পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/১৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জীবনটা কি ?
১১৩

বায়ু হইতে অক্সিজেন সংগ্রহ করাই যাহার কাজ। তাপপ্রয়োগে তাহা নষ্ট হয়, এসিড্ বা বিষের সহিত সংযুক্ত হইলে তাহার ক্রিয়া লোপ পায়। ইহার প্রত্যেক কার্য্য পাষ্টুরের আবিষ্কৃত সেই খামীর (Yeast cells) কার্য্যের সহিত অবিকল মিলিয়া গেল। বার্‌ট্রাণ্ড সাহেব এই জিনিষটাকে (Oxydase) নামে অভিহিত করিলেন।

 এই আবিষ্কারের পূর্ব্বে জীবতত্ত্ববিদ্‌গণ ও শারীরবিদ্‌গণ নিশ্চিন্ত ছিলেন না। পাষ্টুরের আবির্ভাবের বহু পূর্ব্বে বীজের অঙ্কুরিত হওয়ার বিষয় অনুসন্ধান করিতে গিয়া বৈজ্ঞানিকগণ দেখিয়াছিলেন, সদ্য অঙ্কুরিত বীজে এমন একটা জিনিষ আছে যাহা বীজের শ্বেতসারকে (Starch) বিশ্লিষ্ট করিয়া অপর কতকগুলি নূতন পদার্থে রূপান্তরিত করে। প্রাণীর মুখের লালাতেও যে, ঐ প্রকার একটা পদার্থ মিশ্রিত আছে তাহাও সকলে জানিয়াছিলেন। তার পর প্রাণীর পাকাশয়ে পেপ্‌সিন (Pepsin) নামক একটা পদার্থ আবিষ্কৃত হইয়া পড়িয়াছিল। এই জিনিষটার গুণেই যে প্রাণীরা মাংস বা ডিম্ব প্রভৃতি খাদ্য আহার করিয়া হজম করিতে পারে, তাহাও সকলে দেখিয়াছিলেন। যকৃৎ হইতে প্রাণীর দেহে, যে পিত্ত-রস (Bile) নির্গত হয়, তাহা কি প্রকারে তৈলময় খাদ্যকে শরীরের কাজে লাগায় তাহারও আভাস পাওয়া গিয়াছিল। এতদ্ব্যতীত পাকাশয়ের অপর রসগুলির কার্য্যের লক্ষণও বৈজ্ঞানিকদিগের জানা ছিল। পাষ্টুরের আবিষ্কার ও বার্‌ট্রাণ্ডের পরীক্ষার ফল প্রচারিত হইলে, কাজেই এই সকল তথ্যের দিকে সকলের দৃষ্টি আকৃষ্ট হইতে লাগিল। জীবদেহের নানারসের কার্য্যের সহিত পাষ্টুরের আবিষ্কৃত ‘খামী’র কার্য্যের একতা দেখিয়া সকলে অবাক্ হইয়া গেলেন। কিন্তু তথাপি ‘খামী’র সজীব জীবাণু ও প্রাণিদেহের নানা রসের মধ্যে পার্থক্য রাখিবার জন্য, দেহ-রসগুলিকে নানা লোকে