পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

۵ نخسb প্রবণসী ১৩৪৪ ডিমের খোলার আশেপাশে পড়িয়া রহিয়াছে। সাধারণ পাইথনের বাচ্চা হইতে এগুলি অপেক্ষাকৃত বড় ও ভারী ছিল । পরে আর একটি পোষ পাইথনের বাচ্চ হইয়াছিল, সেগুলি এত বড় ও ভারী হয় নাই । ডিম ফুটিয়া বাহির হইবার পর চাইতে ইহারা নিজেরাই নিজেদের ব্যবস্থা করিয়া লয়। এই দুইটি পাইথনের মধ্যে প্রথমটির বাচ্চাগুলির স্বাভাবিক সংস্কার অতি শীঘ্রই আত্মপ্রকাশ করিয়াছিল—তাহাদের কাছে একটু হাত নাড়িলেই রাগে ফুলিয়৷ উঠিয়া পরিণত সাপের মতই ছোবল মারিত । দ্বিতীয়টির বাচ্চাগুলি অপেক্ষাকৃত ঠাণ্ড মেজাজের ছিল । তাছাদের মধ্য হইতেই একটাকে বাছিয়া রাখলাম। এই বাচ্চাটাকেই পরে বেঞ্জামিন-নাম দিয়াছিলাম। এইগুলি পুষিবার এক অসুবিধা— ইহারা যখন-তখন কামড়াইতে চেষ্টা করে ; কিন্তু এই বাচ্চাগুলির দাত এত ছোট যে চামড় বিদ্ধ করিয়া আর বেশী দূর বসিতে পারে না । দুইটি পাইথনের এই চল্লিশটি বাচ্চাকে প্রতিদিন আহার জাগান সহজ ব্যাপার মতে—কাজেই ডজন-খানেক বাচ্চ রাখিয়া বাকীগুলিকে বোতলে ভরিয়া সুরক্ষিত করা হইল । দুই তিন দিন পর্য্যস্ত অতি সস্তপণে এইগুলিকে কাধে, পিঠে মাথায় চড়াইবার ফলে দেখা গেল যে ইহাদের হিংস্র স্বভাব অনেকটা দূর হইয়াছে। দু-চারটা কামড় যে আমরা খাই নাই তাহা নহে ; কিন্তু তাহাতে পিন-ফোটার চেয়ে বেশী যন্ত্রণ বাধ হয় নাই । স্বাধীন অবস্থায় এই বাচ্চাগুলি যে কি খাইয়। জীবন ধারণ করে তাহ আশ্চর্য্যের বিষয়, কারণ উপযোগী খাদ্য দিয়া দেখা গেল তাহারাত চায় না। অবশেষে জোর করিয়া খাওয়াইবার ব্যবস্থা করিতে হইল । কতকগুলি ব্যাং টুকর টুকরা করিয়া কাটিয়া লইলাম। এক জন পাইথন-শিশুর মাথা ও লেজ দুই হাতে ধরিয়৷ থাকিত, আর এক জন সাড়াশি দিয়া ই করাইয়। তাছার মধ্যে ব্যাঙের টুকরাগুলি আস্তে আস্তে ঢুকাইয়া দিত। তার পর ধীরে ধীরে বাহির হইতে গলায় হাত বুলাইয়। খাদ্য উদরের মধ্যে ঠেলিয় দেওয়া হইত। কিন্তু পরে দেখা গেল, একটা বাচ্চ সমস্ত খাদ্য উদ্‌গীরণ করিয়া ফেলিয়াছে এবং অপরগুলিও ঐরূপ করিবার চেষ্টায় আছে। তথন আবার নূতন ব্যবস্থা করিতে হইল—পূৰ্ব্বোক্ত উপায়ে খাওয়াইবার পর তাহাদের গলার চতুদিকে এক একটি ফিতা বাধিয়। রাখিলাম, যেন ভূক্ত দ্রব্য উদগীরণ করিতে ন পারে । পরে বুঝিতে পারিয়াছিলাম—ব্যাঙের ছিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অপেক্ষ এক জাতীয় ছোট ছোট মাছষ্ট ইহার সহজে জীর্ণ করিতে পারে। মাস-দুই পরে জোর করিয়া থাওয়ানো বন্ধ করিয়৷ খাচার মধ্যে জীবন্ত ইদুর ছাড়িয়া দিতে লাগিলাম। আশ্চৰ্য্য ইহাদের শিকার ধরিবার সহজাত সংস্কার । কেমন করিয়া শিকার ধরিতে হয় কখনও তাহ চোখে না দেখিলেও খাচার মধ্যে ইদুরটি ফেলিবামাত্রই ছুটিয়া আসিয়া ধরিয়া সঙ্গে সঙ্গে লেজ দিয়া শিকারের সর্বাঙ্গ জড়াইয় এমন ভাবে চাপ দিল যে ইদুরের ইহলীলা শেষ হইল । এদিকে ক্রমশঃ এতগুলি