞ্চন লক্ষ্মীকে জড়িয়ে ধরল, বললে, “তোমার বিয়ের সময় নেমস্তয় ক’রে, আসব ঠাকুরঝি ' বাড়ীওয়াল-গিৰী সেই কথাই ভাবছেন, বললেন, ‘তুমি যাচ্ছ যাও বৌম, কিন্তু এ ভাড়া তুলে দিয়ে ঐ বাবে টাকাতেই আবার নিয়ে আসব তোমায়, তখন কিন্তু না বলতে পারবে না ।" কাঞ্চন জবাব দিলে, ‘না বলবো, আমি ত তাহ’লে বেঁচে যাই ।‘ কোণে একটা ছোট টুল ছিল, সেই টুলথানার ওপর বসে ঘরের চার দিকটা তাকিয়ে দেখলাম, ঘরটা সম্পূর্ণ খালি হয়ে গেছে। পূব দিকের জানলার কাছে তত্ত্বপোষটা ছিল, সেটা পাঠিয়ে দিয়েছি। তার পায়ার তলাধু সঙ্গতি রক্ষার জন্ত ধে ইটগুলো ছিল, সেগুলো প'ড়ে আছে । আজ এত বড় অসঙ্গতির দিনেও ওরা স্থতির সঙ্গতিটুকু রক্ষা করছে। ইটের ফাকে ফাকে কাঠের টুকরো দেওয়া ছিল, সেগুলো পৰ্য্যস্ত ঠিক আছে। আলমারির চারটে পায়ার ছাপ এখনও সুস্পষ্ট । সামনের দেয়ালে একটা দেয়ালগিরি টাঙানে থাকত, তার ভূযোর ছাপটুকু ঠিক শিল্পীর তুলির আঁচড়ের মত দেখাচ্ছে—ঐ দিকে চেয়ে কেমন একটা মায়া হয় । দোরের সামনের দেয়ালে একখানা রাধাকৃষ্ণের বাধানো ছবি ছিল, সেখানে পেরেকের দাগগুলো দেখা যাচ্ছে। কি বিরাট শূন্ততা । কাল সক্ষ্যের সময়ও এসে দেখেছি, সমস্ত পরিপূর্ণ। সংসারের প্রতি খুটিনাটি বস্তুটিই ঘর জুড়ে আছে।--রিকশওয়ালা অনেক ক্ষণ দাড়িয়ে আছে, ঘটির আওয়াজে তার তাগাদার কথা বোঝা যায়। বাইরে বেরিয়ে কাঞ্চনকে বললাম, "আর দেরি ক'রো না, চল ৷" কাঞ্চন বলল, "দাড়াও, রান্নাঘরটা দেখে আসি ' বললাম, ‘আমি দেখছি, তুমি বরঞ্চ এ-ধরটা একবার দেখে নাওঁ । রান্নাঘরে ঢুকলাম। আজ ষ্টোণ্ডে রান্না হয়েছে, কাজেই রান্নাঘর পরিষ্কার। উনানের শিকগুলো খুলে নিয়েছে, উনানটা দিয়েছে ভেঙে। এদিক থেকে ওদিক পৰ্য্যস্ত তাকিয়ে দেখলাম, কোথাও এডটুকু জিনিষ পড়ে নেই, সমস্ত ও খুঁটিয়ে কাঞ্চন তুলে নিয়ে গেছে। ঘরের চৌকাঠ ডিঙিয়ে যেন বেরুতে ইচ্ছে করে না। মনে হয় ঐখানটায় আসন নিয়ে বসে পড়ি, যেমন ক'রে কাল রাত্তিরেও বসে জাহার শেষ করেছি । ...দোরের কাছে সবাই ঘিরে দাড়াল। রম, লক্ষ্মী, কল্যাণী, বিন্দু এরা সব কাঞ্চনের পায়ের ধুলো নিলে । কাঞ্চন তাদের সবাইকে জড়িয়ে ধ'রে নিবিড় আলিঙ্গন করলে। এইবার বাড়ীওয়াল-গিরীর পায়ের ধুলো নিয়ে কাঞ্চন উঠে দাড়াল, তারও চোখদুটো ছল ছল ক’রে উঠেছে। ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের কোলে তুলে আদর ক'রে কাঞ্চন পেছন ফিরল । আঁচলে টান পড়তেই কাঞ্চন ফিরে দেখে লক্ষ্মী তার স্বাচলটা ধরে আছে, চোখদুটো তার জলে ভ'রে গেছে । গলাটা জড়িয়ে ধ'রে কাঞ্চন বললে, “fছ, কাদে না ।’ লক্ষ্মীর চোখ দিয়ে ফোট ফোট৷ জল গড়িয়ে পড়ল। কাঞ্চন আঁচল দিয়ে চোখ মুছিয়ে দিতে দিতে বললে, ‘আবার আসব, তোমার বিয়ের সময় তিন দিন থাকব, খবর দিও।' যাবে ব'লে পা বাড়িয়েছে, এমন সময় পুটু কোথা থেকে ছুটে এসে বৌদির পায়ে মাখাটা লুটিয়ে দিলে। ‘খাক, খুব হয়েছে, পুটুরাণী—বলে কাঞ্চন কোলে তুলে চুমু খেলে। তাড়া দিয়ে বললাম, 'বড় দেরি হয়ে যাচ্ছে ।" ‘ই হয়ে গেছে—কাঞ্চন এসে রিকৃশয় উঠল। রিকৃশখানা গলি পার হ’ল, তখনও কিন্তু ওরা দোরের কাছে মুখ বাড়িয়ে আছে দেখলাম । কাঞ্চন বললে, “সব জিনিষ আনা হয়েছে, কিছু ফেলে জাসি নি ত ? জবাব দিলাম, ভুলে আসবার ষো আছে কি, উনানের শিক্ষগুলো পৰ্যন্ত খুলে এনেছ তো দেখলাম...আচ্ছ উনানট আমন ক’রে ভেঙে গুড়িয়ে দিলে কেন, না ভাঙলে ধারা আসছে ওদের অস্তুতঃ কাজে লাগত ' কাঞ্চন জবাব দিলে, “তা বুঝি রাখতে আছে।" ‘কেন রাখতে নেই ? "কেন, ধা রাখতে নেই, তা নেই।' জানে । এই ত সবে তার তিন বছর বিয়ে হয়েছে । কাঞ্চনের সঙ্গে কথা কইতে কইতে একটু আগে শুর বিদায়ের দৃশুটার কথা মনে পড়ল। কতক্ষশ, বোধ হয় কাঞ্চল এত