পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] বিবিধ প্রসঙ্গ-ভারতবর্ষে জলপ্লাবন ꬃ&ጓ অসামরিক কৰ্ম্মচারীদের বেতন ও ভাতা বৃদ্ধির জন্য কোটিকোটি টাকা খরচ করে, কিন্তু ভারতবর্ষে চিকিৎসা ও খাস্ত্রীবিদ্যা শিখাইবার জন্য যথেষ্ট শিক্ষাঙ্গয় স্থাপন করে না, বেসরকারী লোকেরা স্থাপন করিলে বা করিতে চাহিলে তাহাতে নানা আপত্তি, বাধা-বিঘ্ন জন্মায়, একথা ক্যাথেরিন মেয়ে লেখে নাই । ইহাও লেখে নাই, যে, গত শতাবীতে পাশ্চাত্য মান দেশে প্রস্থতিদের দুরবস্থা ছিল। তাহার পর চিকিৎসা-বিজ্ঞানের,স্বাস্থ্যরক্ষাবিজ্ঞানের, ও ধাত্রীবিদ্যার উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার বিস্তার হওয়ায় প্রস্থতিদের দুঃখ কষ্ট কমিয়াছে। ইংরেজরা এদেশট দখল কর, ঠাণ্ড করা ও রাধা এবং ইহা হইতে অর্থ আহরণ করাতেই নিমগ্ন থাকায়, আধুনিক সমুদয় বিজ্ঞানের সুবিধা ভারতীয়দিগকে পিত্তিরক্ষা হিসাবে ধীরেস্থন্থে সামান্য কিছু দিয়াছে, যথেষ্ট পরিমাণে দেয় নাই। এদেশে এখনও প্রস্তুতিদের দুঃখদুর্দশ বেশী পরিমাণে থাকিবরি যে ইহা একটা কারণ, তাহা লেখিকার বহিতে নাই। আমরা নিজে দেশের কৰ্ত্ত হইলে অন্ততঃ তুরস্ক, পারস্য, আফগানিস্থানের সমান কিছু চেষ্টা করিয়া প্রস্থতিদের দুর্দশ কিছু লাঘব করিতে পারিতাম । যাহা হউক, আমরা যখন পরাধীন তখন সব দোযট। আমাদেরই, তাহ স্বীকার করিতে হুইবে স্বাধীন হইলেও একেবারে নিষ্কলঙ্ক হইতাম না,—কোন দেশের লোকই নিষ্কলঙ্ক নহে। তফাৎ এই, যে, স্বাধীন দেশের লোকদের কলঙ্ক ঘোষণা করিয়া তাহাদিগকে দুর্দশায় ফেলিয়। রাখিবার সহায়তা করিবার কোন প্রলোভন নাই, পরাধীনকে পরাধীন রাধিবার চেষ্টায় সহায় হইলে টাকা এবং খ্যাতি—মস্তত: পক্ষে খ্যাতি— পাওয়া যায়। ভারতবর্ষে জলপ্লাবন গুজরাতে, বড়োদায়, কাঠিয়াবাড়ে, ওড়িযায়, বঙ্গে, সিন্ধুদেশে,-ভারতের নানা অঞ্চলে জঙ্গপ্লাবন হইয়াছে। অনেকের ঘরবাড়ী নষ্ট হইয়াছে, গোধন নষ্ট হইয়াছে ; অনেক মাকুবের প্রাণও গিয়াছে। লোক র্বাচিয়া আছে, তাহদের দুঃখ দূর করি বিপন্ন যে সকল । বার জন্য চাদ উঠিঙেছে এবং কৰ্ম্মীর কৰ্ম্মস্থানে উপস্থিত হইয়া নানা ভাবে সাহায্য করিবার চেষ্টা করিতেছেন। সকল প্রদেশ হইতেই সকল প্রদেশের লোকদের জন্য সাহায্য প্রেরিত হওয়া দরকার । নগদ টাক বোম্বাই গ্রেসিডেন্সীতে বেশী আছে। এজন্ত তথাকার লোকেরা খুব বেশী সাহায্য করিতেছেন। অন্তর মাড়োয়ারীদের , হাতে টাকা বেশী আছে । তাহারাও সাহায্য করিতেছেন। অন্য সকলেরও যথাসাধ্য সাহায্য করা উচিত। জলপ্লাবন আমেরিকার মত ধনী,স্বাধীন ও বৈজ্ঞানিকজ্ঞানবিশিষ্ট দেশেও এখনও হইতেছে। কিন্তু তথাকার লোকেরা এঞ্জিনীয়ারিং বিদ্যার সাহায্যে নানা উপায়ে ভবিষ্যতে জলপ্লাবন নিবারণের চেষ্টা করিতেছে । কোথাও কোথাও এই প্রয়াস সফল হইয়াছে। আমাদের দেশের গবন্মেন্টেরও এইরূপ চেষ্টা করা উচিত। অধ্যাপক গ্রশাস্তচন্দ্র মহলানবীশ উত্তর বঙ্গে ১৮৭০ হইতে ১৯২২ পৰ্য্যস্ত বারিপাত ও জলপ্লাবন সম্বন্ধে মানচিত্রাদি সহ একটি বিস্তারিত রিপোর্ট রচনা করিয়াছেন। তাহা গযন্মেটি কর্তৃক সম্প্রতি গ্রকাশিত হইয়াছে। এই রিপোর্ট হইতে যে জ্ঞান লাভ করা যায়, তদনুসারে প্লাবন নিবারণের চেষ্টাও গবন্মেন্টের করা কৰ্ত্তব্য হইবে। নতুবা অধ্যাপক মহলানবীশের প্রভূত পরিশ্রম এবং তাহার রিপোর্ট ছাপাইবার জন্য গবন্মেন্টের অর্থব্যয় ব্যর্থ হুইবে । ভারতবর্ষের সব অঞ্চলের প্লাবন সম্বন্ধে এইরূপ রিপোর্ট লিখিত ও তদনুযায়ী কাৰ্য্য অরিন্ধ হওয়া উচিত। বড়োদার মহারাজা গায়ক বাড় নিজের রাজ্যের জন্য বিশেলব্ধ অভিজ্ঞতা হইতে প্রস্বত অনেক কাজ করিয়াছেন। তিনি বড়োদা হইতে যোগ্য দেশী ভূঞকজন এঞ্জিনীয়ার আমেরিকায় পাঠাইয়। যদি তথাকার প্লাবননিবারক এঞ্জিনীয়ারিং নানা উপায় সম্বন্ধে তাহাদিগকে জ্ঞান লাভ করিয়া আসিতে বলেন, তাহা হইলে তাহার রাজ্যের ও ভারতবর্ষের অস্থ নানাস্থানের উপকায় হইতে পারে । ,