পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/১১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
লর্ড কেল্‌ভিন্
৮৭

যে নূতন যন্ত্র পাওয়া গিয়াছে, তাহা অতুলনীয়। চলিষ্ণু জাহাজ হইতে সমুদ্রের গভীরতা পরিমাপের উপযোগী যন্ত্রও এই সময়ে অতি সুকৌশলে নির্ম্মিত হইয়াছিল। অদ্যাপি এই দুই যন্ত্র প্রত্যেক জাহাজেই ব্যবহৃত হইতেছে।

 সুপ্রসিদ্ধ রসায়নবিৎ ডাল্‌টন্‌ (Dalton) কর্ত্তৃক আণবিক-সিদ্ধান্ত প্রচারিত হইলে, পদার্থবিশেষে অণুগুলি কি প্রকারে সজ্জিত থাকে এবং অণুর পরস্পর ব্যবধানই বা কি, জানিবার জন্য বৈজ্ঞানিকগণ উৎসুক হইয়া পড়িয়াছিলেন, কিন্তু কোন বৈজ্ঞানিকই এই গুরুতর বিষয়ে হস্তক্ষেপ করিবার উপায় খুঁজিয়া পান নাই। লর্ড কেল্‌ভিন্‌ এ সম্বন্ধে গবেষণা আরম্ভ করিয়াছিলেন। প্রায় বাইশ বৎসর হইল এই গবেষণার ফল প্রচারিত হইয়াছে, কিন্তু আজও তাহার বিবরণী পাঠ করিলে কেল্‌ভিনের অত্যাশ্চর্য্য সূক্ষ্মদর্শন ও অসাধারণ গণিতজ্ঞান দেখিয়া অবাক না হইয়া থাকা যায় না। ঈথর-সাগরে অতি সূক্ষ্ম তরঙ্গ তুলিয়া আলোক যখন কাচ বা অপর কোনও স্বচ্ছপদার্থের ভিতর দিয়া বাহির হয়, তখন তাহার গতির দিকের পরিবর্ত্তন (Refraction) ঘটে। পদার্থস্থ অণুগুলিই বাধা দিয়া ঈথরতরঙ্গকে এই প্রকারে বাঁকাইয়া দেয় বলিয়া জানা ছিল। লর্ড কেল্‌ভিন্ আলোকবিশেষের তরঙ্গের দৈর্ঘ্য এবং তাহার গতির দিক্ পরিবর্ত্তনের মাত্রা অতি সূক্ষ্মভাবে পরিমাপ করিয়া, পদার্থের অণুর আয়তন নির্দ্ধারণের এক সুন্দর উপায় নির্দ্দেশ করিয়াছিলেন। তা’ ছাড়া কৈশিকাকর্ষণের (Capillary Attraction) সাহায্য লইয়াও তিনি অণুর আয়তন নির্দ্ধারণের আর একটি নূতন উপায় আবিষ্কার করিয়াছিলেন। এক ইঞ্চিকে আড়াই লক্ষ সমানভাগে বিভক্ত করিলে যে এক অতি সূক্ষ্ম দৈর্ঘ্য পাওয়া যায়, এই হিসাবে পদার্থের অণুগুলির ব্যাস তাহা অপেক্ষাও ক্ষুদ্রতর বলিয়া প্রতিপন্ন হইয়াছিল। লর্ড কেল্‌ভিনের এই সূক্ষ্ম গণনা লইয়া অনেকে পরবর্ত্তী কালে অনেক নাড়া