পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

eয় সংখ্যা ] বিবিধ প্রসঙ্গ—পূর্ব বঙ্গে রেল বিস্তার 86 & র্তাহার কঠিন পীড়া হইয়াছে বলিয়া ত তাহার মুক্তির অনেক পূৰ্ব্বেই জানা গিয়াছিল। তখন কেন তাহাকে মুক্তি দেওয়া হয় নাই ? তদ্ভিন্ন স্বাস্থ্যভঙ্গই যদি মুক্তির একমাত্র বা প্রধান কারণ হয়, তাহা হইলে তাহারই মত বা তাহার চেয়েও বেশী মারাত্মক পীড়াগ্রস্ত বিনাবিচারে বন্দ্বীকৃত অক্ষ লোকদিগকে কেন খালাস দেওয়া হয় নাই ? বাস্তবিক ঠিক কি কারণে যে তাহাকে মুক্তি দেওয়া হইয়াছে, জানি না । তিনি বিখ্যাত লোক । তাহার কথা ভারতে ও ভারতের বাহিরে লোকে জানিয়াছে । বন্দীদশায় তাহার মৃত্যু হইলে ভারতবর্ষের ও পৃথিবীর অন্য কোন কোন দেশের অনেক লোক ভারতের কতকগুলি সরকারী কৰ্ম্মচারীকে নরহত্য অপরাধে অপরাধী মনে কfরবে, এই আশঙ্কা কোন কোন উচ্চপদস্থ রাজকৰ্ম্মচারীর হইয়া থাকিবে । হয়ত ইঙ্গ স্বভাষচন্দ্রের মুক্তির একটি কারণ। যাহা হউক, তিনি শীঘ্র সম্পূর্ণ স্বস্থ হইয়া আবার লোকহিতে রত হইতে সমর্থ হউন, ইহাই আমাদের আস্তরিক বাসনা । তৃতীয় শ্রেণীর যাত্রীদের প্রতি দয়া রেলগাড়ীর তৃতীয় শ্রেণীর যাত্রীরা যে রকম গাড়ীতে বসিতে দাড়াইতে যতটুকু জায়গা পায় এবং তাহাদের অন্ত সুবিধা ( অর্থাৎ অসুবিধা ) যত, তাহ বিবেচনা করিলে তাহার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর যাত্রীদের চেয়ে বেশী ভাড়া দেয়। যাত্রীগাড়ী হইতে রেল কোম্পানীর লাভ প্রধানত: তৃতীয় শ্রেণীর যাত্রীদের ভাড়া হইতেই হয় । তথাপি অপমান লাঞ্ছনা ও নানা দুঃখ ভোগ তাহাদের একচেটিয়া । তাহাদের প্রতি রেলওয়ের কর্তৃপক্ষ কেমন সদয়, তাহার একটা উদাহরণ ১৯২৫-২৬ সালের রেলওয়ের একাউণ্ট্যাণ্ট-জেনার্যালের রিপোটে পাওয়া যায়। যে ষ্টেশনে ট্রেনে যাত্রীদের টিকিট সচরাচর দেখা হয় না, সেখানে হঠাৎ একদিন টিকিট চেক্‌ করায় দেখা গেল, ১৫ জন প্রথম শ্রেণীর ১১ জন দ্বিতীয় শ্রেণীর, ৩০ জন ইণ্টারমাডিয়েট শ্রেণীর এবং ১৬৯ জন তৃতীয় শ্রেণীর যাত্রী বিনা টিকিটে সফর করিতেছে। তাহার মধ্যে ২৭ জন ইণ্টারমীডিয়েট ও তৃতীয় শ্রেণীর যাত্রীর নামে রেলওয়ে আইন অমুলারে মোকদ্বম! হইয়াছিল । কিন্তু অধিক ভর ধনী ও ডাড়া দিতে অধিকতর সমর্থ প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর কাহারও বিরুদ্ধে কেন মোকদম করা হইল না, তাহার কারণ রিপোর্টে লেখা নাই। ওলাউঠার টীকা বঙ্গের স্বাস্থ্যবিভাগের পরিচালক বেণ্ট লী সাহেবের দেশের স্বাস্থ্যের উন্নতি করিষ্ঠে আস্তরিক ইচ্ছা আছে। কিন্তু তিনি যে সমুদয় লোককে ওলাউঠার টীকা দিয়া দেশ হইতে, অন্ততঃ কলিকাতা হইতে, ওলাউঠা তাড়াইবার প্রস্তাব করিয়াছেন, তাহ আমরা সমীচীন মনে করি না । ওলাউঠার টক যে উহার নিশ্চয়ই নিবারক, তাহ এখনও নিঃসন্দেহ প্রমাণিত হয় নাই। দেশে বিশুদ্ধ পানীয় জল ও খাটি তাজা ভেজালবিহীন থাদ্য জোগাইবার বন্দোবস্ত আগে চাই। নদীর জল, পুকুরের জল, কুপের জল ও কলের জল যাহাতে মলমূত্র দ্বারা ও রোগবীজ দ্বারা দূষিত না হয়, তদুপযুক্ত শিক্ষা ও ব্যবস্থা চাই । যাহাতে মলমূত্রের দ্বার রোগ সংক্রামিত না হয়, তৎসমুদয় এরূপ ভাবে নিক্ষিপ্ত, রক্ষিত, প্রোথিত ও ব্যবস্তুত হওয়া চাই। এইরূপ সমুদয় ব্যবস্থা না করিয়া শুধু টকা দ্বারা ওলাউঠা কোন দেশ হইতে নিমূল করা হইয়াছে, জানিতে চাই । পূর্ববঙ্গে রেল বিস্তার পূৰ্ব্ববঙ্গে নদী খাল সব ক্রমে ক্রমে মজিয়া অব্যবহার্ষ্য হওয়ায়, কচুরী পানায় আচ্ছাদিত হওয়ায়, ঐ অঞ্চলের নানা অনিষ্ট হইতেছে । মাল ও যাত্রীর জন্য পুৰ্ব্ববঙ্গে জলপথ ও জলষানই যথেষ্ট হইত, যদি জলপথ রক্ষা ও উন্নতির ব্যবস্থা হইত। তাছাড়া, ভাল রাস্ত নিৰ্ম্মাণ করিয়া মোটর গাড়ী চাঙ্গাইলেই হইত। কিন্তু তাহা না করিয়া ৩ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৫ বৎসরে তথায় ৪• • মাইল রেলপথ হইবে। ইহাতে যাতায়াতের ও বাণিজ্যের যে সুবিধা হইবে, তাহা অস্বীকার করি না । কিন্তু এই ৩১৫ লক্ষ টাকার দুই তৃতীয়াংশ বিলাতের লোক পাইবে বিলাতী পালেমেন্টের মেম্বর মি: সুইফ টু ম্যাকৃনীল পালেমেণ্টে ১৮৯৩ সালের ১৪ই আগষ্ট বলিয়াছিলেন, “হিসাব করিয়া দেখা হইয়াছে, যে, ভারতে রেল বিস্তারের জন্য ব্যয়িত প্রত্যেক শিলিঙের মধ্যে ৮ পেনী বিলাতে আসিয়া পৌছে *” বাণিজ্য

  • “It has been computed that out of every shilling spent in railway enterprisetin Indial, 8d. makes its way to England.” Hansard's Parliamentary Debates, Wol. 248, p. 1051. - -,