পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, প্রথমাংশ).djvu/৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૭ of ক্ষমা ভিক্ষা করিল । কিন্তু অটল উদ্যতব্ৰহ্মদওসংপ্ৰেক্ষ্য ধৰ্ম্মপাল তাহাকে অনুতপনীয় গুহ মধ্যে প্রক্ষেপ করিতে অনুতপ্ত হইয়া প্রকৃতিস্থ হইয়াছ ?” আদেশ করিলেন । আদেশ প্রাপ্তি মাত্র পরিহাসব্যগ্র কয়েকজন শ্রমণ তাহাকে ধরিয়া লইয়া গিয়া অন্ধকার গুহামধ্যে আবদ্ধ করিয়া দিল । সেই অন্ধকার গুহামধ্যে একাকী অদ্ধাহার অনাহারে চিন্তাকুল নৃসোমের দিনগুলি অবিচ্ছেদ দুঃখপ্রবাহের মত কাটিতে লাগিল । সেই আলোকরেখামাত্রশূন্ত অন্ধকার গুহ্যমধ্যে সে ঠিক করিতে পারিতেছিল না, এক মাসের মধ্যে কতগুলি দিন অতীত হইয়া তাহাকে মুক্তির দিকে কতখানি অগ্রসর করিতেছে। দিবারাত্রির মধ্যে পার্থক্য সুচনা করিতে সেই গুহায় কোনই উপায় ছিল না । একদা সে শুনিল কোথায় কে যেন বলিতেছে, ‘নৃসোম, ইহা তোমার কৃতকৰ্ম্মের ফল। নিরপরাধিনীর প্রতি সন্দেহ ও অত্যাচার নিবারণের জন্ত তোমার এই শাস্তি । বাসস্তিকার প্রতি আর কখন কোন প্রকার অত্যাচার করিবে না, এই প্রতিজ্ঞ করিলে, তুমি মুক্তি লাভ করিতে পার।’ এই বাক্য তাহার প্রাণে আশা, উৎসাহ, আনন্দ ঢালিয়া দিল । বহুকাল পরে আপনাকে প্রকৃত বাসস্তিকাবল্লভ নৃসোম বলিয়া অভিহিত হইতে শুনিয়া সে মহা হর্ষোৎফুল্ল হইয়া বলিল, “হে তাত অদৃষ্ট, কণ্ঠমাত্রখ্রত মধুরভাষিনৃ, তুমি দেব, দৈত্য, যক্ষ, রক্ষ, কিন্নর, নর, যে ইও হে মহাভাগ, দয়া করিয়া আমাকে রক্ষা কর, মুক্ত কর, আমি শপথ করিয়া প্রতিজ্ঞা করিতেছি অতঃপর আমি অত্যাচার করিব না। হে তাত, তুমি আমাকে রক্ষা কর, ওহে মুক্ত কর।” ক্ষণেক পরে গুহ্যদ্বার মুক্ত হইল, ধৰ্ম্মপাল প্রবেশ করিয়া নৃসোমকে যখন ধম্মবংশ বলিয়া সম্বোধন করিলেন, তখন হতভাগ্যের অচিরোদগত আশামুকুল করকাঘাতে যেন শুষ্ক হইয়া উঠিল। ‘হায় হায় আমি বাসস্তিকাবল্লভ নৃসোম এ বিকৃত ভাৰটা মস্তিষ্ক হইতে কিছুতেই নিরাকৃত করিতে পারিতেছি না। “জাগ্রতো স্বপতে বাপি তিষ্ঠতশ্চলিতোহপি বা সে চিন্তা ত্যাগ করিতে পারিতেছি না। মন, তুমি দৃঢ় নিশ্চয় কর তুমি ধৰ্ম্মবংশ।’ প্রবাসী । هر ۰ مه حبهه ماهه - یح فی - پیام عید .۰-۶۴ 'শ্রমণাচাৰ্য্য ধৰ্ম্মবংশ, À. ধৰ্ম্মপাল জিজ্ঞাসা করিলেন, নৃসোম যুক্তকরে বলিলেন, ‘আজ্ঞ, এই কঠিন শাস্তির পরেও যদি অমৃতপ্ত ও প্রকৃতিস্থ ন হই, তবে কিসে হইব ? বিশিষ্টই অনুতপ্ত হইয়াছি। তৎপরে মনে মনে বলিল, *হার যদি সেই সঙ্গে প্রকৃতিস্থও হইতে পারিতাম।” ধৰ্ম্মপাল বলিলেন, ‘সাধু, ধম্মবংশ সাধু। যাও এক্ষণে নিজ কক্ষে । স্নানশুদ্ধ হইয়া ভোজনাদি কর।” নুসোম কৃতাৰ্থ হইয় নির্গত হইল। স্নান করিয়া আয়াম বোধ করিল। তৎপরে মাদক মিশ্রিত খাদ্য আহার করিয়া দিব্য নিশ্চিন্ত নিদ্রায় অভিভূত হইল। তখন তাহাকে পূৰ্ব্ববৎ পরিচ্ছদাদি পরিধান করাইয়া রেবত ভিক্ষু পুনরায় তাহাকে তাহার গৃহে শয্যায় রাখিয়া আসিল । পরদিন প্রাতে গাঢ় নিদ্রান্তে সুস্থ হইয়া নুসোমের নিদ্রাভঙ্গ হইল। জাগ্রত হইয়া আপনাকে সুসজ্জিত কক্ষে কোমলতল্পশায়ী দেখিয়া চমকিত হইয়া উঠিল। হায় হায়, এ আবার কোন মোহিনী তাহার প্রায়াত্যস্ত শম্পশয্যা ও বিহারগুহের নগ্নতা ঢাকিয়া এই কোমলতা, বিচিত্রতা ও ঐশ্বৰ্য্য ঢালিয়া দিয়া গেল? এ কোন দৈত্যলীলা, কি প্ৰেতকীৰ্ত্তি ! সে মহাভীত হইয়া উটিয়া বসিতেই পার্শ্বশায়িনী স্ত্রীকে দেখিবামা এ প্রেতিনী বোধে মহা চীৎকার করিয়া এক লম্ফে শয্যাত্যাগ করিয়া গিয়া দূরে দাড়াইল । মিথ্যা নিদ্রাগত বাসস্তিকা সেই চীৎকারে সহসা প্রবুদ্ধবৎ ত্রস্ত হইয়া বলিল, “কি কি, কি হইয়াছে ?” নৃসোম আপনার স্ত্রীর পরিচিত মধুর কণ্ঠ ও সুন্দরীতে কিঞ্চিৎ আশ্বস্ত হইয়া বলিল, “তুমি, তুমি কে ? তুমি এখানে কেন ? এখানে কেমন করিয়া • আসিলে? আমাকে স্পর্শ করিয়া আমার সর্বনাশ ঘটাইও না। দূর হও, দূর হও। ধৰ্ম্মপাল জানিতে পারিলে এখনি হয় ত’ বৎসরকালের জন্ত গুহারুদ্ধ করিবে। কত কষ্টে, কত অনুতাপ করিয়া নিস্কৃতি পাইয়াছি। তুমি আর বিপদ ঘটাইও না, তুমি যাও, ওগো যাও, রক্ষা কর, ওগো ক্ষম কর r . * , বাসস্তিক বিস্ময়দুঃখের ভাণ করিয়া বলিল, “এ তুমি