প্রাণীর আহার সংগ্রহ করা এক নিয়ম সমস্যা হইয়া উঠিল । কাজেই উহার মধ্য হইতে কতকগুলিকে .... ব্যবস্থা করিয়া আটটা মাত্র রাখিলাম । এই আটটি অজগরের গোরকে জোগানও সহজ ব্যাপার নয়। এত ইছর পাওয়া যায় কোথায় } বর্ধার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাণ্ডিকুট নামক বিড়ালের মত বড় এক জাতের : ৫. পাওয়া গেল । ব্যাশুিকুট একটা বিদকুট ভয়াবহ জানোয়ারগায়ে ভালুকের মত লোম ও শূকরছানার মত ঘোং ষ্ট্ৰোং শক করে । এইরূপ একটা পূৰ্ণবয়স্ক ব্যাণ্ডিকুটকে সাপের খাঁচার মধ্যে ছাডিয়া দিতে ইতস্ততঃ করিতে লাগিলাম। যদি এটাই সাপকে আক্রমণ করে ? হয়ত এটা আক্রমণ করিলে প্রায় দুই হাতেরও বেশী লম্ব একটা পাইথনের পিঠ ভাঙিয়া দিতে পারে । আবার মনে হইল—পাইথনের মত একটা হিংস্র প্রাণীর আত্মরক্ষা করিত্রে পারা উচিত । ভাবিয়া চিন্তিয়ু শেষে ব্যাণ্ডিকুটটাকে পাচ'র মধে। ছাড়িয়া দিলাম। একটি ছাড়া অন্য সাতটি সাপই ফোস ফাস ** করিয়া খাচার চতুদিকে নড়াচড়া করিতে লাগিল । অন্সটি ( ইs: নাম রাথিয়ছিলাম জ্যাকব ) কিন্তু শত্রুর উপর কড়া মজর রাথিয় অতি সন্তপূণে ধীরে ধীরে অগ্রসর হইতে লাগিল। তখন বাণ্ডিকুট - আসন্ন বিপদ বুঝিতে পারিয়া, লাফাষ্টয়া উঠিবামা ষ্ট জ্যাক বিদ্যুদ্বেগে ছুটিয়া গিয়া তাঙ্গকে শূন্যেই ধরিয়া ফলিল । তার পর তাহার শরীরের চতুর্দিকে লজ জড়াইয় ফলিয় আস্তে আস্তে প্যাচ কষিতে লাগিল । কয়েক মিনিটের মধ্যেই বাণ্ডিকুটের মাথ বুলিয়া পড়িল, জ্যাকব মাথার দিক হইতে আরম্ভ করিয়া শিকারটাকে আস্তে আস্তে গলাধঃকরণ করিয়া ফেলিল । কেহ যেন মনে না করেম ইহার আমাদের একদি• * কামড়ায় নাই । কিন্তু কামড় থাইমৃছি প্রাযুক্ট আমাদের নিজের দাষে । একটি সাধারণ ভুল হইতেছে—পাইথনের মুগের কাছে সোজাসুঞ্জি তাত বাড়াইয়। দেওয়া । কারণ ইহাদের সাধারণ সংস্কারই এই যে, কোন কিছু সম্মুখে উপস্থিত হইলেই হয় কামড়াইবে নয় জড়াইয়া ধরিবে । এ কথাটা সৰ্ব্বদাই স্মরণ রাখা উচিত যে পোষ। অজগরের কামড়াইলে তাহাদিগকে সেজন্ত মার বা শাস্তি দেওয়া অকুচিত, কারণ দোষ তাঙ্গাদের নয়, আমাদেরই। তাহাদের স্বভাবচরিত্র বিশেষ ভাবে লক্ষ্য করিতে হইবে ; কারণ তাহাদের স্বভাব সাধারণতঃ অমুরূপ অবস্থায় বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন রূপ হয় না । কাজেই একটু ভুল করিলেই সঙ্গে সঙ্গে খসারৎ দিতেই হইবে । দুষ্টাস্তস্বরূপ, ইহাদের একটি স্বভাবের কথা বলা যায়—বাকুনি দিলেই ইহার তৎক্ষণাৎ ফণ। তুলিয়া ছোবল মারিবেই মারিবে । সকল অজগরের আহারে রুচি এক প্রকার মহে । জ্যাকব ছিল খাওয়ার বিষয়ে কতকটা খুংখুতে মেজাজের --তাহার পছন্দমত খাবার না হইলে সহজে রুচিত না ; কিন্তু তাহার তুলনায় সাইমন ( অপর একটি পোষা পাইথন-বাচ্চ ) ছিল সৰ্ব্বভূক—জীবিত কি মৃত সবই সে গলাধঃকরণ করিত ; অবশু, মৃত হইলেও সেটু টাটকা ন হইলে চলিত না । কেবল একটা জিনিষকে সে পছন্দ করিত ন-কুকুর-ছানাকে