পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আণশ্বিন সুকুমার বললে—কল্যাণী ! কল্যাণী অমন করছ কেন ? ঘুম আসছে না 7 ঘুমোও না। - কল্যাণী খানিকক্ষণ চুপ ক’রে রইল। তার পর বললে— কি বললে । ঘুম ঘুম আসছে না আমার। আমি ঘুমতে চাই নে। আমায় কে যেন ড্রাকৃছে । —কে ? কে ডাকৃছে কল্যাণী ? কল্যাণী ফ্যাল ফ্যাল ক’রে থানিকক্ষণ তাকিয়ে রইল। বললে—-কে –কে ডাকছে তা ত জানি নে—ঐ বৃষ্টির শব্দ, আকাশের বিদ্যুৎ, তারাভর নিশীথ-রাত্রির অবগুণ্ঠন সবাই ডাকছে, ঐ দেথ হাত বাড়িয়ে সবাই বলছে— আয় আয় । —কোথাও কিছুই ত নেই—তুমি ঘুমোও। বাইরে বঞ্জের শব্দ হ’ল— —ঘুম আমার আসছে ম—ঐ শোন সবাই মিলে আমাকে নিতে এসেছেন, আমি যাই। —কোথায় যাবে ? কল্যাণী, অমন করছ কেন । সুকুমার চীৎকার ক’রে ডাকল ম—ম, মিষ্ট ! কল্যাণী ব’লে চলেছে—আমি যাব । আমায় ছেড়ে 阿s 1 —কোথায় যাবে ? —ঐ বর্ষার কাছে । শুনছ না আমায় ডাকছে ? ব’লে গুন গুন ক’রে গান আরম্ভ করল— ডাকিছে মেঘ, ডকিছে হাওঁয়, সময় গেলে হবে না যাওয়৷ • • • •••কল্যাণীর গায়ে যেন নববঙ্গ এসেছে—সে বসবেই— মা ঘরে এলেন –কি রে ? —ভুল বকছে। কল্যাণী বলতে লাগল-তুল ! সব ভুল—ম তুমি জানলাটা একবার খুলে দাও, ওগো তোমার পায়ে পড়ি, জানলাটা খোল একবার। একটিবার খোল জানলাটা, কল্যাণী স্বকুমারের দিকে তাকিয়ে অনুরোধের স্বরে বলল— একটিবার খোল, আর বলব না। খোল—আমি ধাইরের স্বত্যমুখর বর্ষাকে দেখতে চাই-দেখতে চাই তার রূপ, উঠে মেঘক ত্যা Նաo(Թ তার অপরূপ বিচিত্র বিকাশ, যে বিকাশের পায়ে পায়ে স্থর আর ছন—খুলে দাও না। কল্যাণী আবার উঠতে চেষ্ট করল। মা বললেন— খোল না একবার, অমন করছে যথন । স্বকুমার মায়ের দিকে তাকাল । তার পর কল্যাণীর দিকে ফিরে বলল—বেশ খুলছি, কিন্তু খুলেই বদ্ধ করব। কাপড়-চোপড় ভাল করে গায়ে দাও । —খুলবে সত্যি, শিশুর মত কল্যাণী খুশী হয়ে উঠল— এই দেখ আমি সব ভাল ক’রে গায়ে দিয়েছি" স্বকুমার জানলাটা খুলল । খুলতেই বাইরের এক ঝলক হাওয়া আর বৃষ্টি এসে ছাপিয়ে পড়ল ঘরের মধ্যে। কল্যাণী আয়াসে চোখট একটু বুজল— আঃ ! আমি যাই । ওগো তুমি কাছে এস —বলতে বলতে কল্যাণী স্বকুমারের পায়ের উপর মাথা রেখে পড়ে গেল । ততক্ষণে নিরবয়ব দেহে মৃত্যু সম্মুখে এসে দাড়িয়েছে। সেই থেকে সুকুমার বর্ষাকে ভয় করে । - আজকের এই নিৰ্ম্মেঘ আকাশ তাই ওর শুল-ভ্ৰামছে । ক'দিন ধরে ছিল অনবরত বৃষ্টি, এ নি র-মান একটুকুও শাস্তি ছিল না। ও যেন দেখতে পায় কল্যাণী তার কালো চুল মেলে বর্ষার সঙ্গে সঙ্গে নামতে থাকে। অাজকের এই বর্ষাবিহীন নিৰ্ম্মেঘ আকাশের দিকে তাকিয়ে সে বেশ আরামে দাড়িয়েছিল। হঠাৎ স্বকুমার দেখতে পেল এক খণ্ড কালে মেঘ এগিয়ে আসছে—গুহপ্রাঙ্গণের করবী-বীথি হাওয়ায় কেঁপে কেঁপে স্কুলে উঠল, বকুল গাছটা বর্ষার আগমনীতে যেন বিহবল পুলকিত হয়ে উঠেছে। ঝর ঝর করে মেঘমালা গলে গলে মুক্তাবিন্দুর মত টুপ টুপ করে পড়তে স্বরু করল। বাইরে চলেছে রীতিমত বর্ষার গান। চারি দিকে যেন শুধু কল্যাণীর প্রতিকৃতি, তারই রূপ, তারই স্বর। . مم. جه * স্বকুমার চীৎকার ক'রে উঠল—ওরে জানলাটা বন্ধ । করে দে, ওরে জানলাটা বদ্ধ কর শীগগির। কে কোথায় আছিস বন্ধ কর জানলা ।