8 প্রবাসী । এখন যে মর্লার ভারতসচিবত্বলাভে ভারতমাতার পরম শ্রেয়কল্পনা করিয়াছিলান সেই সাধু মল বলিতেছেন “যতদূর পর্য্যস্ত কল্পনার আঁখি যায় ততদূর পর্য্যন্ত ভারতের ভাগ্যে স্বায়ত্তশাসন দেথা যাইতেছে না।” ইহার পরও যাহারা ভারতের • স্বরাজসৌধ ফিরিঙ্গীর রূপাভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করিতে উপদেশ দিতেছেন, তাহার দেশের শক্র, হয় তো অজ্ঞাত সারেই দেশের শক্রতা করিতেছেন । ইংরাজ কি কখনও রাজী হইবে ভারতের রাজস্ব ভারতবাসীর হাতে ছাড়িয়া দিতে ? আমরা যদি স্বরাজ পাই তবে আমাদের শিল্পবাণিজ্যের উন্নতির জন্ত বিদেশী মুন ও কাপড়ের উপর কি গুরুতর শুল্ক বাধ্য হইয়াই বসাইব না ? যে দেশে গুর্থ ও রাজপুত, বা শিখ ও মারহাটার অধিবাস সেই দেশ রক্ষার জন্ত কি গায়ের রক্ত দিয়া একপাল ফিরিঙ্গী পোষণ করিতে রাজী হইব ? ভারতের রাজকাৰ্য্যে বিদেশী নিযুক্ত হইয়। তখন কি কোটী কোটী টাকা বিদেশে লইয়া যাইতে সমর্থ হইবে ? আমাদিগকে জীবন রক্ষার জন্তই এরূপ করিতে হইবে । ইংরাজ কি এই সত্তে আমাদিগকে স্বরাজ দিবে? তাহা যে দিবে না, স্বদেশী আন্দোলনে ফিরিঙ্গীর অপব্যবহার তাহার জাজল্যমান প্রমাণ। ইহা যে দেখিয়াও দেপিবে না, তাহার বুদ্ধিবৃত্তি যুক্তির অতীত। ইংরাজ রাজ্য ছাড়িতে পারে, বাণিজ্য ছাড়িতে পারে না । আমাদিগকে স্বরাজ দিলে তাহার যদি বাণিজ্যের ক্ষতি না হইত তবে না হয় এই একটা উৎকট কল্পনাই করিয়া ফেলিতাম স্বরাজ পেলে তো কথাই নাই, স্বরাজ না পেলেও যখন প্রাণপণ করিয়া ভারতে ইংরাজের বাণিজ্য বিনাশ ব্যতীত আমাদের জীবন রক্ষাই অসম্ভব, আমাদের যখন এষ্টরূপ খাদ্যথদিক সম্বন্ধ, তখন ইংরাজের কাছে স্বরাজ চাওয়ার মত একটা বিকট লিড়ম্বন আর কিছুষ্ট হইতে পারে না । ইংরাজের নিকট হইতে স্বরাজ ছিনাইয়া লইতে না পারিলে আমাদের স্বরাজ লাভ অসম্ভব । কেহ কেহ হয়তো বলিবেন যে ইংলণ্ড ভারতে ঔপনিবেশিক শাসনতন্ত্র (Colonial form of Government) প্রতিষ্ঠিত করিতে পারেন, যেমন ক্যানাডা, আফ্রিকা বা অষ্ট্রেলিয়াতে আছে। প্রথম কথা, ইংরাজ দয়া করিয়া ঔপনিবেশিকদিগকে স্বায়ত্ত-শাসন দেয় নাই, মার্কিন wiłłąel-to-(American War of Independence) [ ৭ম ভাগ । তাহার প্রমাণ। ক্যানাডায় আছে, কেন না,না থাকিলে এক মুহূর্তে ক্যানাডা মার্কিন যুক্তরাজ্যের সঙ্গে মিলিত হয়। বুয়রেরা যে পাইল তাহা গুতোর বলে, ইংরাজের অমুকম্পায় নয়। সিপাহীবিদ্রোহের পরের বছর দাবী করিতে পারিলে আমরাও পাইতাম। এগন আমাদের দাবীর পেছনে সে গুতোর ভয় নাই, সুতরাং অরণ্যে রোদন মাত্র সার। অষ্ট্রেলিয়ায় বাস্তবিকই স্বরাজ প্রতিষ্ঠিত হয় নাই। ইংলণ্ডের সহায়তা ব্যতীত সে আজ জাপানের হস্ত হইতে আত্মরক্ষায় সম্পূর্ণ অসমর্থ। বিশেষতঃ অষ্ট্রেলিয়া প্রত্যক্ষভাবে ইংলণ্ডের সন্তান। আমাদের সঙ্গে ইংলণ্ডের সে সম্বন্ধ নাই, হইতেও পারে না । আসল কথা এই, ভারতে ঔপনিবেশিক শাসনপ্রণালী প্রবৰ্ত্তিত হওয়ার পক্ষে যে প্রতিবন্ধক তাহা এই সকল ক্ষুদ্র অৰ্ব্বাচীন উপনিবেশগুলিতে বর্তমান নাই । ইংলণ্ড যে আজ জগতে প্রবল শক্তিরূপে বর্তমান, তাহ কেবল সে ভারতের প্রভু বলিয়া, কেবল ভারতের অর্থ শোধণের দ্বার তাহার নিকট উন্মুক্ত বলিয়া । সে দ্বার বন্ধ হউক, সে প্রভুত্ব চলিয়া যাকৃ, ইংলও এই মুহূর্তেই জগতের কাছে অতি নগণ্য হইয়া পড়িবে। সুতরাং ভারতে ঔপনিবেশিক শাসন প্রণালী প্রবর্তন করিতে হষ্টলে তাহাকে আত্মহত্যার জন্ত প্রস্তুত হইতে হইবে কেবল দয়া প্রকাশ করিলে চলিবে না । Empire sof of Legislative Councilea ges TEংখ্যা বৃদ্ধি বা রাজকাৰ্য্যে দুষ্টজন বেশী ভারতবাসীর নিয়োগ না হইয়া প্রকৃত ঔপনিবেশিক স্বারক্তশাসন হয়, তবে ইংলও স্বীয় অস্তিত্ত্ব বজায় রাখিয়া ভারতকে তাহা দিতে পারে না । যে ভারতের অর্থ ও সম্বল (resources) শোষণ করিয়া ইংলও আজ এত বড় সেই ভারত যদি স্বীয় অর্থ সামর্থ্য ও সম্বল নিজের মুখস্বার্থে নিয়োগ করিতে সমর্থ হয়, যদি সে ভূতের বেগার হইতে নিস্কৃতি পায়,তবে জাপান জগৎকে যেরূপ চমৎকৃত করিয়াছে, ভারত তাহ অপেক্ষাও শতগুণ বেশী চমৎকৃত করিবে । তখন শক্তিসামর্থ্যে অসীম ধনবল ও জনবল সম্পন্ন ভারত ক্ষুদ্র ইংলণ্ড সমেত সাম্রাজ্যের আর সকল অংশকে একেবারে কোণঠেসা করিবে। এখন সাম্রাজ্যের মধ্যে ইংলণ্ডের • যে স্থান, তখন ভারত সেই স্থান লাভ করবে। তখন আর তারতসাম্রাজ্য বৃটিশ সাম্রাজ্য থাকিবে । Self Government within the
পাতা:প্রবাসী (সপ্তম ভাগ, প্রথমাংশ).djvu/৫
অবয়ব