বিদেশী রাজকুমার শ্ৰীসুশীল জানা রূপকথার কুমারী স্বপ্ন দেখিতেছে।” সোনার বরণ রাজপুত্র আসিবে নিভৃতে নির্জন নিশীথে পক্ষীরাজ ঘোড়ায় চড়িয়—অদূরের গুবাক-তরুর শ্রেণী আকুল হইয়া উঠিবে তাহার আগমনে—আচমকা দমৃক হাওয়া বনবনাস্তে এ-খবরটা জানাইয়া দিয়া আগে আগে ছুটিা আসিবে। ঘুমন্ত পুরীর প্রহরী শুধাইবে—কে যায় ? “বাতাস কুমারীর ঘরের ঝাড়লণ্ঠন ঠন্ ঠুন করিয়া বাজাইঃ, কুমারীর মেঘবরণ চুল উতলা বিস্রস্ত করিয়া কানে কানে বলিবে—জাগো কন্যা জাগো, রাজকুমার আসিতেছে তোমাকে বরণ করিতে। বন্দিনী কুমারী তন্দ্রাচ্ছন্ন তমসায় জাগিয়া উঠে । কুঁচবরণ অঙ্গ তার মেঘবরণ চুল-আনন্দে পরিপাটি করিয়া সাঙ্গে—প্রিয়, তাহার রাজকুমার আসিবে যে ! কুমারী কত আয়োজন করে। ওদিকে ঘুমন্ত পুরীতে সকলে জাগিয়া উঠে। সৰ্ব্বনাশ, সকলে জানিতে পারিয়াছে—বন্দিনীর বুঝি আর উদ্ধার হইল না। তরবারি ও খড়েগর ঝনৎকারে রণ-দেবতার আহবান শোনা যায় যেন । তার পর ••• চন্দ্ৰলেখা এই রকম একটা গল্প বলিয়া চলিয়াছিল— হঠাৎ ধর্মুকাইয়া বলিল—যা, ভুলে গেলাম ত! থাম, মনে করি । •• মনে করিবার আর সুযোগ মিলিল না—ওধার হইতে দাদা নিমাইচরণের আহবান আসিল–চন্দ্র রে, দু-ছিলিম তামাক বেশী দিস্—হারামাণিকের মাঠে কুইতে যাব । জলটা আজ ধরেছে যখন—দূরেরটা সেরে আসি। শুধু হারামাণিকের মাঠে নয়—এমন আরও অনেক মাঠে নিমাইয়ের এখনও ধান্তরোপণের কাজ শেষ হয় নাই—চাষীদের মধ্যে সে খানিকটা পিছাইয়া আছে । চন্দ্ৰলেখা গল্প ছাড়িয়া উঠিয়া দাড়াইল । শ্রোতা শঙ্খমালাকে উদ্দেশ করিয়া বলিল—তুই ব’ল শঙ্খ-আমি জাসি.-মনে করি ততক্ষণ । চন্দ্ৰলেখা বাহির হুইয়া আসিল—আকাশের দিকে চাহিয়া দেখিল, জল থামিয়া গিয়াছে আজ দীর্ঘ পাচটি দিনের পর । আকাশের ঘোর ঘোর ভাবটা কাটিয়া গিয়াছে। পুঞ্জীভূত কালে মেঘের গুহায় স্বৰ্য্যকে বহুদিন পরে দেখা যাইতেছে । চন্দ্ৰাকর দীঘির পাড়ে কয়েকটা সারস লাফাইয়া লাফাইয়া পোকমাকড় ধরিয়া থাইতেছিল—হঠাৎ আকাশের দিকে চাহিয়উড়িয়া গেল—বোধ করি বিগত বর্ষাঘন মেঘান্ধকার দিনগুলার কথা আচমকা মনে পড়িয়া গিয়াছিল। চন্দ্ৰলেখা নিমাইয়ের দিকে ফিরিয়া বলিল—অত জমি এখনও বাকী—এক জন লোক করছ না কেন দাদা ! নিমাই মুখ ভার করিয়া সঙ্গে সঙ্গে বলিল লোক করলে পয়সা চাই—অত খরচ করব কোথা থেকে ! তোর বিয়ের জন্তে কিছু জমাতে হবে ত ! চন্দ্ৰলেখার আর শুনিবার ধৈর্য্য রহিল না—দুৰ্ম্ম ঘুম্ করিয়া পা ফেলিয়া সেখান হইতে চলিয়া গেল। নিমাই সস্নেহে তাহার চলনের দিকে চাহিয়া মুখ টিপিয়া একটু হাসিল, তার পর বলিল-সত্যি কখা বললেই ত রাগ হবে । কিন্তু একা মানুষ থেটে খেটে মরে যাচ্ছি—আর পারি না। বলিয়া ফেলিয়াই নিমাই সভয়ে তাড়াতাড়ি সরিয়া পড়িল, চন্দ্ৰলেখার নিয়মিত সক্রোধ কামাকাটি শুনিবার জন্ত আর দাড়াইতে ভরসা পাইল না। চন্দ্রলেখ ক্রুদ্ধ হইয়া কি একটা কথা বলিবার জন্য যেন ফিরিয়া দাড়াইয়াছিল কিন্তু দাদার রকম-সকম দেখিয়া সে রাগিতে গিয়া হাসিয়া ফেলিল । নিমাই যতক্ষণ থাকে ততক্ষণ ইহাদের এমনি বিবাদ মিলনে, হাসি ও রাগে একটা কোলাহলের মধ্য দিয়া সময়ট कांछिघ्नो घाँध्न, किरू निमाहे भारठेद्र कीtख याश्द्रि श्ध्न গেলে চন্দ্ৰলেখার সময় যেন আর কাটে না। চরকা ঘুরাইয়া, তুলা পিজিয়া, পাছড়াইয়া সশস্বে তেঁতুলের চাটনি কিছুক্ষণ খাইয়াও অনেকখানি সময় নিঃসঙ্গ নির্জনে রহিয়া যায় ।
পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৯৪
অবয়ব