পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] যবদ্বীপের পথে ৬৮১ জাহাজে গিয়ে দেখি আমাদের মালপত্র সব এসে গিয়েছে। কবির অমুগত ভূত্য বনমালী তার আগমনের প্রতীক্ষায় নীচে দাড়িয়ে আছে। শ্ৰীযুক্ত রাজরত্ব পিলৈ মহাশয় আমাদের অপেক্ষায় আছেন । তিনি কবির জন্তু নির্দিষ্ট ক্যাবিনে আমাদের নিয়ে গেলেন। দেখলুম র্তার বস্বার ঘরে একরাশ পদ্মফুল দেওয়া হ’য়েছে। এটি শ্ৰীযুক্ত রাজরত্নম পিলৈ মহাশয়ের ব্যবস্থা অনুসারে । কবির প্রতি র্তার শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের এই সুন্দর উপায়টি দেখে তাকে সাধুবাদ দিলুম। ঐযুক্ত রাজরত্নম, মসিও ঝোবারের সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিলেন, আর জাহাজের কমাদ বা কাপ্তেন M. Gabrillargues ( wfis siif&ai*i ) q* Hta , ঝোবারের সঙ্গে আর কাপ্তেনের সঙ্গে ফরাসীতে আলাপ ক’রলুম। এর যথেষ্ট বিনয় প্রকাশ করলেন । এদিকে নীচে ডকের উপর কবির বিদায় দেখতে অনেকগুলি লোক এসে জড়ো হয়েছে। ঠিক সাড়ে চারটেয় কবিকে নিয়ে শ্রযুক্ত রামস্বামী মোটরে ক’রে এলেন। তার সঙ্গে সঙ্গে আর একটু পরে মাদ্রাজ হাইকোর্টের একজন জজ সস্ত্রীক, আর মাদ্রাজের বোধ হয় অ্যাডভোকেট জেনেরাল, আরও কতকগুলি বিশিষ্ট লোক এলেন, আর কতকগুলি তামিল মহিলা । জাহাজের সিড়ি দিয়ে উপরে উঠতেই মসিও ঝোবার আর মসিও কোদিয়্যার কবিকে স্বাগত ক’রলেন, কাপ্তেনের সঙ্গে পরিচয় ক’রে দিলেন আর কবিকে আর তার সঙ্গের অভ্যাগতদের জাহাজের প্রথম শ্রেণীর বসবার ঘরে এনে বসিয়ে দিয়ে বাইরে গেলেন, যাতে কবি এদের সঙ্গে অসঙ্কোচে আলাপ ক’রতে পারেন। এ জাহাজের সবচেয়ে বড়ো আর সবচেয়ে ভালো ঘরটি কবির খাস ব্যবহারের জন্ত দেওয়া হ’ল, আর জাহাজ থেকে বরফ সরবৎ বিতরণ হ’ল অভ্যাগতদের মধ্যে। ফরাসী জাহাজওয়াল কোম্পানী এইভাবে জগম্বরেণ্য বিশ্বকবির সমাদর করলেন। ইটালীয়ান, জাপানী আর অন্ত জাতের জাহাজে সৰ্ব্বত্রই কবিকে এই রকম ক’রে সম্মান দেখিয়ে কবির হয়ে তার বন্ধুদের আতিথ্য-সংকারের ভার নিয়ে তার নিজেদের কৃতাৰ্থ মনে করেছে। এইরূপ শ্রদ্ধা একটা বড়ে জাতেরই লক্ষণ ব’লে মনে হয়। জাহাজ ছাড়তে পাচ মিনিট বাকী, বাইরে ডেকে এসে একটা গ্রুপ ফোটো তোলা হ’ল—কবিকে মাঝখানে রেখে জাহাজ-কোম্পানীর সাহেবের, আর কবির প্রত্যুদগমনকারীর দাড়ালেন। তারপরে অভ্যাগতের একে একে নেমে গেলেন, আমাদের বনমালী নীচে থেকে কবিকে প্রণাম ক'রে চ'লে গেল। সিড়ি তোলে তোলে, এমন সময়ে আর একজন ভদ্রলোক মাথায় নীল রেশমের বাধা পাগড়ি, সৌম্যমূৰ্ত্তি, সাদাসিধে পোষাক, উপরে ডেকে এসে কবির দুহাত ধ’রে আলাপ করলেন । ইংরেজীতে *আপনি ভারতের আত্মার প্রতীক, আমাদের গৰ্ব্বস্থল, দেশের শ্রেষ্ঠ চিন্তা আপনি বাহিরের জগৎকে দান ক’রছেন—ইত্যাদি" প্রশস্তি ব’লতে লাগলেন । ইনি মাদ্রাজের ছোট একট দেশী রাজ্য পানাগলএর রাজা । ইনিও নেমে গেলেন, আর জাহাজের সিড়ি তুলতে আরম্ভ করলে । নঙ্গর তুলতে, আর জাহাজঘাট থেকে জাহাজ ছাড়তে আরও আধঘণ্টা লাগল। বন্ধুরা সকলেই প্রায় শেষ মুহূৰ্ত্ত পৰ্য্যস্ত দাড়িয়ে রইলেন। শেষে জাহাজ চলল। মাদ্রাজের হাইকোর্ট আর অন্য অন্ত বাড়ীর চুড়ে ক্রমে দূর থেকে ভালো ক’রে দেখা যেতে লাগল। আমরা মাদ্রাজ বন্দরের পাথরে গাথা পোস্তার বাইরে এসে পড়লুম। সিঙ্গাপুর-মুখে হ'য়ে জাহাজ চলতে আরম্ভ ক’র লে। আমরা সত্যিসত্যিই দ্বীপময় ভারত (Island India) wiłł siześlcao (Indo-China) for wood হ’তে লাগলুম।