পাতা:প্রহ্লাদ - প্রচার পত্রিকা (১৯৫২).pdf/২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

প্রহ্লাদ

 তপস্যায় সিদ্ধিলাভ করে ত্রিলোক বিজয়ী বীর হিরণ্যকশিপু রাজধানীতে এলেন ফিরে। সমগ্র নগরী মেতে উঠলো আনন্দ উল্লাসে। এমন সময় তাঁর সেনাপতি সম্বর এসে সংবাদ দিলেন, যে, রাজভ্রাতা হিরণ্যাক্ষ বিষ্ণুর হস্তে নিহত হ’য়েছেন। শোকে, ক্রোধে, তাঁর রাজ্যে হরিপূজা নিষেধ করে দিলেন হিরণ্যকশিপু। হরির আরাধনা যে করবে, তার হবে প্রাণদণ্ড! রাজ আজ্ঞা প্রচারিত হ’ল।

 প্রথমেই হরিভক্তির অ্যাভাষ পেয়ে, চরিত্রে সংশোধনের জন্য হিরণ্যকশিপু প্রহ্লাদকে পাঠিয়ে দিলেন গুরুদেব শুক্রাচার্য্যের কাছে। কিন্তু শুক্রাচার্য্য তখন স্থানান্তরে তপস্যায় মগ্ন ছিলেন তাই প্রহ্লাদের শিক্ষার ভার পড়লো তাঁর দুই পুত্র ষণ্ড আর অমার্কের ওপর। গুরুপুত্রদ্বয় প্রহ্লাদের হরি ভক্তির পরিচয় পেয়ে আতংকিত হলেন। কিছুদিন পরে বিদ্যা পরীক্ষার জন্য রাজদরবারে ডাক পড়লো প্রহ্লাদের। রাজা প্রশ্ন করলেন, সর্ব্ব শাস্ত্রের শেষ কথা কি? হরিভক্তি! প্রহ্লাদ উত্তর দি’ল।

 ক্রুদ্ধ দৈত্যরাজ মশানে নিয়ে গিয়ে প্রহ্লাদের শিরচ্ছেদ আদেশ দিলেন।

 ঘাতকের খড়্গ দ্বিখণ্ডিত হয়ে ভেঙ্গে গেল, অক্ষতদেহে প্রহ্লাদ ফিরে এলো মায়ের বুকে।—ভগবান হরিকে ভুলে যাওয়া তার পক্ষে অসম্ভব, সানুনয়ে প্রহ্লাদ জানিয়ে দিলে তার পিতাকে। এবার রুদ্ধ কারাকক্ষে বিষধর সর্পের মুখে প্রহ্লাদকে নিক্ষেপ করার আদেশ দিলেন হিরণ্যকশিপু। ভক্ত প্রহ্লাদের মুখে হরি গুণগান শুনে বিষধর সর্পও তার মাথা নত করে নি’ল।

 ক্ষিপ্তপ্রায় দৈত্যকুলপতি এরপর প্রহ্লাদকে মত্তহস্তী পদ তলে নিক্ষেপের আজ্ঞা দিলেন। কিন্তু রাখে হরি মারে কে—! মত্ত হস্তী প্রহ্লাদকে সাদর সম্ভ্রমে মাথায় তুলে নিলে। প্রহ্লাদের হরিঠাকুরই যে বার বার তাকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে আনছেন—একথা