পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

سانفه سوا হুর্য্যের আলো ঝলমল করিয়া উঠিতেছে । গাছের মাথায় পাতায় পাতায় অভ্রকণার মত জলবিন্দু জলিতেছে। এক সুৰ্যোর কোটি প্রতিবিম্ব । চন্দ্রকাস্ত ছাড়া কলিকাতা হইতে এই একমাসে সুধা কাহার ৪ চিঠি পায় নাই, সুধা আজ সকলকে এক একথানা .চিঠি লিথিয়া খবর লইবে ঠিক করিয়াছিল। কাগজ কলম 絮 মাছুর পাতিয়া সে তাহার ছেলেবেলার সেই দাওয়ায় বসিয়াছিল। হাড় সাওতাল হাট হইতে ফিরিবার পথে মাদুরের উপর একখানা চিঠি ফেলিয়া দিয়া গেল। সুধা-স্টর্মকিয়া উঠিল, এ কাহার চিঠি ? এ লেখার ছাদ ত সে ভুলিতে পারে না । কিন্তু তপন ত কখনও স্বধাকে না জানি ইহাতে কি আছে ? ভাল ন৷ بیش ম, হাসি না অশ্র, কে বলিতে পারে ? এইখানে এই পথের ধারের দাওয়ায় বসিয়া সে চিঠি পড়িবে না। কে কখন আসিয়া পড়িবে, কোন অসময়ে মিথ্যা প্রশ্নে তাহাকে উত্যক্ত করিবে কে জানে ? হুধা ... ঘরে রাথিয় চিঠিথানা হাতে করিয়া সাওতালপাড়ার দিকে বেড়াইতে চলিয়া গেল। তপন লিখিয়াছে, *সুধা, তোমাকে নাম ধরে চিঠি লিখছি ক্ষমা ক’রো। আর কোনও সম্বোধন তোমাকে করতে পারি না, পারব না বলেই আজ চিঠি লিখছি। আমি পলাতক, আরও কতদিন পলাতক থাকব তা জানি না। হয়ত আমাকে নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা চলেছে বন্ধুমহলে, তুমি শুনে থাকবে। যার মধ্যে কল্পনার স্থান নেই, যা থাটি সত্য সেইটুক তোমাকে বলতে এসেছি। তোমার মনের কথা আমি কিছুই জানি না। না জেনে আমার অর্ঘ্য তোমায় নিবেদন করা উচিত কি অনুচিত ভাবতে বস্ব না, আমার যা বলবার তা বলা ছাড়া আজ উপায় নেই। “তুমি জান আমি কথা কম বলি, চিঠিতেও বাক্যঞ্জাল বিস্তার করব না। আমার অস্তরের যে মণিকোঠায় তোমার জন্য দেবতার বেদী রচনা করছিলাম, সেটি যদি তোমায় খুলে দেখাতে পারতাম, আর ভাষার প্রয়োজন হ’ত না । “কিন্তু মানুষের প্রথম যৌবনের অর্ঘ্য নিবেদনে সঙ্কোচ একটা বড় জিনিষ। আমার যোগ্যতার কথা তুলব না, প্রৰণসী సిరిgg যোগ্যতা যদি থাকৃভও, তবু এগিয়ে এসে দাড়াতে আমার ভীরু মন আরও কতৃ দীর্ঘ দিন নিত জানি না। সে ভীরুতার শাস্তি আমি পেয়েছি, সকরুণ সে শাস্তি, তাই মুকঠিন । “তোমার কাছে যা বলি নি, অপরের কাছে তা বলবার সুযোগ এসেছিল, প্রয়োজনও বোধ হয় ছিল । কিন্তু আমার সঙ্কোচ আমার মূর্খতা, সেখানেও আমাকে বোবা ক’বে রেখেছিল । “বিধাতার শাস্তি নেমে এল পুষ্পমালার রূপ ধ’রে ; এ শুধু আমার শান্তি নয়, নিরপরাধিনী একটি বালিকা পঃ শাস্তি। বুঝতে পারলাম না ভগবান কেন শান্তি দিলেতাকে যার মাথায় তার অনন্ত আশীৰ্ব্বাদ ঝরে পড়া উচিত ছিল । বেদনায় বুক ফেটে আসতে লাগল, তবু গ্রহণ করতে পারলাম না সে পুষ্পমাল্য । মুখ দেখাব fক ক’রে সেখানে তার এই দুঃখের দিনে ? তাই আমি পলাতক. “একথা সে জানে না, আর কেউ জানেন, শুধু আমিষ্ট জানি আর আজ তুমি জানলে । আমার দুডিক্ষপঞ্জি মনের একমাত্র অল্প যার ছায়াময়ী মূৰ্ত্তি, তাকে না জালি: আর থাকতে পারলাম না । "আমি জানি তুমি একথা কোথায়ও প্রকাশ করবে না । যদি আমার ভুল হয়ে থাকে—তোমার কাছে আসা, তবু তুমি ক্ষমা করে। দীর্ঘদিন পথে পথে ঘুরব তুমি ক্ষম করেছ এইটুকু সাস্তুনা মনে নিয়ে। যদি কখনও সময় হয়, যদি কখনও ডাক দাও ফিরে আসব।” স্বধার চোখের জলে চিঠির পাতা ভিজিয়া গেল। এ তাহার স্বখের দিনে দুঃখের অশ্র না দুঃখের দিনে স্বশ্বের অশ্র । সে আপনার শূন্ত মন্দিরে যে নিভৃত পূজার আয়োজন করিতেছিল, তাহাতে আজ অসময়ে দেবতার আসন টলিল কেন ? সে ত ডাকে নাই, সে ত চাহে নাই ! যেদিন সে সমস্ত প্ৰাণ ভরিয়া চাহিয়াছিল, সেদিন কেহ সাড়া দিল না । যেদিন সে পথ ছাড়িয়া সরিয়া দাড়াইল, আপনার প্রার্থনাকে আপনি রুদ্ধবাক করিয়া টিপিয়া মারিতে বসিল, সেই দিনই এই সাড়া ? এ-চিঠির জবাব সে কি দিবে ? বিধাতা নিজে হৈমষ্ঠীর স্বখের দিন না আনিয়া দিলে সুধা কি ইহার জবাব দিতে পরিবে ? সমাপ্ত