পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ সংখ্যা ] হৈমবতী বলিলেন, “পায়ে হঁটি। আপত্তি নেই, কিন্তু তোমার সঙ্গী হবে কে ?” গৌরী বলিল, “কেন, আমি একলাই যাব আসব। আমার সঙ্গে আর একটা মামু্যকে জোড় করলে তার কাজ ত পণ্ড হবে ।” হৈমবতী বলিলেন, “কিন্তু তোমার বাড়ীর লোকে তাতে রাজি হবেন না যে ” গৌরী বলিল, “ভবিষ্যতে আরো অনেক বিষয়েই হয়ত বাড়ীর লোককে চটাব, এইটুকুতেই এখন ভয় পেলে চলবে কেন ? যপন আশ্রমে এসেছিলাম, তখনও বাড়ীর সকলে না হোক অনেকে রাগ করেছিলেন। এখন তাদের সয়ে গেছে। নূতন আর-একটা কাজ করলে হয় ত সকলেই রাগ করবেন, কিন্তু দে-রাগ পড়ে যাবে। বাবাই ত আমাকে নিজের উপর নির্ভর করার মন্ত্র দিয়েছিলেন, আজ কাজের বেলা তার একটুকুমাত্র প্রকাশ দেখলে যদি তিনি রাগ করেন তাহলে আমাকে দে-রাগ মাথায় পেতেও কাজে বেরোতে হবে ; কারণ এ শিক্ষা ত প্রথম আমার ঠার কাছেই ।” ভূমণবাবু বলিলেন, “আপনার ভেবে দেখুন যদি ঔর একলা আসা-যাওয়াই মত হয় এবং তাই স্থির করাও হয়, তবু প্রথম কয়েকদিন সঙ্গে কারুর থাকা দরকার হবে, কারণ পথে-ঘাটে চলা ত ওঁর কোনো দিন অভ্যাস নেই।” সঞ্জয় বলিল, “আমি শঙ্করকে বলে দেখব ; সে যদি নিজে দু চার দিন সাহায্য করতে রাজি থাকে এবং আমার সাহায্যে আপত্তি না করে তা হলে কয়েকটা দিন আমরাই চালিরে নিতে পাৰ্ব্ব। তারপর ত আর আমাদের দরকারই থাকবে না।” হৈমবতী বলিলেন, “আচ্ছ, তাই বলে দেখ কি হয়।” যাইবার সময় হইল। গৌরী শৈবলিনীকে বলিল, “আপনার ঘর-সংসারটা একবার দেখে যাই।” বড় ঘরখানি শুইবার বসিবার পড়িবার খেলিবার সকল রকম সাজ-সরঞ্জামে ঠাসা। পাশে ছোট একটি ঘরে আর্থথানা ভাড়ার, তরিতরকারী চাল ডাল জল মুন তেল সব তাহারই ভিতর অত্যন্ত অল্প জায়গায় গায়ে গায়ে সাজানো। জীবনদোলা অপর কোণে ছোট একটি চেয়ার ও টেবিল, দুইটা হেঁতের bふ> f - বাক্সে দুই বোঝা কাগজ, দুই তিনটা ফাইল, একটা ক্যাশবাক্স, কাগজ কলম পেন্সিল থাত্যপত্র প্রভৃতি আপিসের সরঞ্জাম। মাঝখানে স্বল্পপরিদর একটুখানি জায়গায় তিন চারখানা পিড়ি, সেইটুকু সকলের আহারের স্থান। তাহার পাশে টালির চাল দেওয়া ছোট একটি রান্নাঘর, বড় খুকী তখনও উপক্রমণিকা হাতে করিয়া সেখানে ভাতের হঁাড়িটা তদারক করিতেছে। সব দেখিয়া শুনিয়া গৌরী বলিল, “দেশ আপনার সংসারটি।” শৈবলিনী বলিলেন, “আপনাকে ছোট বোনের মত মনে ক’রে একটি কথা বলছি, কিছু মনে করবেন না। এই ছোট দুখানি ঘরের ভিতর এই যে গরীবের সংসার দেখছেন, এর সঙ্গে অনেক দুঃখ-কষ্টের যোগ আছে, চোখের জলও এর জন্তে ফেলতে হয়েছে। ছোট ছোট ছেলে নিয়ে কাজের পথে কত যে ঘা খেতে হয়েছে কত কাজ আট্‌কা পড়েছে তার ঠিক নেই, কিন্তু তবু কাজ বন্ধ হয়নি ; কারণ আমার সকল কাজের সকল সাধনার এই হ’ল প্রেরণা। যদি কাজের সকল সরঞ্জাম সংগ্রামের সকল অস্ত্র সকল বৰ্ম্ম খুলে ফেলবার একটা স্থান না থাকৃত, কাজের শেষে দুঃখের পারে কেবল নিজের বলবার কোনো আনন্দ না থাকৃত তাহলে হাজার নিঝঞ্ঝাট হ'লেও শুকনো কাজ এমন করে আমায় বাধতে পাবৃত না। শুধু তাই নয়, এমন ক'রে স্বামী পুত্র কন্যাকে যদি না ভালবাসতে শিখ তাম তাহলে পরের ছাপ যে কি হৃদয়ে দিয়ে তা কোনো দিন বুঝতাম না। তাই আমার মনে হয়, ঘর-সংসার আমাদের সাধনারও একটা অঙ্গ। একথা মেয়ের ভুললে তাই চলে না। অবিপ্তি তাই বলে সকলকেই যে সেট করতে হবে তা বলছি না। মানুষ কত কারণে কত পথ ত্যাগ করতে বাধ্য হয় তা জানি, কিন্তু যা কিছু আমরা করি তাই যে নিন্দের নয় এইটাই আমার বলবার উদ্দেশ্য।” গৌরী চুপ করিয়া শুনিল। তারপর বলিল, “আপনি ত আজ থেকে আমার দিদি হ’লেন । কাজের কথা সেবার কথা এর পর আপনার কাছে নূতন ক’রে অনেক শুল্ব, অনেক শিখব।” ( ক্রমশঃ ستيتيتيتيتشي هاجمه سد